মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাতাস দিয়ে তৈরি হচ্ছে খাদ্য

বাতাস দিয়ে তৈরি হচ্ছে খাদ্য

বাতাস দিয়ে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য তৈরি করেছেন ফিনল্যান্ডের কয়েকজন বিজ্ঞানী। তারা বলছেন, এই খাবার পুষ্টিগুণের দিক দিয়ে সয়া'র প্রতিযোগী হয়ে উঠতে পারবে। তাদের দাবি এই খাবার তৈরিতে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন প্রায় শূন্যের কোটায় থাকবে। যদি এর জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সৌর অথবা বাতাস দিয়ে তৈরি হয়।

এই বিজ্ঞানীদের স্বপ্ন যদি বাস্তব রূপ পায়, তাহলে কৃষির মাধ্যমে বর্তমানে যেসব সমস্যা তৈরি হচ্ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

স্বাদহীন প্রোটিন

বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইলেক্ট্রোলাইসিস ব্যবহার করে পানি থেকে হাইড্রোজেন আলাদা করা হয়। তারপর সেই হাইড্রোজেন, বাতাস থেকে নেয়া কার্বন-ডাই অক্সাইড ও খনিজ পদার্থ মাটিতে পাওয়া যায় এমন এক প্রকার ব্যাকটেরিয়াকে খাইয়ে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য তৈরি করা হয়েছে। এর নাম দেয়া হয়েছে ‘সোলেন’ যা খেতে একদম স্বাদহীন। 

বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এমনটাই চেয়েছেন। এই প্রোটিন সরাসরি খাওয়া নয় বরং অন্য ধরনের খাবারের সঙ্গে এটি যুক্ত করে পুষ্টিগুণ বাড়ানো যায়। এটি ব্যবহার করে বিস্কুট, পাস্তা, নুডুলস বা রুটি এমনকি কৃত্রিম মাংস বা মাছ তৈরি সম্ভব। এই প্রোটিন গবাদিপশুর খাবারো হতে পারে।

ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কি শহরের পাশে অবস্থিতি এই ‘সোলেন’ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী কর্মকর্তা পাসি ভাইনিক্কা। যুক্তরাজ্যের ক্র্যানফিল্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি বলেন, এমন খাবার উৎপাদন প্রযুক্তির ধারণা প্রথম এসেছে ষাটের দশকে। মহাকাশযানে ব্যবহারের জন্য এমন প্রযুক্তির শুরু। 

বিদ্যুতের দাম এখানে বড় একটি বিষয় বলছিলেন পাসি ভাইনিক্কা। তবে সৌর বিদ্যুৎ প্রযুক্তি যেভাবে সামনে এগোচ্ছে তাতে করে এর দাম হয়তো ভবিষ্যতে আরো কমে আসবে। তাই সোলেন উৎপাদনে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহারেই তার আগ্রহ বেশি। এই বিজ্ঞানীরা যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে পারেন তবুও বিশ্বের চাহিদা মেটানোর মতো বিশাল পরিমাণে এই প্রোটিন উৎপাদন সম্ভব হতে বহু বছর লেগে যাবে।

তাদের পরিকল্পনা ব্যর্থও হতে পারে। তবে কৃত্রিম খাবার তৈরির ভবিষ্যতের দিকে অগ্রসর হওয়ার এটি একটি ধাপ বলা যেতে পারে। সায়েন্স ফিকশন সিনেমায় যেমনটা দেখেছেন একদিন হয়ত সেরমক কৃত্রিম মাছ, মাংস খাবে মানুষ।

সয়ার সঙ্গে তুলনার কারণ

সয়া থেকে তৈরি প্রোটিন খুব উন্নত বলে এরইমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। যা মাংস বা মাছ জাতীয় প্রোটিনের বিকল্প হিসেবে অনেক গ্রহণযোগ্য। কিন্তু সয়াবিন উৎপাদনে ব্যাপক জমি ও পানি লাগে। যা শেষ পর্যন্ত পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর এবং খরচের বিষয়।

কিন্তু ব্যাকটেরিয়া বা অণুজীব দিয়ে প্রোটিন তৈরিতে দশভাগের একভাগ পানি লাগবে, জমির ব্যবহারও অনেক কম হবে। আর নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে পারলে এর উৎপাদন খরচ আরও কম হবে।

পরিবেশবাদী ক্যাম্পেইনার জর্জ মনবিয়ট পৃথিবীর ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ হতাশ। কিন্তু তিনি এই প্রোটিন উৎপাদনকারী প্রযুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, গবাদিপশু লালনপালন করে মাংস বা অন্যান্য প্রোটিন জাতীয় খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে ব্যাপক পরিমাণে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়। যা বৈশ্বিক উষ্ণতার অনেক বড় একটি উৎস। 

জর্জ মনবিয়ট বলছেন, খাদ্য উৎপাদন করতে গিয়ে পৃথিবী শেষ হয়ে যাচ্ছে। মাছ ধরা এবং খামারগুলো পৃথিবীর বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র ধ্বংসের সবচেয়ে বড় কারণ। জলবায়ু পরিবর্তনেরও বড় কারণ এটি।

তিনি আরো বলেন, তবে আশার আলো যখন প্রায় নিভে যাচ্ছে এরকম একটি সময়ে এসে কৃষিবিহীন খাদ্য উৎপাদন এই গ্রহ এবং তার মানুষকে রক্ষায় বড় সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিয়েছে। সাময়িকভাবে প্রোটিন জাতীয় খাবারের বদলে সবজি-জাতীয় খাবার খাওয়ার অভ্যাস পৃথিবীর আয়ু কিছুটা বাড়াতে পারে বলে তিনি মনে করেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর