• শনিবার ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৫ ১৪৩০

  • || ১৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

৭৫ টাকা খরচে শুরু সবুজ মিয়ার ছাদবাগানে এখন ১৫ জাতের সবজি

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩  

শেরপুরের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস সহায়ক সবুজ মিয়া (৫০)। তিনি এ বছর তার ৩০/২২ ফুট ছাদে পেঁয়াজ, রসুন, টমেটো চাষ করে এখন স্বপ্ন দেখছেন সবজি বাজারজাতকরণের। মাত্র ৭৫ টাকা খরচে শুরু করা সবুজ মিয়ার ছাদবাগানে এখন রয়েছে ১৫ জাতের সবজি।  তার এই ছাদবাগান দেখতে ভিড় জমায় স্থানীয়রা। অনেকেই তার কাছ থেকে ছাদবাগানের পরামর্শ নিতে আসেন।

সবুজ মিয়া (৫০) নকলার ৪নং গৌড়দ্বার ইউনিয়নের গৌড়দ্বার বাজারের বাসিন্দা। তিনি এর আগে শ্রীবরদী উপজেলায় স্বাস্থ্যও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের অফিস সহায়ক হিসেবে ছিলেন। কিন্তু কিছুদিন হল বদলি হয়ে অফিস সহায়ক হিসেবে টালকি ইউনিয়নে এসেছেন। বর্তমানে চাকরির পাশাপাশি তিনি ব্যস্ত সময় পার করছেন তার ছাদবাগানে। যেখানে ১৫ প্রজাতির গাছ লাগানো হয়েছে। তার ৩০/২২ ফুটের ছাদে এখন শোভা পাচ্ছে পেঁয়াজ, রসুন, মাল্টা, কমলা, পেয়ারা, বারোমাসি আম, বেগুন, টমেটো, পেপে, আমড়া, মরিচ, অ্যালোভেরা, করলাসহ ১৫ জাতের বিভিন্ন ফল ও সবজির গাছ।

দেখা যায়, প্রত্যেকটি গাছে মুকুল ধরতে শুরু করেছে। ঝুলে আছে বিভিন্ন রকমের ফলসহ নানা রকমের সবজি। যে কারোর দেখে মনে হবে, এ যেন ছাদ নয়, এক টুকরো উদ্যান।

সবুজ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রথমে সূর্যমূখী ফুল লাগাই। ফুল খুব ভালো হয়েছিল। তাই ছাদবাগান করতে আগ্রহী হই। তারপর হাইব্রিড মুলা লাগাই। আমি ২ বছর ধরে ছাদবাগান করছি। আমার বাগানে সারাবছর শাকসবজি ও ফলমূল থাকে। আমি সারাদিন অফিস করি সকালে ও বিকেলে বাগানে আসি। আমার বাগান থেকে গতবারের উৎপাদিত পেঁয়াজ দিয়ে ৬ মাস চলেছি। তাই এইবার পেঁয়াজ বেশি লাগিয়েছি। ধারণা করছি ৮৫ থেকে ৯০ কেজির মতো পেঁয়াজ ও ১০ কেজির মতো রসুন পাব। এই পেঁয়াজ ও রসুন আমার সংসারে সারাবছর চলবে। সামনের বছর আরও বড় আকারের বাগান করে বাজারজাত করব।

dhakapost

কত টাকা খরচ হয়েছে এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বাজার থেকে ৭৫ টাকা দিয়ে পেঁয়াজ ও রসুনের বীজ কিনে এনেছিলাম। তারপর বীজ থেকে পদ্ধতি মেনে চারা তৈরি করে ছাদে লাগিয়েছি। আমি নিজে গোবর, খৈল, চাপাতি দিয়ে জৈব সার তৈরি করি। এতে আমার কোনো খরচ লাগে না। আমার ছাদবাগান শুরু করতে খরচ হয়েছিল মাত্র ৭৫ টাকা।  

ছাদবাগানে আগ্রহীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যাদের নিজের ছাদ পড়ে আছে, তারা ছাদবাগান করতে পারে। এই বাগানে অল্প খরচে ফলন ভালো পাওয়া যায়। আপনারা অবসর সময়টুকু ছাদবাগানে খরচ করুন, এতে সময় কাজে লাগবে।

স্থানীয় প্রতিবেশী রহিম মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, সবুজ যখন থেকে ছাদ বাগান শুরু করেছে তখন থেকে আমি তাকে সাহায্য করি। তার এই বাগানে অনেক মাটি লাগে। এই মাটি নিচ থেকে তুলতে অনেক কষ্ট হয়। আমি নিজেও মাটি তুলে দিছি। তার বাগান এখন সফলতার মুখ দেখেছে। আপনারাও এই ছাদ বাগান করতে পারেন। 

ছাদকৃষি দেখতে আসা যুবক শিমুল মিয়া ঢাকা পোস্টকে জানান, আমি এই বাজারে এসেছিলাম। কিন্তু বন্ধুর কাছে শুনতে পারলাম এখানে সবুজ মিয়া ছাদবাগান করেছে। তাই দেখতে আসলাম, বাগানটি দেখে খুব ভালো লাগল। একদম তরতাজা ফল, সবজি ও বিভিন্ন গাছ দেখে আমি অবাক।

নকলা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুল ওয়াদুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমান সময়ে মাঠকৃষির পাশাপাশি ছাদকৃষিরও জনপ্রিয়তা বাড়ছে। আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি তার ছাদ বাগানে যাব। তার যদি কোনো সাহায্যের দরকার হয় তাকে সর্বোচ্চ সাহায্য করব।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ
আলোকিত সিরাজগঞ্জ