শনিবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩০

সিরাজগঞ্জে কালের সাক্ষী প্রায় ৪ শত বছরের পুরনো বটবৃক্ষ

সিরাজগঞ্জে কালের সাক্ষী প্রায় ৪ শত বছরের পুরনো বটবৃক্ষ

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চান্দাইকোনা ইউনিয়নের সরাইদহ চরপাড়া গ্রামে প্রায় সাড়ে চার বিঘা জমি জুড়ে বিস্তৃত একটি বটগাছ কালের সাক্ষী হয়ে দীর্ঘ প্রায় চারশত বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছে। এ গাছটির শাখা, প্রশাখা ডালপালা মাটির সঙ্গে তৈরি করেছে এক আঙ্গিক সম্পর্ক, শীতল ছায়া আর পাখির কলকাকলি।

সেই সঙ্গে সবুজ শ্যামল এই বটগাছের নিচে যে কেউ এসে বসলে মনের সব ক্লান্তি দূর হয়ে যায়। পথচারী ও দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে এর অপরূপ প্রাকৃতিক দৃশ্য। তাই এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এক নজর দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে উপজেলার ভুয়াগাতী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন স্থানে দাড়িয়ে থাকা এই বট বৃক্ষটির পাশে। স্থানীয় ভুয়াগাতী গ্রামের বয়োবৃদ্ধ নিরঞ্জন চন্দ্র শীল (১০০)ও সরাইদহ চরপাড়া গ্রামের লোকমান হোসেন (৮০) জানায়, দাদার মুখে শুনেছি গাছটির বয়স প্রায় ৪ শত বছর।

বৃক্ষটির ছড়িয়ে থাকা একেকটি শাখা-প্রশাখা দেখলেই মনে হয় পরম মমতায় বাড়িয়ে দেয়া হাত। শিশুদের জন্য এ বটগাছটি প্রধান খেলার জায়গা। সুযোগ পেলেই তারা দলবদ্ধভাবে গাছের নিচে খেলাধুলায় মেতে উঠে। আগে বটতলায় অনেক সাধু-সন্ন্যাসী ধ্যানে মগ্ন হতেন। এখন তাদের দেখা না মিললেও হিন্দু-মুসলমান উভয় ধর্মের মানুষই গাছটি দেখতে আসেন। অনেকে আবার মানত পূরণ করার জন্য আসেন। শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয় পুরানো প্রাচীন বটতলায় প্রতিবছর জ্যৈষ্ঠ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার চরপাড়া মেলা অনুষ্ঠিত হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। প্রতিটি বাড়িতে দেখা যায় জামাই-ঝি সহ অতিথিদের উপচেপড়া ভিড়। মেলায় হিন্দু ও মুসলিমসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়। মেলাতে থাকে গ্রাম বাঙলার ঝুড়ি বুন্দি,জেলাপি, গজা, কদমা, খাজা, খুরমা, দই, ঘোল সহ বিভিন্ন রকম মিষ্টির দোকান। তাছাড়াও মেলায় থাকে নাগরদোলা, লাঠিখেলা ও ছুড়িখেলাসহ বিভিন্ন খেলা এতে মেতে ওঠে মেলায় আগত মানুষেরা।

প্রাচীন বটগাছটিকে নিয়ে প্রচলিত আজব সব কথাবার্তা শোনা যায়। বটগাছের পাতা বা ডালপালা জ্বালানি হিসেবে কেউ ব্যবহার করলে তার গায়ে জ্বর আসে। কথিত আছে, এ গাছের নিচে প্রসাব বা মলত্যাগ করলে তারা নানা রকম রোগে আক্রান্ত হয়। তাই বৃক্ষটির নিচে পরিস্কার পরিছন্ন রাখতে সকলেই সচেতন।

চান্দাইকোনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান খান জানান এই এলাকার সড়ক পথ সহ যাতায়াত ব্যবস্থায় উন্নয়নে উল্লেখিত এলাকা একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠবে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ