বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আপেল-স্ট্রবেরির দরকার নেই, বাঙালিরা পেয়ারা খেলেও একই উপকার পাবেন

আপেল-স্ট্রবেরির দরকার নেই, বাঙালিরা পেয়ারা খেলেও একই উপকার পাবেন

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শাকসব্জি বা ডিম, ফলমূল ইত্যাদি থেকেই যে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাওয়া সম্ভব – আর এর জন্য বাইরে থেকে খাবার আমদানির কোনও প্রয়োজন নেই – এই বার্তা দিতে ভারত জুড়ে শুরু হয়েছে এক বিশাল ক্যাম্পেন।

জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফও এই অভিযানে সক্রিয় সমর্থন জানাচ্ছে – যার মূল কথাটা হল স্থানীয় খাবার বা ‘লোকাল ফুড সিস্টেম’-ই আমার আপনার প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ঠ। ভারতে ইউনিসেফের প্রধান ইয়াসমিন আলি হক একজন বাংলাদেশী নাগরিক, তিনি বলছেন এই কথাটা ভারতের জন্য যেমন – তেমনি বাংলাদেশের জন্যও সত্যি।

ড: হক বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, “লোকাল ফুড সিস্টেম বলতে আমরা বোঝাচ্ছি আমার বাড়ির আঙিনায় যেটা পাওয়া যাচ্ছে, কিংবা আমার বাড়ির পাশের বাজারে যেগুলো সব সময় পাওয়া যাচ্ছে সেগুলোকে।”

“এখানে আসলে গর্ভবতী মা-ই বলুন বা বাচ্চারা, তাদের কী খাবার দেওয়া হবে সেখানে লোকাল ফুড সিস্টেমের একটা বড় ভূমিকা থাকা উচিত।

“একটা বাচ্চাকে স্ন্যাকস দেওয়ার সময় আমরা তাকে একটা গাজর, কমলালেবু বা পেয়ারা দিতে পারি। কিন্তু সেগুলো না-দিয়ে আমরা তাকে কমার্শিয়ালি অ্যাভেলেবল একটা বিস্কুটের প্যাকেট ধরিয়ে দিচ্ছি কি না, প্রশ্ন সেটাই।”

“লোকাল ফুড সিস্টেম বলছে আমাদের স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত খাবারদাবারেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত, এই ধরনের পুষ্টিকর খাবারের জন্যই সবচেয়ে বেশি সওয়াল করা উচিত”, বলছিলেন ড: হক।

তবে ভারতের মতো বিশাল দেশে প্রতিটি রাজ্যে, এমন কী দেশের প্রতিটি জেলাতেও যে স্থানীয় খাবারের ধরনটা পাল্টে যেতে পারে সে কথাও ইউনিসেফ মনে করিয়ে দিচ্ছে।

বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে গ্রামের একটি বাজার

“আসলে এক এক জেলাতে এক এক রকম পরিবেশ, এক এক রকম আবহাওয়া। কোথাও মিলেট (জোয়ার, বাজরা, যব) হচ্ছে, কোথাও আবার ভাতটাই প্রধান খাদ্য।”

“আবার এমন কোনও জেলা নেই যেখানে কিছু না-কিছু স্থানীয় ফল বা শাক উৎপাদিত হচ্ছে না।”

“ডিম তো আবার প্রায় সব জায়গাতেই হচ্ছে, কিন্তু আমরা এখন দেখছি বাচ্চারা ডিম না-খেয়ে বাইরে থেকে আনা অন্য খাবারের দিকে ঝুঁকছে।”

“আমাদের কথাটা খুব সহজ, নিজের বাড়ির আঙিনায় একটু কুমড়ো, লালশাক বা পুঁইশাকও তো আমরা লাগাতে পারি। তা না-করে আমরা কি বাজারে যেটা বেশি চোখে পড়ে সেগুলোই শুধু খাচ্ছি?” বলছিলেন ইউনিসেফ ইন্ডিয়ার প্রধান।

কিন্তু তার মানে কি পশ্চিমবঙ্গের একটি শিশুর হিমাচল প্রদেশ থেকে আনা আপেল খাওয়ার কোনও দরকারই নেই?

ইয়াসমিন আলি হকের জবাব, “সেই প্রয়োজনটা কিন্তু পেয়ারা দিয়েও মেটানো যেতে পারে। কিংবা বাংলায় তো বরই -ও (কুল) প্রচুর পরিমাণে হয়, তারা বরই খেতে পারে। আপেলই খেতে হবে, এমন তো কোনও কথা নেই।”

“বিষয়টা হল, যেখানে যা পুষ্টিকর খাবার স্থানীয়ভাবে পাওয়া যায়, সেটা যদি আমরা ভারসাম্য রেখে খাই – সঠিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ভিটামিনস বা শাকসব্জি খেতে পারি – তাহলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়”, বলছিলেন তিনি।

ইয়াসমিন হকের জন্ম ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশে, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের প্রাক্তন ছাত্রী তিনি। কর্মসূত্রে দুনিয়ার নানা দেশে থাকলেও তিনি আজও একজন বাংলাদেশী নাগরিক।

তার সেই বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কি ভারতের এই ক্যাম্পেনে কোথাও কাজে লাগতে পারে?

“অবশ্যই। বাংলাদেশে ছোটবেলায় আম্মা সব সময় বলতেন গাজর খেতে, তাতে চোখের দৃষ্টি নাকি ভাল হবে। আমরাও যখন মা হয়েছি, বাচ্চাদের গাজর খেতে উৎসাহ দিতে বাড়িতেই ছোট করে গাজর লাগিয়েছি।”

“বাংলাদেশে আর একটা জিনিস ছিল, আপনি কি শাকসব্জি ধুয়ে নিয়ে কাটেন না কি কাটার পর ধোন? কাটার পর ধুলে কিন্তু তার ভিটামিন বা মিনারেলস আমরা হারিয়ে ফেলি – আর বাংলাদেশে সেই অভ্যাসটা পাল্টানোর জন্য জাতীয় স্তরে রীতিমতো একটা ক্যাম্পেন দরকার হয়েছিল।”

“আবার সব্জি রান্না করার সময় অনেকে পানিটা ফেলে দেয়, কিন্তু ওই পানির সঙ্গে অনেক পুষ্টিগুণও চলে যায়। এই অভ্যাসটা পাল্টানোর জন্যও সেখানে অনেক প্রচার চালানো হয়েছে,” বলছিলেন ড: হক।

আসলে সাধারণ মানুষ তাদের খাদ্যাভ্যাসে ছোট ছোট কিছু পরিবর্তন আনলেই যে নিজেদের ডায়েটে অনেক বেশি পুষ্টি নিশ্চিত করতে পারবে, এই অভিযানের মাধ্যমে ইউনিসেফ সেই বার্তাটাই দিতে চাইছে।

আর ঠিক সেই প্রসঙ্গেই একটি দৃষ্টান্ত দিয়ে বলা হচ্ছে, বাঙালিদের জন্য পেয়ারা-বরই যথেষ্ঠ – আপেল-স্ট্রবেরি না খেলেও তাদের দিব্বি চলে যাবে!

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর