ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থীর হদিস মিলছে না। তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা হয়েছে তাদের পরিবারের সদস্যদের। এই চার ছাত্রী ঢাবিতে অবৈধ উপায়ে ভর্তি হয়েছেন। তারা জালিয়াত চক্রের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন বলেও তথ্য পেয়েছে আইন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
সিআইডির তালিকায় থাকা ওই ৪ ছাত্রী হলেন, অর্থনীতি বিভাগের ২০১৬-১৭ সেশসেন জান্নাত সুলতা (শামসুন নাহার হল), একই সেশনের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা বিভাগের ইসরাত জাহান ছন্দা (ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল। তার এটাচ হল কুয়েত মৈত্রী হল),
মার্কেটিংয়ের ২০১৭-১৮ সেশনের মহুয়া আফরোজ নিঝুম এবং একই সেশনের শিক্ষা ও গবেষণার শারমিন আক্তার। ওই ৪ ছাত্রীর সন্ধান কেউ জানলে সিআইডিকে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিবছরই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ উঠে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঢাবিতে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত একটি বিশাল চক্র। প্রতিবছর ওই চক্রের অধীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়ে যান অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরা। জালিয়াতি ঠেকাতে মাঠে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তবুও ঠেকানো যাচ্ছে না তাদের জালিয়াতি। সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্যমতে ঢাবিতে ভর্তি জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত অন্তত ৩৭ জন রয়েছে সিআইডির গোয়েন্দা নজরদারিতে। এদের মধ্যে অবৈধ উপায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া ২৬ শিক্ষার্থীও রয়েছেন।
একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সিআইডির দীর্ঘ অনুসন্ধানে অবৈধভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া একটি বড় গ্রুপকে চিহ্নিত হয়েছে। ভর্তি বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছাড়াও টাকার বিনিময়ে প্রশ্ন কিনে এবং ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০০। যদিও গত এক বছরে এমন ৫৯ জনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি, যাদের মধ্যে ১৬ জন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিকে আরও ২৬ জন জালিয়াতিকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২০১৫-১৬ সেশনের ১৩ জন, ২০১৬-১৭ সেশনের ৬ জন এবং ২০১৭-১৮ সেশনের সাত শিক্ষার্থী রয়েছেন।
ওই চার ছাত্রীর বাইরে নতুন তালিকা অনুযায়ী যাদের খোঁজা হচ্ছে তারা হলেন, ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীরা হলেন, শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের আবদুল ওয়াহিদ মিশন এবং ইছহাক আলী ইছা, বাংলা বিভাগে এম ফাইজার নাঈম সাগর, রাষ্ট্র বিজ্ঞানের লাভলুর রহমান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির মাসুদ রানা এবং শাবিরুল ইসলাম সম্রাট, ইসলামিক স্টাডিজের সাঈদ হাসান নেহাল, সমাজ কল্যাণ ও গবেষণার সৌভিক সরকার, হাসিবুর রশিদ, রাকিবুল হাসান, মারুফ হাসান খান গালিব, মো. মেহেদী হাসান ও জাকারিয়া আল শাহরিয়ার পলাশ। ২০১৬-১৭ সেশনের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারের আবু মাসুম, আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আল আমিন পৃথক, শিক্ষা ও গবেষণার জাহিদুল ইসলাম ইছমী ও সৈয়দ আবু আহমেদ রোমান। এবং ২০১৭-১৮ সেশনের আইন বিভাগের মো. রিজন আহমেদ, একাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেমের মো. রাকিব হাসান, ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের ইফতেখার আলম জিসান, ম্যানেজমেন্টের রায়হান রহমান শাকিল, মার্কেটিংয়ের মাহবুব আলম সিদ্দিকী সম্রাট।
এর বাইরে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের সদস্য প্রণয় পান্ডে, জাহাঙ্গীর আলম, সাইদুর রহমান সাইদ, উৎপল বিশ্বাস, সৈয়দ শাকিল, খালিদ হাসান, মাহবুব মামুন, মোহাইমিনুল ইসলাম বাঁধন, মো. সানোয়ার, তাজুল ইসলাম, সোহানুর রহমান সোহানকে সিআইডি খুঁজছে।
সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, গত এক বছরে প্রশ্নফাঁসের বিষয় নিয়ে পাঁচটি মামলা হয়েছে। এর মধ্যে দুটি মামলার তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ