শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শীতের আগমনে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত চলনবিল এলাকার গাছিরা

শীতের আগমনে খেজুর গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত চলনবিল এলাকার গাছিরা

ছবি: খেজুরের রস সংগ্রহ করছে এক গাছি

প্রকৃতিতে শীতের আগমন বার্তা জানান দিচ্ছে। বাঙালির শীতের দিনের অন্যতম আকর্ষণ খেজুর গুড়ের তৈরি পিঠা-পায়েস। প্রাচীন কাল থেকে সিরাজগঞ্জ তথা চলনবিল এলাকার খেজুর রসের যশ ছিল। 'দিন বদলের সাথে এ এলাকা অনেক পরিবর্তন হয়েছে। শুধু পরিবর্তন হয়নি খেজুরের রস সংগ্রহ এবং গুড়-পাটালি তৈরির পদ্ধতি।

 

শীত আসছে তাই রস সংগ্রহের জন্য খেজুর গাছ পরিষ্কার ও পরিচর্যার করার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চলনবিলাঞ্চলের গাছিরা। চলনবিল এলাকার সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে এ বছর রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া ও নাটোর থেকে প্রায় শতাধিক গাছি এসেছেন খেজুর রস সংগ্রহের জন্য।

 

এ বছরও তার ব্যতিক্রম হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। চলনবিল এলাকায় শীত একটু আগেভাগেই কড়া নাড়ছে। তাই গাছিরাও খেজুর গাছের ডাল-পালা পরিস্কার করে গাছ তোলা সহ যাবতীয় কাজ পুরোদমে চালিয়ে যাচ্ছেন। আর ১০/১৫ দি পরেই রস গুড়, পাটালি পাওয়া যাবে এ অঞ্চলে।

 

স্থানীয়রা জানান, শীতের আগমনী বার্তা দরজায় কড়া নাড়ছে তাই প্রতিবছরের মত এবছরও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গাছিরা চলনবিল এলাকায় এসে গাছ মালিকদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তারা প্রথমে খেজুর গাছের মাথা পরিষ্কার করেন। এরপর শুরু হয় রস সংগ্রহ। চিরাচরিত সনাতন পদ্ধতিতে মাটির কলসে রাতভর রস সংগ্রহ করা হয়। ভোরের সূর্য ওঠার আগে গাছিরা রস ভর্তি মাটির কলস গাছ থেকে নামিয়ে পরে মাটির হাড়িতে কিংবা টিনের বড় হাড়িতে জ্বালিয়ে গুড়-পাটালি তৈরি করে।

 

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলাসহ বিভিন্ন গ্রামগুলোতে ইতিমধ্যে গাছিরা খেজুর গাছ তোলা চাচার কাজ শুরু করেছে। অল্প দিনের মধ্যে বাজারে নতুন খেজুর গুড়-পাটালি পাওয়া যাবে। গ্রাম-বাংলায় এখন চোখে পড়ছে খেজুর গাছ তোলা-চাচার দৃশ্য। গাছিরা এখন মহা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কিছুদিন পরই গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক মধুবৃক্ষ থেকে সুমধুর রস বের করে গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড়-পাটালি তৈরির উৎসব। গ্রামে গ্রামে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা, পায়েস, মুড়ি-মুড়কী ও নানা রকমের মুখরোচক খাবার তৈরি করার ধুম পড়বে। সকালে এবং সন্ধ্যায় কাঁচা রস খেতে খুবই মজাদার। রসে ভেজা কাচি পোড়া পিঠার (চিতই পিঠা) স্বাদই আলাদা। নলেন, ঝোলা ও দানা গুড়ের সুমিষ্ট গন্ধেই যেন অর্ধ ভোজন। রসনা তৃপ্তিতে এর জুড়ি নেই। নলেন গুড় পাটালির মধ্যে নারিকেল কোরা, তিল ভাজা মিশালে আরো সুস্বাদু লাগে। শীত মৌসুমে যা তৈরি হয় তা রীতিমত কাড়াকাড়ি শুরু হয়ে যায়। আবহমান কাল থেকে তাই বাংলায় নবান্নের উৎসব পালনে খেজুর গুড়ের কদর বেশি। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে গাছিরা গাছ পরিষ্কার বা তোলা চাচার উপকরণ গাছি দা, দড়ি তৈরি সহ ভাঁড় (মাটির ঠিলে) ক্রয় ও রস জ্বালানো জায়গা ঠিক করা সহ বিভিন্ন কাজে রয়েছে ব্যতিব্যস্ত।

 

তাড়াশ উপজেলার আড়ংগাইল গ্রামে ৭জনের একটি গাছির দল গাছী এসেছেন রাজশাহীর বাঘা, চারঘাট এলাকা। মোতালেব হোসেন জানান- গাছ কাটা, রস জ্বালানো ও গুড়, পাটালি তৈরির উপকরণের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবার গত বছরের তুলনায় গুড়-পাটালির দাম দ্বিগুণ হবে। এবছর তারা এলাকায় ১৬০ টি গাছ মালিকদের সাড়ে তিনকেজি করে গুড় দেয়ার মাধ্যমে চুক্তিবদ্ধ করেছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, তাড়াশ উপজেলাসহ চলনবিল এলাকা খেজুর রস খুব মিষ্টি মধুর, তাছাড়া রস থেকে খেজুরের পাটালী গুড় তৈরি করা হয়। যা দিয়ে চলনবিলাঞ্চলের জনপদের মানুষ বিভিন্ন পিঠাপুলি তৈরি করে থাকেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

শাহজাদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময় সভা
সিরাজগঞ্জে পুরোদমে চলছে কৃষিবান্ধব সোলার প্রকল্পের কাজ
সিরাজগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
বেলকুচিতে বিএসটিআই অনুমোদন না থাকায় টেক্সটাইল মিলকে জরিমানা
বেলকুচিতে পুষ্টি বিষয়ক সমন্বয় কমিটির দ্বি-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
গবেষণায় আরো জোর দিতে বললেন কৃষিমন্ত্রী
রংপুর ও ভোলার চরের মানুষদের সুখবর দিলেন পরিবেশমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক