মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান বন্ধ করতে হবে: স্পিকার

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পাবলিক প্লেসে ধূমপান বন্ধ করতে হবে: স্পিকার

জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, অসংক্রামক রোগের অন্যতম কারণ তামাকের ব্যবহার। পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও নারী-শিশুসহ অন্যরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

জনস্বাস্থ্য রক্ষায় পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপান বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়ে আমাদের সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন ব্যবহার কমাতে ভূমিকা রাখবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন ও নীতি প্রণয়ন করতে হবে।

রোববার (১ নভেম্বর) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত ‘এনগেজিং পার্লামেন্টেরিয়ানস ইন কন্ট্রোলিং নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্পিকার এ কথা বলেন।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।  সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাতের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক ডা. এ টি নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ।

সেমিনারে বক্তরা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় স্বাস্থ্যঝুঁকি ক্রমবর্ধমান অসংক্রামক রোগসমূহ। এসব রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাকের বহুল ব্যবহার। তাই এ ঝুঁকি মোকাবিলায় বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করে তামাকের ব্যবহার হ্রাস করা প্রয়োজন। সেসঙ্গে জাতীয় পর্যায়ে জনস্বাস্থ্যবান্ধব নীতি প্রণয়ন, যথাযথ বাস্তবায়ন ও জনসচেতনতা সৃষ্টি খুবই জরুরি।

ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী মূল প্রবন্ধে জনস্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপর অসংক্রামক রোগের প্রভাবের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, অসংক্রামক রোগের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকি প্রতিরোধে জনস্বাস্থ্যবান্ধব আইন ও নীতিমালা প্রয়োজন। বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি প্রতিরোধের অন্যতম উপায় তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ। এজন্য তামাক নিয়ন্ত্রণকে জোরদার করতে বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন করা দরকার। এছাড়া বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণ, শিল্পজাত খাদ্যে লবণ ও ট্রান্সফ্যাটের মাত্রা নির্ধারণের বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন জরুরি। পাশাপাশি এসব রোগ প্রতিরোধে ব্যক্তি জীবনে স্বাস্থ্যকর জীবনাচরণ মেনে চলার ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে হবে।  

সোহেল রেজা চৌধুরী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশে মোট মৃত্যুর ৬৭ শতাংশের পেছনে দায়ী হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগ। আর শুধু তামাকই মোট মৃত্যুর ১৯ শতাংশের পেছনে দায়ী। এ রোগগুলোর চিকিৎসা ব্যয়বহুল এবং এসবে একবার আক্রান্ত হলে পুরোপুরি আরোগ্য লাভ করা অনেক ক্ষেত্রেই সম্ভব হয় না। ফলে আক্রান্ত ব্যক্তির কর্মক্ষমতা কমে যায়, যা পরিবার ও দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।

অধ্যাপক ডা. হাবিবে মিল্লাত বলেন, দেশে প্রতিবছর যতো মানুষ মারা যান, তার ২২ শতাংশই হৃদরোগ, ক্যান্সার, কিডনি রোগের মতো অসংক্রামক রোগের কারণে অকালে মৃত্যুবরণ করে থাকেন। তাছাড়া বর্তমান করোনা মহামারিতে এসব রোগে আক্রান্তরা আরও বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। তাই অসংক্রামক রোগকে অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। এসব ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসায় ইউনিভার্সাল হেলথ কাভারেজ বাস্তবায়ন করাটাও জরুরি।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- ডা. আ ফ ম রুহুল হক, মেহের আফরোজ চুমকি, কাজী নাবিল আহমেদ, শিরীন আখতার, পীর ফজলুর রহমান, ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর, আরমা দত্ত, উম্মে কুলসুম স্মৃতি, নাহিদ ইজাহার খান, অপরাজিতা হক, শিরীন আখতার, নাহিম রাজ্জাক, সৈয়দা রুবিনা আক্তার মিরা ও আদিবা আনজুম মিতা।

এছাড়া ভার্চ্যয়ালি যুক্ত ছিলেন- ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুল মালিক, ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েলা কুয়েভাস ব্যারন, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বর্দন জং রানা, বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ডা. এ কে আজাদ খান, কিডনি ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন-উর-রশীদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম ও ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিডসের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক বন্দনা শাহ।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ