সাম্প্রতিক সময়ে হঠাৎ করেই অস্বাভাবিক ভাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা প্রকট আকার ধারণ করেছে। পুরান ঢাকার চকবাজার এবং বনানীর অগ্নিকাণ্ডের লেলিহান শিখা কেড়ে নিয়েছে শতাধিক প্রাণ। গুলশানের ডিসিসি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ডে পুড়ে ছাই হয়েছে তিন শতাধিক দোকান, নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন উক্ত মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। এছাড়া ইদানিং প্রতিদিনই রাজধানীতে বিভিন্ন জায়গায় ছোট বড় অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে। নিয়মিত ভাবে বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটায় স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন জেগেছে এসব অগ্নিকাণ্ডের পেছনে গভীর কোনো ষড়যন্ত্র লুকিয়ে নেইতো?
রাজধানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে কোনো একটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্রের বিষয়টি জোরালো হয়েছে সম্প্রতি বিএনপির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক বলে পরিচিত ও দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ের নেতা ডা. জাফরুল্লাহর এক বক্তব্যে। রাজধানী’র চুড়িহাট্টা, বনানীর এফ আর টাওয়ার বা গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারে অগ্নিকাণ্ডের দায় অনেকটা পরোক্ষভাবে স্বীকার করে নিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের এই বুদ্ধিজীবী। পাশাপাশি আরো হিংস্র হয়ে ওঠারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।
গত ৩১ মার্চ সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, ‘আগুন জ্বলছে, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে আগুন জ্বলবে।’ তিনি আরো বলেন পুনরায় জাতীয় নির্বাচন ছাড়া দেশে শান্তি আসবে না। এখন রাজধানীতে আগুন জ্বলছে। পরবর্তীতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে আগুন জ্বলবে।''
ডা. জাফরুল্লাহর এমন বক্তব্যের পর দেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক তার বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বলছেন, রাজধানীতে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বিভিন্ন অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপি জামায়াতের জড়িত থাকার ব্যাপারটি অনেকটা পরিষ্কার হয়ে গেছে। সাধারণ মানুষের জান-মালকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে মূলত দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে তারা। অথচ রাজনীতির নামে দেশের মানুষকে পুড়িয়ে মারার কোনো অধিকার নেই কোনো রাজনৈতিক দলের।
এছাড়া বনানীর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় বিএনপির নেতা তাসভীরের জড়িত থাকা এবং তার গ্রেফতারের প্রতিবাদে বিএনপির একাধিক নেতার পক্ষ থেকে সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি মূলত উক্ত অগ্নিকাণ্ডে বিএনপির ইন্ধনের বিষয়টি জোরালো করে তুলেছে।
প্রসঙ্গত আন্দোলনের কৌশল হিসেবে অগ্নিসন্ত্রাসের ঘটনা এবারই প্রথম নয়, এর আগেও আন্দোলনের নামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা ছুড়ে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে সহস্রাধিক মানুষকে।
দেশের সাধারণ মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহলকে বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগানও দেওয়া হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। পাশাপাশি রাজধানীতে বিভিন্ন ভবনে সাম্প্রতিক আগুন সন্ত্রাসকে বিএনপি-জামায়াতের পরিকল্পিত নাশকতা হিসেবেই মনে করছে জনসাধারণ।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ
