বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারের তৃতীয় মেয়াদে: সাফল্য মেগা প্রকল্পে অগ্রগতি

সরকারের তৃতীয় মেয়াদে: সাফল্য মেগা প্রকল্পে অগ্রগতি

তৃতীয় মেয়াদের সরকার গঠনের এক বছর পূর্ণ করলো আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন খাতে গত বছর অর্জনের খাতায় সাফল্য যোগ হয়েছে ব্যাপক। এর মধ্যে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেলসহ মেগা প্রকল্পগুলোর কাজে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। নানামুখী উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দুর্নীতি, মাদক ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান সরকারের ভাবমূর্তিকে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়।

এছাড়া সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি আনতে ব্যাংক ঋণের সুদহার সিঙ্গেল ডিজিটে নামিয়ে আনার উদ্যোগও ছিল  প্রশংসনীয়। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে জয়ের মধ্য দিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। গত বছরের ৭ জানুয়ারি শপথ নেন নতুন এমপি-মন্ত্রীরা। এরপর জনগণের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গৃহীত প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করে সরকার।

মেগা প্রকল্প পদ্মাসেতু: জনগণের বহুল প্রত্যাশিত উন্নয়ন প্রকল্পের নাম পদ্মাসেতু। সম্প্রতি এই স্বপ্নের সেতুতে ২০তম স্প্যান বসানো হয়েছে। ফলে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুর অর্ধেক। আর সবমিলিয়ে এই প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
মেট্রোরেল: রাজধানীর যানজট নিরসনে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সম্প্রতি এ প্রকল্পে রেললাইন স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উন্মুক্ত করা হবে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: রূপপুর প্রকল্পের কাজ নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এগিয়ে চলছে। প্রথম ইউনিটটি ২০২৩ এবং দ্বিতীয়টি ২০২৪ সালে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক লাখ এক হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে রাশিয়ার সহযোগিতায় বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে পাবনার রূপপুরে। এখানে দুটি ইউনিটে ১২০০ মেগাওয়াট করে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে: সরকারের আলোচিত উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর মধ্যে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৪১ দশমিক ২১ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এক হাজার ৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতার কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট ২০২০ সালের ডিসেম্বরে উৎপাদনে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সমান্তরাল গতিতে চলছে ইউনিট-২ এর নির্মাণ কাজ। যে ইউনিটটি ২০২১ এর জুনে উৎপাদনে আসার সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।

শাহজালালে তৃতীয় টার্মিনাল: এদিকে গত ডিসেম্বরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণকাজের উদ্বোধন করা হয়। এ টার্মিনাল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। বিমানবন্দরে বর্তমানে দু’টি টার্মিনালে (টার্মিনাল-১ ও টার্মিনাল-২) যেখানে ১০ লাখ বর্গফুটের মতো ‘স্পেস’ রয়েছে, সেখানে নির্মাণাধীন তৃতীয় টার্মিনালের স্পেস হবে ২২ দশমিক ৫ লাখ বর্গফুট। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে শাহজালাল বিমানবন্দরের বর্তমান যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ থেকে বেড়ে ২ কোটি হবে। এবং কার্গোর ধারণক্ষমতা বর্তমান ২ লাখ টন থেকে বেড়ে ৫ লাখ টন হবে।

দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান: তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচিত ইশতেহারে দুর্নীতিবিরোধী কঠোর অবস্থানের বার্তা দেয়া হয়েছিল। ঘোষণা দেয়া হয়েছিল নির্বাচিত হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা হবে। গত বছরের শেষদিকে ব্যাপক আলোচিত ছিল সরকারের দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান। এই অভিযানে দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের গ্রেফতার করা হয়।

এছাড়া যুবলীগের চেয়ারম্যানকে দল থেকে বহিষ্কার করাসহ শীর্ষ নেতৃত্বে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়। পাশাপাশি অভিযানে ৬ শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। হিসাব তলব করা হয়েছে আরো কয়েকশ’ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের।

সড়ক পরিবহন আইন: দুই বছর আগে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে দেশের মানুষের প্রত্যাশা ছিল একটি যুগোপযোগী সড়ক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। এরপর পরিবহন শ্রমিকদের আন্দোলনসহ নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে আইনটি সংসদে পাস হলেও বাস্তবায়ন বিলম্বিত হচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত সব বাধা অতিক্রম করে ২০১৯ সালে আইনটি বাস্তবায়ন শুরু করে সরকার।

সুদহার সিঙ্গেল ডিজিট করার নির্দেশনা: দেশের শিল্প খাতে সহজে পুঁজির জোগান নিশ্চিত করতে ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ব্যাংক ঋণের সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে (এক অঙ্কে) নামিয়ে আনা। গত বছর এ ব্যাপারে ব্যাংক মালিকরা সরকারকে প্রতিশ্রুতিও দিয়েও কথা রাখেননি। তবে শেষ পর্যন্ত সুদের হার সিঙ্গেল ডিজিটে আনার নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা: গত এক বছরে সরকারের কর্মকাণ্ডের মধ্যে অন্যতম ছিল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এ সময় বিরোধী দলগুলো সরকার বিরোধী কোনো আন্দোলনই করতে পারেনি। ফলে রাজপথে কোনো জ্বালাও-পোড়াও কর্মকাণ্ড না ঘটায় জনগণ ছিল শান্তিতে।

এছাড়া পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দরের ৫৬ দশমিক ৬৪ শতাংশ, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ প্রকল্পের ২৬ দশমিক ৭২ শতাংশ এবং দোহাজারী-ঘুমধুম পর্যন্ত রেল সংযোগ প্রকল্পের অগ্রগতি হয়েছে ২৯ শতাংশ।
শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রকল্পগুলোর অনুকূলে খরচ হয়েছে প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩৭ হাজার ২০৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ থেকে ৪২ হাজার ৩৮০ কোটি ১৯ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের চেহারা পাল্টে যাবে। গত বছর এসব উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি দুর্নীতি, মাদকবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে সফল হয়েছে সরকার।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই