• সোমবার ০৫ জুন ২০২৩ ||

  • জ্যৈষ্ঠ ২২ ১৪৩০

  • || ১৫ জ্বিলকদ ১৪৪৪

সিরাজগঞ্জে আগাম জাতের ইরি বোরো ধান কাটা শুরু

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৬ এপ্রিল ২০২৩  

সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে আগাম জাতের ইরো-বোরো ধানকাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ধানের ভাল ফলন হয়েছে এবার। উচ্চ ফলন এবং বাজারে আগাম ধানের ভাল দাম পাওয়ায় খুশি কৃষকরা। জেলার ৬৩ হাজার কৃষককে কৃষি প্রণোদনা দেয়ায় বেড়েছে চাষাবাদের পরিধি।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জসহ বিভিন্ন উপজেলায় আগাম জাতের ইরি-বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে। মাঠে মাঠে ধান কাটা মাড়াই কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক ও শ্রমিকরা। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীলসহ স্থানীয় জাতের বিভিন্ন ধরনের ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। ফলন বাড়াতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরার্মশ এবং কৃষি প্রণোদনা পেয়ে এবার জেলায় চিকন জাতের ধান চাষাবাদ বেশি হয়েছে।

বাজারে চিকন ধানের চাউলের চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় জেলাজুড়ে এ ধান চাষাবাদ ক্রমেই বাড়ছে। চলতি মৌসুমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে নানা জাতের ইরি বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। এর মধ্যে তাড়াশ, উল্লাপাড়া, রায়গঞ্জ সহ কয়েকটি উপজেলায় পুরোদমে চিকন জাতের আগাম ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষি অধিদপ্তরের পরার্মশে স্থানীয় কৃষি বিভাগ মাঠ পর্যায়ে দুর্যোগ থেকে রক্ষায় কৃষকদের দ্রুত আগাম ধান কাটার তাগাদা দিচ্ছেন।

কৃষকরা শ্রমিক এবং হার্ভেস্টার মেশিনের সাহায্যে ধান কেটে ঘরে তুলছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকায় মাঠে মাঠে ধানের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকরা পুরোদমে ব্রি-৯০,৩৬ সহ স্থানীয় আব্দুল গুটি ধান কাটছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় ধানের ভাল ফলন হয়েছে এবার।

উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের সেরাপপুর গ্রামের কৃষক আতাউর রহমান জানান, তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে ৯০ জাতের ধান চাষাবাদ করেছেন। বিঘা প্রতি তিনি গড়ে ২০ মন ফলন পেয়েছেন। ঝর বৃষ্টির আগেই ধান কেটে ঘরে তোলায় এবার লাভবান হবেন তিনি।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ উপজেলায় ২৪ হাজার ৪৪৮ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। এখানে আগাম জাতের ৯০,৩৬ সহ আব্দুলগুটি ধান কাটা চলছে। চিকন জাতের এ ধান বিঘা প্রতি ২০ থেকে ২২ মণ করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে এসব ধান ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ভাল দাম এবং বাম্পার ফলনে এ উপজেলার কৃষকরা ধান চাষাবাদে লাভবান হচ্ছে।

উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা ইউনিয়নের সাতটিকরি, দিয়ারপাড়া মাঠে গিয়ে দেখা যায় উপজেলা কৃষি কর্মকতা সহ কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীদের উপস্থিতিতে চলছে ধানকাটা। এ গ্রামের কৃষক নজাব আলী ও মন্টু সরকার কাটারিভোগ, শুভলতা ধানের চাষাবাদ করেন। চলছে সেই ধান কাটা।

কৃষকরা জানান, চাষাবাদের শুরু থেকে তারা কৃষি বিভাগের সার্বিক পরার্মশে উন্নত জাতের এ ধান চাষাবাদ করেন। কর্তনের পর তাদের জমিতে গড়ে বিঘা প্রতি ২২ থেকে ২৪ মণ করে ফলন পেয়েছে। উল্লাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকতা সূবর্ণা ইয়াসমিন সুমি জানান, এ উপজেলায় ৩০ হাজারর ২৫৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষাবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে ৯৪০ হেক্টর জমির আগাম জাতের কাটারিভোগ, শুভলতা ধান কাটা হয়েছে। আশানুরুপ ভাল ফলন পাওয়া যাচ্ছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আরো আগাম ধান কাটা চলছে। আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে আগাম ধান কাটার পরার্মশ দিচ্ছি। উপসহকারী কৃষি কর্মকতাদের নিয়ে সার্বক্ষণিক মাঠে থেকে কৃষকদের এই চাষাবাদে সব ধরনের পরার্মশ ও সহযোগিতা দিচ্ছি।

সিরাজগঞ্জ জেলায় ১ লাখ ৪১ হাজার ৭৫ হেক্টর জমি থেকে এবার ৮ লাখ ৬৮ হাজার ৩৩ মেট্রিক টন ইরি বোরো ধান উৎপাদন হবে। চলতি মৌসুমে জেলায় কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ৬৩ হাজার কৃষক সার, বীজ সহায়তা পাওয়ায় ইরি বোরো চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজারে নতুন ধানের ভাল দাম থাকায় কৃষকরা লাভের আশা করছে এবার।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ
আলোকিত সিরাজগঞ্জ