শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বেলকুচির ঐতিহ্যর শেকড় তাঁতশিল্প

বেলকুচির ঐতিহ্যর শেকড় তাঁতশিল্প

সিরাজগঞ্জের বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া উপজেলা তাঁতশিল্পের প্রসিদ্ধ অঞ্চল। দুই দশক আগেও যমুনার এই নিম্নাঞ্চলে হতো না সেরকম চাষাবাদ। যমুনার ভয়াল আগ্রাসনে বছরের অর্ধেক সময় থাকতো পানিতে নিমজ্জিত। সেই থেকেই এই অঞ্চলে তাঁতের প্রচলন।

বেলকুচি ১৬৪.৩১ বর্গ কিলোমিটার আয়তনে জেলার ২য় ক্ষুদ্রতম উপজেলা। এই এলাকার অধিকাংশ মানুষই তাঁতশিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে জড়িত।

আশার কথা হলো হস্তচালিত তাঁতশিল্পের জন্য বেলকুচি উপজেলা বিখ্যাত। তবে বর্তমানে পাওয়ারলুম (মোটর চালিত) তাঁতশিল্পের সংখ্যাও নেহাত কম নয় বিদ্যূৎ এর সুবিধা থাকায় এখন তাঁত মালিকেরা হস্তচালিত তাঁতশিল্পকে মোটর চালিত তাঁতে রুপান্তর করতে ব্যস্ত। এতে করে উৎপাদন বাড়ছে, লাভ বেশী হচ্ছে।

এখানকার তাঁতকলে উন্নত মানের লুংঙ্গি, শাড়ী তৈরী করা হয়। পুরো উপজেলা জুড়েই তাতেঁর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় । তাতেঁর খট খট শব্দে এখানকার মানুষের ঘুম আসে আবার ঘুম ভাঙ্গে। উপজেলার লোকজনের পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের লোকজন এই পেশার সাথে জড়িত। বিশেষ করে রংপুর, কুড়িগ্রাম,পঞ্চগড়,গাইবান্ধা, দিনাজপুর সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের লোকজন এই উপজেলায় কাজ করে।

বেলকুচির সোহাগপুর হাটের মাধ্যমে এখানকার লুঙ্গি, শাড়ী সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ব্যবসায়ীরা হাটে আসে এবং পাইকারী লুঙ্গি,শাড়ী,কাপড় ক্রয় করে। বিভিন্ন উৎসবে বাঙালি রমনীদের প্রথম পছন্দ তাঁতের শাড়ী। তাছাড়া বিভিন্ন উৎসব,পার্বণের শাড়ী তৈরী হয় এই অঞ্চলে।

বেলকুচির বাহারী নজরকাড়া বৈশাখী শাড়ীর জুড়ি মেলা ভার। বেলকুচির লুঙ্গির ও কদর রয়েছে সারাবিশ্বে। লুঙ্গি রপ্তানিতে সিআইপি পদক রয়েছে এই অঞ্চলের লুঙ্গির। আমানত শাহ লুঙ্গি, ফজর আলী লুঙ্গি,বাবা লুঙ্গি,ক্লোজআপ লুঙ্গি সহ নামধারী লুঙ্গির কারখানা অবস্থিত বেলকুচিতে।

বেলকুচি উপজেলা তাঁতিলীগের সভাপতি আব্দুল মান্নান জোয়ার্দার জানান, বেলকুচি তাঁত মালিকেরা করোনা কালীন সময়েও শ্রমিকদের কর্মসংস্থান টিকিয়ে রেখেছে নিজেদের প্রচেষ্টায় । লাখ লাখ শ্রমিকের আয়ের পথ অব্যাহত রেখেছে তাঁত মালিকের। এখানে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে তাঁত শিল্পকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারতাম আমরা। বিশেষ করে ব্যাংক থেকে অনেক মালিক ঋণ নিয়ে তা পরিশোধ করতে ব্যার্থ হওয়ায় অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে । যদি সরকার সল্প সুদে ঋণ দেয়ার ব্যাবস্থা করতো তাহলে তাঁত শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার মালিক ও শ্রমিক পরিবার নিয়ে ঘুড়ে দারাতে পারতো।

এ বিষয়ে দাউদ টেক্সটাইল এর মালিক মো. সাইফুল ইসলাম নুহু জানান, বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ পারি দিয়ে আসলেও বর্তমানে তাঁত শিল্পের বেহাল দশায় পতিত হয়েছে । সূতার দাম বৃদ্ধির কারনে উৎপাদন খরচ বেরে যাচ্ছে কিন্তু হাঁটে বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে। অনেক সময় হাটে কাপড় বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া গাড়ির ভাড়া পর্যন্ত দিতে পারিনা। এই শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের সুপরিকল্পিত নজরদারী প্রয়োজন।

দেশীয় কাপড়ের প্রায় ৬০ শতাংশ উৎপাদিত হয় সিরাজগঞ্জে। বেলকুচির তাঁতশিল্প সঠিক পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতির ধারা অব্যাহত থাকবে হাজার বছর।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই