শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

ডাইনোসর, যার নাম শুনে আসছি আমার সেই ছোট বেলা থেকে।তারা এ পৃথিবীতে রাজত্ব্য করেছে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর।এতোগুলো বছর এরা পুরো পৃথিবীকে কব্জা করে রেখেছিল।কিন্তু হটাঠ কী এমন ঘটল যে পুরো পৃথিবী থেকেই বিলুপ্ত হয়ে গেল ডাইনোসর, কোথায় হারিয়ে গেল তারা?

1.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

ডাইনোসরের সঙ্গে কী হয়েছিল সেটা আমাদের জানতে হলে পেছতে হবে আজ থেকে সাড়ে ছয় হাজার কোটি বছর পেছনে। পৃথিবীর আবহাওয়া তখন একদমই অন্যরকম ছিল।চারপাশ সবুজে ঘেরা, সূর্যের মিষ্টি আলো, প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন আর ছিল ডাইনোসর। আরো কিছু প্রজাতির প্রাণী ছিল।এমনি এক প্রজাতির প্রানী হলো ম্যামোস।যারা দেখতে ছোট ইদুরের মত।এরা গর্তে বসবাস করত এবং ডাইনোসরের তুলনায় বেশ ছোট ছিল।এরা ছিল স্তন্যপায়ী প্রাণী।ডাইনোসররা যখন পৃথিবীতে রাজত্ব করছিল ঠিক তখনই একদিন ১১০ কিলোমিটার ডায়ামিটারের সমৃদ্ধ একটি এস্ট্রয়েড পৃথিবীর দিকে ধেঁয়ে আসে।পৃথিবীর গ্রাভিটিশনাল ফিল্ডে আসার সঙ্গে সঙ্গে এর গতি কয়েক গুণ বেড়ে যায়।এটি যত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের ভিতর প্রবেশ করতে থাকে ততই এর গতি বাড়তে থাকে এবং সঙ্গে সৃষ্টি হয় প্রচন্ড তাপ।১ হাজার ২০০ কিলোমিটার বেগে এটি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন এর থেকে সৃষ্ট তাপ এতই বেশি ছিল যে ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা ডাইনোসরগুলো পুরোপুরি দৃষ্টিহীন হয়ে যায়।

2.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

এস্ট্রয়েড এসে পৃথিবীতে পড়লে ভয়ঙ্করর বিস্ফোরণ ঘটে। লাখ লাখ মেট্রিকটন ধাতব পর্দাথ মাটির কয়েকশো মিটার গভীরে চলে যায়।বিস্ফোরণের জায়গাটি ১ হাজার ১৮০ কিলোমিটার চওড়া ও ২০০ কিলোমিটার লম্বা গর্তে পরিনত হয়।এই গর্তের সকল মাটি এবং ধুলা-বালি আকাশে উড়ে একটি বড় মেঘের সৃষ্টি করে।এত বড় বিস্ফোরণের ফলে ভূ-কম্পের তরঙ্গ পৃথিবী থেকে কয়েক কিলোমিটার নিচে চলে যায় এবং সৃষ্টি হয় এক ভূমিকম্পের।এই কম্পনের ফলে সমুদ্রে সৃষ্টি হয় এক বিশাল ঢেউ, এই সুনামির ঢেউ চারদিকে বাড়তে থাকে।পৃথিবী ধ্বংসের একটি প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই চালু হয়ে যায়।এই বিস্ফোরণের ফলে এতই উত্তাপ সৃষ্টি যে ১ হাজার ২০০ কিলোমিটারের মধ্যে থাকা সকল ডাইনোসর একদম পুড়ে ছাঁই হয়ে যায়।বিস্ফোরণের ফলে খনিজ পদার্থ ও ধুলা-বালির মেঘ পৃথিবীর আকাশে ২ হাজার কিলোমিটার গতিতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

3.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

এই মেঘের ঘনত্ব এতই পুরু ছিল যে সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছনো প্রায় অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল।কয়েক বছর পর্যন্ত সূর্যের আলো পৃথিবীতে পৌঁছাতে পারেনি।বিস্ফোরণের পর পৃথিবী স্বাভাবিক তাপমাত্রা ১৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যায়।যার ফলস্বরূপ যেসকল ডাইনোসর ও উদ্ভিদ বিস্ফোরণের থেকে দূরে ছিল তারাও ধ্বংস হয়ে যায়।এই মহাপ্রলয় পৃথিবীতে থাকা ৭৫ শতাংশ উদ্ভিদ ও প্রাণী ধ্বংস হয়ে যায়।এই মহাপ্রলয় থেকে যেসব প্রাণী বেঁচে গিয়েছিল তাদের মধ্যে ম্যামোস অন্যতম।এরা মাটির নিচে গর্ত করে থাকত এজন্য অত্যাধিক তাপমাত্রা থেকে এরা বেচে গিয়েছিল। এবং এরা যা পেত তাই খাওয়া শুরু করলো।মহাপ্রলয়ের কয়েক লাখ বছর পর পৃথিবী পুরোপুরি ডাইনোসর মুক্ত হয়ে যায় এবং পৃথিবীতে নতুন এক প্রক্রিয়ার শুরুর হয়ে যায়।এখন থেকে সাঁরে চার কোটি বছর আগে পৃথিবীর আবহাওয়া ও ভৌগোলিক অবস্থান অনেকটা এখনকার মত হয়ে যায়।এর ভিতর পৃথিবীর টেকটোনিক প্লেটর বিঘ্নিত হয়।যার ফলে অসংখ্য ছোট বড় দীপের সৃষ্টি হয় এবং সব থেকে বড় দীপটি এশিয়া মহাদেশের সাথে যুক্ত হয়ে তৈরি হয় ভারতীয় উপমহাদেশের।এই মিলনের ফলে সৃষ্টি হয় এক হিমালয়ের।পৃথিবীর সব থেকে বড় হিমাল মাউন্টে এভারেস্ট।

4.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

আজ থেকে ৪০ লাখ বছর আগে আফ্রিকার পূর্ব দিকের একটি পাহাড় সৃষ্টি হয় যার নাম 'ইষ্ট আফ্রিকান রিফ ভ্যালি'।এই পাহাড় সৃষ্টির ফলে সেখানকার মৌসুমী আবহাওয়ার আসা-যাওয়ার বিঘ্ন ঘটে।যে কারণে সেখানকার জঙ্গলে বৃষ্টি হওয়া বন্ধ হয়ে যায়।আর এ জঙ্গলেই থাকতো এপস নামে প্রাণী।এরা থাকত গাছের উপরে যেখানে খাবারের কোনো অভাব ছিল না, এ কারণে বেশিরভাগ সময় এরা গাছে কাটাতো।আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই জঙ্গল শুকাতে থাকে।বৃষ্টি না হওয়ায় জঙ্গল পরিণত হয় মরুভূমিতে।আর এপসের জন্য সৃষ্টি হয় খাদ্য সংকট।খাবার খোঁজে সে গাছ থেকে নিচে নামার সিদ্ধান্ত নেয়।এরাই হল আরডিপিথিকাস রেমিডাস।কয়েক হাজার বছর পার হওয়ার পর এরা দু’পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে শিখে।এতে চলাফেরা অনেক সহজ হতো, শক্তি অনেক কম খরচ আছো এবং দ্রুত একস্থান থেকে অপর স্থানে যেতে পারত।একই সঙ্গে তাদের বুদ্ধি বাড়তে থাকে। সময়ের সঙ্গেএদের হাঁটাচলা, চিন্তাভাবনা, ভাব বিনিময়ের ব্যাপক উন্নতি হয়।

5.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

তারা পাথর থেকে হাতিয়ার বানানো শিখে যায়।যার ফলে শিকার করা এদের পক্ষে অনেক সহজ হয়ে যায়। এরা আগুন জ্বালাতে ও আগুনকে আয়ত্ত করতে শিখে যায়। আর এ আগুনের খোঁজ মানুষের কাছে অনেক বড় পাওয়া ছিল।যা তাদের উষ্ণতা, আলো, অন্ধকারে সুরক্ষা প্রদান করতো।ক্রমাগত তারা পরিবার গড়তে শুরু করে।এরপর আসে 'হোমো ইরেক্টাস' মানব জাতি।এরা পূর্বপুরুষদের থেকে অনেক বেশি বুদ্ধিমান। মনের ভাষায ব্যবহার করে একে অপরের কাছে পৌঁছানোর জন্য এরা বিভিন্ন ভাষা বের করা শুরু করে।এই ভাষা সৃষ্টি আমাদের জন্য সব থেকে বড় পাওয়া ছিল।

6.ডাইনোসর থেকে শুরু করে মানব সভ্যতা

আর এজন্যই আমরা আজ এত সভ্য।এখন থেকে ২ লাখ বছর পূর্বে মানব জাতির বিকাশের মাধ্যমে আমাদের অস্তিত্ব শুরু হয়।তখন আমরা বিবর্তিত হয়ে হই 'হোমো সেপিয়েন্স' সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী। এরপর ক্রমাগত মানব জাতির মস্তিষ্ক আরো বিকাশিত হয়।আমরা সভ্য জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হই এবং সভ্যতা তৈরি করি।কয়েক হাজার বছর আগে পূর্বে হয় সভ্যতার যাত্রা।এখন আমরা মেধা দিয়ে জয় করেছি চন্দ্রকে। প্রায় সাড়ে ৬ হাজার কোটি বছর সফর করেও মানব জাতির সফর এখনো অনেক বাকি!

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই