শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে এক অসহায় বাবার মেয়ের রাজকীয় বিয়ে দিলেন মামুন বিশ্বাস

সিরাজগঞ্জে এক অসহায় বাবার মেয়ের রাজকীয় বিয়ে দিলেন মামুন বিশ্বাস

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কামার বেতকান্দি গ্রামের পরেশ চন্দ্র রাজবংশী ও দুলু রানীর মেয়ে সুপ্তি রানীর বিয়ে ঠিক হয় একই উপজেলার সঞ্জয় কুমার ঘোষের সঙ্গে। কিন্ত অসুস্থ অসহায় বাবা পরেশ চন্দ্র রাজবংশী মেয়ের বিয়ে দেওয়ার মতো কোনো অবস্থায় নেই। কীভাবে মেয়ের বিয়ে দেবেন সেই চিন্তা দিন দিন বাড়তে থাকে বাবা পরেশ চন্দ্র ও মা দুলু রানীর। 

পরেশ চন্দ্র পেশায় মৎসজীবী। দুই বছর আগে হার্টে রিং পড়ানোর পর থেকে তিনি আর কোনো কাজ করতে পারেন না। এরপর থেকে সংসারের হাল ধরেন ১৪ বছর বয়সী ছেলে গোপাল চন্দ্র রাজবংশী। তিন মেয়ে আর দুই ছেলে নিয়ে পরেশ-দুলু দম্পতির সংসার। 

এদিকে বিয়ের দিন চলে আসে। কোনো কিছু বুঝতে না পেরে দ্যা বার্ড সেফটি হাউজের চেয়ারম্যান মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত মামুন বিশ্বাসের কাছে চলে আসেন সুপ্তির বাবা। তাদের অসহায় অবস্থার কথা জানিয়ে মেয়ের বিয়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অনুরোধ করেন। এ সময় তাকে আশ্বস্ত করেন মামুন বিশ্বাস।

এরপর সুপ্তির বিয়ের জন্য সাহায্য চেয়ে তার ফেসবুকে পোস্ট দেন মামুন বিশ্বাস। খুব দ্রুত দেশ বিদেশ থেকে তার ফেসবুক বন্ধুরা টাকা পাঠান। সুপ্তির বিয়ের জন্য সব মিলিয়ে প্রায় ২ লাখ টাকা সংগ্রহ হয়। 

মামুন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, টাকা সংগ্রহ হবার পরে এবার সেচ্ছাসেবক নিয়ে শুরু করি বিয়ের বাজারের কেনাকাটা। বিয়ের পুরো খাদ্যসামগ্রী দেন এক দানশীল ব্যক্তি। এছাড়াও দুইটা খাসি, মুরগির রোস্ট, দই, পানি, সফট ডিংক্স, চাল, পোলাওয়ের চাল, ডাল, ডিমসহ সবকিছু কেনা হয় সুপ্তির বিয়ের জন্য। 

এরপর মেয়েসহ সবাইকে নিয়ে মার্কেটে গিয়ে বিয়ের শাড়ি, হলুদের কাপড়, জুতা কসমেটিস কেনাকাটা শেষ করি। বরের জন্য কেনা হয় ধুতি, পাঞ্জাবি ও জুতা। বিছানার চাদর, লেপ-তোষক ও বালিশ কেনাকাটা করা হয়। এবার গয়নার দোকানে গিয়ে এক ভরি স্বর্ণের গহনা বানানো হয়। নিজ হাতে টাকা তুলে দেই গহনার কারিগরকে। সব কিছু নিয়ে বিয়ে বাড়িতে চলে আসি।

হিন্দু নিয়ম অনুযায়ী বাড়িতে শুরু হয় ডেকোরেশনের কাজ। বিয়ের গেট, বর মঞ্চ ছাড়াও বিয়ের মন্ডব ও বরযাত্রীদের জন্য প্যান্ডেল তেরি করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন রঙিন সাজে লাইটিং করা হয়।

রাত ১টায় বিয়ের লগ্ন। পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে শুরু করেন বিয়ে। কনে আর বর ৭ পাক ঘুরে সম্পন্ন করতে থাকেন বিয়ে। এরপর বর-কনে দুজনের শুভদৃষ্টি ও মালা বদল করা হয় ৭ বার। পুরোহিত মন্ত্র উচ্চারণ করে বর-কনের হাত করে দেন একত্র।

পরের দিন আবার শুরু হয় বাসি বিয়ের পর্ব। বাসি বিয়েতে বিভিন্ন দেবদেবীর অর্চনা শেষে বর-কনের কপালে সিঁদুর দিয়ে দেয়। তারপর উভয় মিলে ৭ বার অগ্নি দেবতা প্রদক্ষিণ করেন। 

বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বিদায় বেলায় সুপ্তি রানী ও সঞ্জয় কুমার ঘোষ দম্পতিকে 'আশীর্বাদ’ করেন মামুন বিশ্বাসসহ সবাই। এরমধ্যে দিয়ে শেষ হয় অসহায় সুপ্তির রাজকীয় বিয়ে।

অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মামুন বিশ্বাস ঢাকা পোস্টকে বলেন, সুপ্তির বিয়েতে আবেগপ্রবণ ছিলাম আমি। বোনের বিয়েতে ভাই যেমন হয়। আমার কাছে মনুষ্যত্বই পরম ধর্ম। আমি ইসলাম ধর্মের অনুসারী। অতএব স্রষ্টার পরেই মানুষের গুরুত্ব আমার কাছে। এভাবেই সহস্রবছর বেঁচে থাকুক অসাম্প্রদায়িকতা।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই