রোববার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ার বিশেষ যে কারণ

নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ার বিশেষ যে কারণ

নামাজে সূরা আল ফাতিহা পাঠ করা আবশ্যক। এ বিষয়ে ফিকহ গবেষকরা একমত। হানাফি মাজহাব অনুসারে নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করা ওয়াজিব। অন্য মাজহাবে তা পাঠ করা ফরজ।

এখন প্রশ্ন হলো, নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করা আবশ্যক কেন? উত্তরে ধর্মতাত্ত্বিক আলেমরা বলেন, ইসলামের মৌলিক বিশ্বাস ও শিক্ষা, পবিত্র কোরআনের মূল ভাষ্য ও নামাজের মূল উদ্দেশ্য সূরা ফাতিহায় বিবৃত হয়েছে।

বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি নামাজে সূরা ফাতিহা পাঠ করল না, তার সালাত অপূর্ণাঙ্গ’। (মিশকাত : ৮২৩)

এ ছাড়া সূরা ফাতিহায় বান্দার কাছে আল্লাহর এবং আল্লাহর কাছে বান্দার প্রত্যাশাগুলো ফুটে উঠেছে।

বান্দার সর্বোত্তম প্রার্থনা: সাইয়েদ আবুল হাসান আলী নদভি (রহ.) সূরা আল ফাতিহার তাৎপর্য বর্ণনা করে বলেন, ‘সূরা ফাতিহা নিয়ে একটু চিন্তা করে দেখুন! সূরাটি কোরআনের অলৌকিকত্বের উত্তম দৃষ্টান্ত। যদি পুরো পৃথিবীর সব মেধা, সব জাতি-গোষ্ঠীর সৃষ্টিশীল কবি-সাহিত্যিক, মনোবিদ, নৈতিকতার শিক্ষক ও ধর্মীয় গুরু একত্র হয় এবং তারা এমন একটি বক্তব্য তৈরি করতে চায়, যা বিভিন্ন বর্ণ, শ্রেণি ও স্তরের মানুষের প্রার্থনা হিসেবে যথেষ্ট হবে- যদিও তাদের প্রয়োজন ও প্রত্যাশাগুলো পরস্পর থেকে ভিন্ন এবং যে বক্তব্যের মাধ্যমে তারা নিজেদের ইবাদতে মনের ভাব পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারবে, তবে তারা সূরা ফাতিহার চেয়ে উত্তম কোনো ভাষ্য তৈরি করতে পারবে না। কেননা সূরা ফাতিহা সর্বশ্রেণির মানুষের আত্মিক প্রশান্তির জন্য যথেষ্ট’। (আরকানে আরবাআ, পৃষ্ঠা: ৪৭)

নামাজে সূরা ফাতিহা পড়ার বিশেষ যে কারণ

সূরা আল ফাতিহাই নামাজ: আল্লাহর স্মরণ, ভাব, ভাষ্য ও প্রার্থনার বিচারে সূরা ফাতিহা নামাজেরই সমার্থক। এ জন্য হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ সূরা ফাতিহাকে ‘নামাজ’ শব্দে ব্যক্ত করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, আমার ও আমার বান্দার মধ্যে আমি নামাজকে (সূরা ফাতিহা) অর্ধেক অর্ধেক করে ভাগ করে নিয়েছি এবং আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। বান্দা যখন বলে, সমস্ত প্রশংসা বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য, আল্লাহ তখন বলেন, আমার বান্দা আমার প্রশংসা করেছে।

সে যখন বলে, তিনি অতিশয় দয়ালু এবং করুণাময়; আল্লাহ বলেন, বান্দা আমার প্রশংসা করেছে, গুণগান করেছে। সে যখন বলে, তিনি বিচার দিনের মালিক; তখন আল্লাহ বলেন, আমার বান্দা আমার গুণ বর্ণনা করেছে। আল্লাহ আরো বলেন, বান্দা তার সব কাজ আমার ওপর সমর্পণ করেছে। সে যখন বলে, আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। তখন আল্লাহ বলেন, এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যকার ব্যাপার।

আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। যখন সে বলে, আমাদের সরল-সঠিক পথে পরিচালনা করুন। যেসব লোকদের আপনি নেয়ামত দান করেছেন, তাদের পথে নয়, যাদের প্রতি আপনার শাস্তি অবতীর্ণ হয়েছে এবং যারা পথভ্রষ্ট হয়েছে। তখন আল্লাহ বলেন, এসবই আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দার জন্য আছে সে যা চায়। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৭৬৪)

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: