বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

রাবিতে এক টুকরো ‘প্যারিস’

রাবিতে এক টুকরো ‘প্যারিস’

 
চিরসবুজ বাংলাদেশে এমন কিছু রাস্তা আছে যে রাস্তায় হাটতে বের হলে আনমনে গেয়ে উঠতে ইচ্ছে করে ‘এই পথ যদি না শেষ হয়।’ তেমনই একটি সুন্দর রাস্তা রয়েছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি)।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তার সঙ্গে অনেকটাই মিল থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে এটি ‘প্যারিস রোড’ হিসেবেই পরিচিত। শুধু রাবির শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছেই নয় চির সবুজ সৌন্দর্যের কারণে রাস্তাটি সারা দেশের মানুষের কাছেই দর্শনীয়।

পিচঢালা পরিষ্কার এই রাস্তাটির দুই পাশ ধরে বেড়ে উঠেছে সুউচ্চ গগনশিরীষ গাছ। এক পাশের গাছগুলো যেনো আরেক পাশের গাছগুলোকে ছুঁয়ে দিতে চাইছে। গাছের পাতার এমন মেলবন্ধনে ভালোবাসার পরশ বুলিয়ে দিচ্ছে সূর্যের আলো। সে আলো আবার সবুজ পাতাকে ভেদ করে রাস্তায় ঠিকরে পড়ছে। কখনো আটকে যাচ্ছে পাতায়। সব মিলিয়ে আলো ছায়ার এক সুন্দর চিত্র নিয়মিত ফুটে উঠে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই সুন্দর এই রাস্তাটি মুহূর্তেই মন কেড়ে নিবে। রাস্তার দুপাশের এই আকাশচুম্বী গাছগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণে। সেই সঙ্গে বয়ে চলেছে নানা ইতিহাস। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া শেষ করে যাওয়া অনেকেই বৃদ্ধ হয়েছেন। কিন্তু এই রাস্তাটি এখনো চিরযৌবনা হয়ে জেগে রয়েছে। যেকারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা হলে এই রাস্তাটিতে হাটতে ভুলে যান না কেউ।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬৫ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় প্রশাসন। তৎকালীন উপাচার্য এম শামসুল হক ফিলিপাইন থেকে কিছু গগনশিরীষ গাছ নিয়ে আসেন। তিনি এই গাছগুলো রোপণের দায়িত্ব দেন উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যানকে। তার হাত ধরেই ক্যাম্পাসের কাজলা রোড থেকে শের-ই-বাংলা হল পর্যন্ত এই গগনশিরীষ গাছগুলো লাগানো হয়।

 

 

রাস্তাটির নাম প্যারিস রোড কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি ড. গোলাম কবীর বলেন, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের তৎকালীন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে লাগানো গাছগুলো শিগগিরই ক্যাম্পাসের দৃষ্টিনন্দন স্পটে পরিণত হয়। রাস্তাটির সঙ্গে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তাগুলোর অনেকটা মিল খুঁজে পাওয়া যায় বলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এটিকে প্যারিস রোড বলতে থাকেন। সেই থেকে রাস্তাটি প্যারিস রোড নামে পরিচিত হয়ে উঠে।

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পদচারণায় সকাল-সন্ধ্যা সরব থাকে এই রাস্তাটি। রাস্তার দুপাশের বেঞ্চ আর ঘাসে বসে চলে গান আর আড্ডা। নানা দিবস, অনুষ্ঠান আর র‌্যাগডে তে মুহূর্তগুলোকে ফ্রেমবন্দী করতে ব্যস্ত থাকেন শিক্ষার্থীরা। সকাল এবং বিকেল বেলায় হাটার জন্য এই রাস্তাটিই থাকে সবার পছন্দের শীর্ষে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী রবিন বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন এমন কোনো বিকেল নেই যে প্যারিস রোডে হাটিনি। আর কয়েক মাস পরেই স্নাতকোত্তর শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে চলে যেতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা স্মৃতির সঙ্গে প্যারিস রোডটিও হৃদয়পটে গাথা থাকবে আজীবন।

চারুকলার দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী লাবু হক বলেন, ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার আগে প্যারিস রোডের দুপাশে সারিবদ্ধ বড় বড় গাছ গুলোর ছবি দেখেছিলাম, তখন ভাবতাম কবে আমি রাবির শিক্ষার্থী হয়ে এ রাস্তায় হাটতে পারব। এখন  রাবির একজন শিক্ষার্থী হয়ে যখন এ রাস্তায় হাটি তখন অন্যরকম এক ভালোলাগা কাজ করে।

বাইরে থেকেও বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেড়াতে আসেন অনেকে। বিমোহিত হন প্যারিস রোডের সৌন্দর্যে। এমনই এক দর্শনার্থী টাঙ্গাইলের ইমরান কবির বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু স্থাপনা চোখে পড়ার মতো। তবে প্যারিস রোডের সৌন্দর্য্য সবাইকে মুগ্ধ করতে বাধ্য। আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর রাস্তা এটি।

ধারণা করা হয় দেশের আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো প্রতিষ্ঠানে এ রকম সুউচ্চ গাছের বিন্যাস নেই। সে কারণেই এটি দেশের অন্যতম একটি দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর