বিএনপি থেকে নেতাকর্মীদের অন্য দলে যাওয়া এবং রাজনীতি ছেড়ে দেয়ার হিড়িক পড়েছে। এমনকি অনেক নেতাই ব্যবসায় মনোযোগী হচ্ছেন বলেও জানা যাচ্ছে। ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে বিপর্যয়ের পর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
এ হতাশার সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে স্থানীয় পর্যায়ে। গত এক সপ্তাহে স্থানীয় পর্যায়ে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী জাতীয় পার্টি, বিকল্পধারাসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েছে। তবে কৌশলগত কারণে এসব দলত্যাগের খবর প্রকাশ্যে আসছে না। এছাড়া বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপির রাজনীতিতে থাকায় শেষ পর্যন্ত কোনো ফলপ্রসূ ভবিষ্যত না দেখতে পেয়ে দলটির অনেক নেতাই রাজনীতি ছেড়ে ব্যবসায়-বাণিজ্যে মন দিয়েছেন।
এদিকে, ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগে যোগদান বিষয়ে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। সারা দেশে জানিয়ে দেয়া হয়েছে, কেন্দ্রীয় অনুমতি ছাড়া দলের স্থানীয় পর্যায়ে অন্য দল থেকে আগত কোনো নেতাকর্মীকে দলে নেয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের বিধি-নিষেধ থাকলেও বিএনপির বহুসংখ্যক নেতাকর্মী বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাপাসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলে যোগদান করছে বলে জানা গেছে।
এ পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, রংপুর, কুড়িগ্রাম, জামালপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চলের ১৪টি জেলার বিএনপির অনেক নেতাকর্মী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে যোগদান করেছে। ফলে এসব এলাকায় বিএনপিতে নেতৃত্বশূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া সিলেট, মৌলভীবাজারসহ বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল থেকেও একাধিক নেতাকর্মী অন্যান্য দলে যোগদান করছে। মৌলভীবাজার জেলা বিএনপি এখন সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সঙ্গে রয়েছেন এবং মনসুর যেন সংসদে যান এ ব্যাপারে তারা তৎপর রয়েছেন।
জানা যায়, বিএনপির রাজনীতিতে লাভের মুখ দেখতে না পারায় ইতিমধ্যে রাজনীতি ছেড়ে অন্যান্য নেতাকর্মীর মতো ব্যবসা-বাণিজ্যে মন দিচ্ছেন তারেক রহমান। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে হেরে যাওয়া, খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা, দেশে ফেরা নিয়ে ধোঁয়াশা এবং দলের চেইন অব কমান্ড ভেঙ্গে যাওয়ায় বিএনপির রাজনীতিকে অলাভজনক বিবেচনা করে দলীয় প্রধানের পদ ছেড়ে বিদেশের মাটিতে ব্যবসা করে সেখানেই স্থায়ীভাবে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
তবে বিষয়টিকে ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, তারেক রহমান ব্যবসা করতেই পারেন। এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে তার মানে এই নয় যে, তারেক রহমান রাজনীতি ছেড়ে দিচ্ছেন। তারেক রহমানসহ সকল নেতা, যারা বর্তমানে ব্যবসা করছেন, দেশের প্রয়োজনে তারাও রাজনীতিতে নেমে যাবেন। এটা তেমন কোনো বিষয় নয়।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ