বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

যেসব বিষয় দেখবেন ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ

যেসব বিষয় দেখবেন ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক কর্মকর্তা সাবহানাজ

এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সংক্রান্ত বিষয়গুলো দেখার জন্য একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক। সাবহানাজ রশীদ দিয়া নামের এই কর্মকর্তা গত এপ্রিল মাস থেকেই কাজ শুরু করেছেন।

সোমবার একটি অনলাইন মিটিংয়ে বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের কাছে সাবহানাজ রশীদ দিয়াকে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়। পরিচিতি পর্বের পর তার কাজ কী হবে, তা নিয়ে আলোচনা চলছে।

বাংলাদেশে প্রায় চার কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করেন। এটি যেমন ব্যক্তিগত যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনি ব্যবসার প্রয়োজনেও অনেকে এই মাধ্যমটিকে ব্যবহার করেন। এছাড়া, বাংলাদেশে ফেসবুকের নিজস্ব ব্যবসায়িক স্বার্থও রয়েছে। ফলে বাংলাদেশ বিষয়ক একজন কর্মকর্তা হিসেবে সাবহানাজ রশীদের নিয়োগকে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের গণমাধ্যমে প্রথম তথ্যটি প্রকাশ করেন। গত এপ্রিল মাস থেকেই তিনি তার পদের কাজ শুরু করেন। সোমবারই তাকে বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়।

বাংলাদেশে ফেসবুকের পক্ষে জনসংযোগের দায়িত্বে থাকা প্রতিষ্ঠান বেঞ্চমার্ক পিআর জানায়, সাবহানাজ রশীদ দিয়া ফেসবুকের বাংলাদেশ বিষয়ক পাবলিক পলিসি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন।

বেঞ্চমার্ক পিআর জানায়, বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ফেসবুকের সম্পর্ক রক্ষা করাসহ এনজিও ও আই-এনজিও, টেক কোম্পানি এবং সিভিল সোসাইটির সঙ্গে ফেসবুকের সম্পৃক্ততার বিষয়গুলো সাবহানাজ রশীদ দিয়া দেখবেন।

এছাড়া ফেসবুকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল টিমের একজন সদস্য হিসেবে কাজ করছেন বাংলাদেশের পাবলিক পলিসি ম্যানেজার সাবহানাজ রশীদ দিয়া।

বাংলাদেশ বিষয়ক একজন কর্মকর্তা হিসেবে কী ধরণের কাজ করতে হবে, সে সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয় ফেসবুকের বিজ্ঞাপনে।

'পাবলিক পলিসি ম্যানেজার স্থানীয় ভাষা, জননীতি এবং বিধিবিধান বিশ্লেষণ করে দেশটি সম্পর্কে তথ্য যোগানের প্রথম কাজটি করবেন। সেসব তথ্যের ভেতর ওই দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক গভীর পর্যবেক্ষণ থাকবে, যার ভিত্তিতে ওই দেশের পরিবর্তনশীল পরিস্থিতিসহ সরকার, এনজিও, অ্যাকাডেমিয়া, শিল্প, প্রযুক্তিসহ অন্যান্য কোম্পানির সঙ্গে ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন শাখার গভীর সম্পর্ক গড়ে তোলা হবে। দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি ডিরেক্টরের কাছে তিনি রিপোর্ট করবেন।

ফেসবুক আরো জানায়, পাবলিক পলিসি ম্যানেজার এমন একটি টিমের সদস্য হিসেবে কাজ করবেন, যাদের গোপনীয়তা, নিরাপত্তা, উম্মুক্ত ইন্টারনেট, ডিজিটাল অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি, নতুন নতুন বিভিন্ন পক্ষের সম্পৃক্ততা তৈরিতে করতে কাজ করতে হবে।

ফেসবুকের বাংলাদেশে পাবলিক পলিসি ম্যানেজার নিয়োগের বিজ্ঞাপনের শর্ত অনুযায়ী, এই পদে থেকে তাকে যেসব দায়িত্ব পালন করতে হবে:

* প্রযুক্তি, সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল অর্থনীতি এবং সমাজের বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে, এমন দেশীয় নীতি সম্পর্কিত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা।

* নীতিনির্ধারক, সরকার, তদারকি কর্তৃপক্ষ, প্রাতিষ্ঠানিক বিভিন্ন পক্ষ এবং সিভিল সোসাইটির সঙ্গে বৈঠকে ফেসবুকের প্রতিনিধিত্ব করা।

* দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি টিমের সঙ্গে কাজের মাধ্যমে এমন কর্মসূচি তৈরি করা, যা সমাজের সব স্তরে ফেসবুক ব্যবহারের সুবিধা এবং এ ব্যাপারে আস্থা গড়ে তুলবে।

* ফেসবুকের পলিসি প্রোগ্রাম টিমের সঙ্গে কাজের মাধ্যমে নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, ছোট ব্যবসা ইত্যাদিকে গুরুত্ব দিয়ে দেশভিত্তিক পাবলিক পলিসি তৈরি করা।

* কোম্পানির ভেতর পণ্য, বাজারজাতকরণ এবং যোগাযোগ টিমের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করা, যাতে প্রধান নীতি অনুসারে কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

* অ্যাডভোকেসি টিম, অ্যাকাডেমিয়া এবং ইন্ডাস্ট্রি সংগঠনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা।

* ফেসবুকের প্রধান নীতিগুলোর ব্যাপারে সবার কাছে ফেসবুকের অবস্থান তুলে ধরা।

সামাজিক মাধ্যম বিষয়ক গবেষক ড. নাসিম মাহমুদ জানান, অনেকদিন ধরেই বাংলাদেশের সরকার চাইছিল, ফেসবুক যেন বাংলাদেশের বিষয়গুলো দেখার জন্য বাংলাভাষী কাউকে নিয়োগ দেয়।

তিনি বলেন, কারণ ফেসবুকের অনেক বিষয়ে সরকারের বক্তব্য থাকে, আপত্তি থাকে, সেগুলো যেন অ্যাড্রেস করা হয়। সেই কারণেই ফেসবুক এই নিয়োগ দিয়েছে বলে মনে করা যেতে পারে। এখানে তিনি আসলে একটা পয়েন্ট অব কন্ট্রাক্ট হিসাবে কাজ করবেন।

তিনি আরো বলেন, একদিকে বাংলাদেশে ফেসবুকের ব্যবহারকারী অনেক বেড়েছে, দেশটিতে ব্যবসা বেড়েছে। আবার ফেসবুকের অনেক কন্টেন্ট নিয়ে সরকারের আপত্তির কথা বিভিন্ন সময় জানানো হয়েছে। সেটাও অ্যাড্রেস করার ব্যাপার আছে। সেই সঙ্গে ফেসবুকের পক্ষ থেকেও একজন কাউকে দরকার, যিনি বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যাপারগুলো দেখবেন। মূলত এই তিনটি কারণেই বাংলাদেশে পাবলিক পলিসি ম্যানেজারের নিয়োগটা দেয়া হয়েছে বলে আমি মনে করি।

সাবহানাজ রশীদ দিয়া বাংলাদেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেন। পরে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। সেখানে ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কেলেতে পড়াশোনা করেন।

এক সময় রিপোর্টার ও সাব-এডিটর হিসেবেও ঢাকার একটি ইংরেজি দৈনিকে কাজ করেছেন। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের একটি প্রকল্প, বিশ্বব্যাংক, ইউএসএইড, বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনেও কাজ করেছেন বলে তার লিঙ্কডইন প্রোফাইলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

-বিবিসি বাংলা।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

শাহজাদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময় সভা
সিরাজগঞ্জে পুরোদমে চলছে কৃষিবান্ধব সোলার প্রকল্পের কাজ
সিরাজগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
বেলকুচিতে বিএসটিআই অনুমোদন না থাকায় টেক্সটাইল মিলকে জরিমানা
বেলকুচিতে পুষ্টি বিষয়ক সমন্বয় কমিটির দ্বি-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
গবেষণায় আরো জোর দিতে বললেন কৃষিমন্ত্রী
রংপুর ও ভোলার চরের মানুষদের সুখবর দিলেন পরিবেশমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক