শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৯০র স্বৈরাচার আন্দোলনের শহীদ জেহাদ এর আজ ৩০ তম শাহাদৎবার্ষিকী আজ

৯০র স্বৈরাচার আন্দোলনের শহীদ জেহাদ এর আজ ৩০ তম শাহাদৎবার্ষিকী আজ

নব্বইয়ের স্বৈরাচার-বিরোধী আন্দোলনে শাহাদৎবরণকারী শহীদ জেহাদের আজ ত্রিশতম শাহাদৎবার্ষিকী । ১৯৯০ সালের ১০ অক্টোবর স্বৈরাচার এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে সচিবালয় অবরোধ কর্মসূচি পালন করতে গিয়ে পুলিশের গুলিতে শাহাদৎবরণ করেন উল্লাপাড়ার কৃতীসন্তান ছাত্রনেতা খন্দকার নাজির উদ্দিন জেহাদ।

পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ওই দিন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ৮ দল, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ৭ দল এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)-এর নেতৃত্বাধীন ৫ দলসহ অন্যান্য দলের আহ্বানে ঢাকায় সচিবালয় অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

এই অবরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য খন্দকার নাজির উদ্দিন জেহাদ উল্লাপাড়া থেকে ৬০ জন ছাত্র নিয়ে ঢাকায় আসেন এবং অবস্থা্ন কর্মসূচিতে যোগ দেন। সচিবালয়ের চারপাশে পুলিশ অবস্থান নেয়। পুলিশ অবরোধকারীদের ওপর গুলি চালালে ‘দৈনিক বাংলা’র মোড়ে বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে জেহাদ শাহাদৎবরণ করেন।

বিক্ষুব্ধ জনতার সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশ লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার ও গুলিবর্ষণ করে। সংঘর্ষে অন্তত ৩০০ লোক আহত হয়। ৪৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গুলিতে নিহত ছাত্রনেতা জেহাদের লাশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসার পর গোটা ক্যাস্পাস প্রতিবাদে ফেটে পড়ে। দলীয় মতাদর্শ ভুলে সঙ্গে সঙ্গে ডাকসুসহ ২২টি ছাত্র সংগঠন একত্রিত হয়ে ‘সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য’ গঠন করে। ছাত্রঐক্য শহীদ জেহাদের লাশ নিয়ে মিছিল করে।

ওই মিছিলের নেতৃত্ব দেন তৎকালীন ডাকসুর সহ সভাপতি আমানউল্লাহ আমান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব (বর্তমানে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ), ছাত্র ইউনিয়ন নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ছাত্রলীগ (না-শা) নেতা নাজমুল হক প্রধান, ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

জেহাদের লাশ দেখতে যান শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া। তাতে ছাত্ররা আরো উৎসাহিত হন। বিকেলে অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে ছাত্রঐক্য এক সমাবেশে তাঁদের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সন্ধ্যায় ছাত্রঐক্যের এক বিরাট মিছিল বের হয়।

শিশুপার্কের কাছে পুলিশের হামলায় আহত হন ডাকসু ভিপি আমান উল্লাহ আমান, ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি জহির উদ্দিন স্বপন (পরবর্তীতে বিএনপিতে যোগ দেন)সহ অনেকে। স্বপনকে গ্রেফতার করে পুলিশ শারীরিক নির্যাতন চালায়। রাতেই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

১০ অক্টোবরের ঘটনার প্রতিবাদে পরদিন অর্থাৎ ১১ অক্টোবর ছাত্রঐক্যের ডাকে অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়। হরতাল চলাকালে ঢাকা ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশের সঙ্গে ছাত্রদের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। ১৫ জন ছাত্রনেতাসহ শতাধিক ছাত্র আহত হয়। পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্র জেহাদের লাশ উল্লাপাড়ায় তাঁর গ্রামের বাড়ি নবগ্রামে দাফন করা হয়। ঢাকার বাইরে চট্টগ্রাম ও খুলনা শহরে হরতালের সময় জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়। অন্যান্য জেলাতেও জনতা-পুলিশ সংঘর্ষ হয়।

মূলত জেহাদের রক্তের বিনিময়ে যে ছাত্রঐক্য গঠিত হয়েছিল তাদের ধারাবাহিক আন্দোলনের ফলে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০ তারিখে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়।শহীদ জেহাদ ১৯৬৯ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া উপজেলার নবগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা কেএম মাহমুদ ও মা বছিরুন্নেসার দশ সন্তানের নবম সন্তান শহীদ জেহাদ।

শহীদ জেহাদ উল্লাপাড়া মার্চেন্ট পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সালে এসএসসি এবং উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ থেকে ১৯৮৮ সালে এইচএসসি পাস করেন।আকবর আলী কলেজে বিএ ক্লাসে অধ্যয়নকালে তিনি স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে শাহাদৎবরণ করেন।

জেহাদ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, উল্লাপাড়া সরকারি আকবর আলী কলেজ শাখার সভাপতি এবং উল্লাপাড়া উপজেলার সহ সভাপতি ছিলেন। আমরা শহীদ জেহাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আমিন।

জেহাদ দিবস উপলক্ষে উল্লাপাড়া বিএনপি ও তার ছাত্র দল কবরে পুষ্পতবক অর্পণ , মসজিদে দোয়া মাহফিল এর আয়োজন করেছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই