ঋতু পরিক্রমায় এখন শরৎকাল। তার উপস্থিতির জানিয়ে দিচ্ছে নীল আকাশে সাদা মেঘের আনাগোনা। এ দিকে কাশফুল তার অপরূপ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে, আর এই সৌন্দের্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই কাশবনে সৌন্দর্য পিপাসুরা ভিড় জমাচ্ছেন। শরতের এই কাশফুল শুধু যে সৌন্দর্যের দ্যুতি ছড়ায় তা নয়, এ অঞ্চলে অনেক মানুষের জীবিকার খোরাকও বটে। কাশফুলের খড়, ছন আর ঝাটিতে আর্থিকভাবে অনেকের সচ্ছলতাও আসে।
তাড়াশে আবহাওয়া অফিসের ভেতর, ঘরগ্রাম, মাগুড়া বিনোদ, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, বারুহাঁস সড়ক, মাধাইনগর রাস্তা সংলগ্ন বেশ কিছু জায়গায় প্রাকৃতিকভাবে জন্ম নিয়ে বেড়ে ওঠা কাশবনে জীবিকার সন্ধান করেন প্রায় দুই শতাধিক পরিবার। কাশবন থেকে পাওয়া খড়, ছন ও ঝাটি পানের বরজের জন্য খুবই দরকারি। আবার এগুলো শুকিয়ে জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কাশবনের ছন, খড় ও ঝাটি সংগ্রহ করেন এই মানুষগুলো। কাশফুলের মৌসুম শেষ হলেও এর চাহিদা থাকে সারা বছরই।
কাশবন থেকে খড় ও ঝাটি তুলতে আসা দিপা রানী বলেন, কাশবনের ছন দিয়ে পানের বরজে ছাউনি দেয়া হয় আর পান গাছের শলার সঙ্গে উপরে বেঁধে রাখা যায়। সুতা বা দড়ি দিয়ে বাঁধলে তার স্থায়িত্ব কম হয়, কিন্তু ছন দিয়ে বাঁধলে অনেক দিন থাকে। এ কারণে বরজে খড় বা ছন ব্যবহার করা হয়। অনেকেই আবার বেশি পরিমাণ কাশবন কেটে পাইকারের কাছে খড়, ছন ও ঝাটি বিক্রি করে। এক আঁটি পাঁচ টাকা দশ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর ভ্যান ভর্তি শুকনো ছন বিক্রি হয় ৩ থেকে ৪শ টাকায়। শরৎকাল শেষ হয় সেই সাথে কাশবনের সাদা ফুলও ঝড়ে পরে। ঠিক তখনই শুরু হয় এ মৌসুমী কাজ। এক দিকে উৎপাদন খরচ নাই আবার ঝামেলাও কম তাই বেশ জনপ্রিয় এ কাজটি।
এছাড়াও এই কাশবন থেকে ও আশপাশের কয়েকটি অঞ্চল থেকে পাওয়া ছন, ঝাটি থেকে গৃহস্থালির প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী, শো-পিসসহ দৃষ্টি নন্দন অনেক দ্রব্যাদি তেরি করা হয়।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ