মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

দান-সাদকায় যেসব সুবিধা লাভ হয়

দান-সাদকায় যেসব সুবিধা লাভ হয়

দান-সাদকাহ মর্যাদাপূর্ণ একটি গুণ। আল্লাহ তাআলা এ গুণটিকে ঈমান ও নামাজের সঙ্গে উল্লেখ করেছেন। আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা ঈমানের বিষয়। এর সঙ্গে দান-সাদকার বিষয়টি সম্পৃক্ত করার কারণ কী?

কুরআনের বর্ণনা অনুযায়ী যেসব গুণের মাধ্যমে মুমিনরা হেদায়েতের উপর প্রতিষ্ঠিত। তাহলো-
- আল্লাহকে না দেখে বিশ্বাস করা।
- নামাজ প্রতিষ্ঠা করা এবং
- তাদের জন্য বরাদ্দকৃত জীবিকা থেকে দান করা।

সুরা বাকারার শুরুর দিকে মুমিন মুসলমানের পরিচয় আল্লাহ তাআলা এভাবেই তুলে ধরেন-
الَّذِينَ يُؤْمِنُونَ بِالْغَيْبِ وَيُقِيمُونَ الصَّلاةَ وَمِمَّا رَزَقْنَاهُمْ يُنفِقُونَ
‘যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদের যে জীবিকা দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৩)

এ আয়াতে কারিমায় ঈমান এবং নামাজের সঙ্গে দানের কথা উল্লেখ করার অন্যতম কারণ হলো- কোনো মানুষই দুনিয়াতে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে মতো সম্পদ নিয়ে জন্মায় না। অতপর মহান আল্লাহর অনুগ্রহে সে জীবিকা লাভ করে। তাই আল্লাহ তাআলা বান্দাকে তা থেকে তার পথে ব্যয় করার নির্দেশ দেন। এবং এটিকে মুমিন ব্যক্তির অন্যতম গুণ হিসেবে সাব্যস্ত করেন। আল্লাহ তাআলা বলেন-
إِن تُبْدُواْ الصَّدَقَاتِ فَنِعِمَّا هِيَ وَإِن تُخْفُوهَا وَتُؤْتُوهَا الْفُقَرَاء فَهُوَ خَيْرٌ لُّكُمْ وَيُكَفِّرُ عَنكُم مِّن سَيِّئَاتِكُمْ وَاللّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ
‘যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি দান গোপনে কর এবং অভাবগ্রস্তদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্যে আরও উত্তম। আর আল্লাহ তোমাদের কিছু গোনাহ দূর করে দেবেন। আল্লাহ তোমাদের কাজ কর্মের খুব খবর রাখেন।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২৭১)

কুরআনুল কারিমের এ আয়াতে দান সাদকার মাধ্যমে পাপ মোচনের বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। এ আমলে গোনাহ মাফ করে দেবেন বিষয়টি শুধু এমন নয় বরং এ আমলের মাধ্যমে বান্দার গোনাহকে আগুনের মতো জালিয়ে দেন। হাদিসে বর্ণনায় তা প্রমাণিত।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর প্রিয় সাহাবি হজরত মুয়াজ রাদিয়াল্লাহু আনহুকে অনেক উপদেশ দেন। তন্মধ্যে দান সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ একটি তথ্য তুলে ধরেন। তাহলো-
وَالصّدَقَةُ تُطْفِئُ الخَطِيئَةَ كَمَا يُطْفِئُ المَاءُ النّارَ
অর্থাৎ আর দান সাদকা পাপকে (এমনভাবে নিভিয়ে দেয়) মোচন করে; যেমন পানি আগুনকে নিভিয়ে দেয়।’ (তিরমিজি)

সুতরাং মুমিন মুসলমানের জন্য অন্যতম সুযোগ হলো, নিজেদের গোনাহকে দান-সাদকার বিনিময়ে মিটিয়ে নেয়া। পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে মুমিনের প্রকৃত গুণের বিকাশ ঘটানো। আর এতে আল্লাহর কাছে বান্দার মর্যাদা যেমন বেড়ে যাবে তেমনি গোনাহ মুক্ত হবে মুমিন।

আল্লাহ তাআলা মুমিন মুসলমানকে গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে অসহায় গরিবদের মাঝে নিজেদের জীবিকা থেকে দান করার তাওফিক দান করুন। কুরআন-সুন্নাহর উপদেশে নিজেদের জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ