বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জে সরিষা ফুল থেকে ১২কোটি টাকার মধু সংগ্রহের লক্ষ্য

সিরাজগঞ্জে সরিষা ফুল থেকে ১২কোটি টাকার মধু সংগ্রহের লক্ষ্য

বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জমিতে এবার সরিষা আবাদ হচ্ছে সিরাজগঞ্জে জেলায়। আর সরিষা ফুল থেকে মধুও সংগ্রহ হবে সবচেয়ে বেশি। এ বছর জেলায় ৩৫০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার পাইকারি আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা।

যদিও মৌ খামারিরা বলছেন, সরিষার জমিতে কীটনাশক প্রয়োগ কমালে মধু সংগ্রহ আরও বাড়ত। এছাড়াও খামারিদের অভিযোগ মধু সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সিন্ডিকেটের কারণে তারাও মধুর ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থায় সরকারিভাবে মধু প্রসেস কারখানা স্থাপন করা হলে মৌখামারিরা লাভবান হবে এবং এর সাথে জড়িত হাজার হাজার বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে। অন্য দিকে মধু সংগ্রহ করায় সরিষার ফলন কয়েকগুণ বেড়ে গেছে বলছে কৃষকরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় ৬৩ হাজার ৫শত হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হচ্ছে। যা দেশের অন্যান্য জেলার চাইতে বেশি। বর্তমানে সিরাজগঞ্জের চলনবিলসহ বিভিন্ন উপজেলার মাঠে মাঠে এখন সরিষার ফুলে ভরে ওঠেছে। সরিষার আবাদকে কেন্দ্র করে এ বছর সরিষা ক্ষেতের পাশে ১০১ জন মৌ-খামারি প্রায় ১১ হাজারে বেশি মৌ বাক্স স্থাপন করেছে। লক্ষ লক্ষ মৌমাছি প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে বাক্সে জমা করছে। আর মৌ চাষিরা প্রতি সপ্তাহে একবার বাক্সগুলো থেকে বিশেষ পদ্ধতিতে মধু সংগ্রহ করছেন।

মুক্তিযোদ্ধা মৌ ফার্মের মালিক শিশির কুমার শাহ জানান, কৃষকেরা সরিষার ফুল আসামাত্র বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধ ব্যবহার করছে। যাতে কীটনাশকের পরিমাণ বেশি হওয়ায় মৌমাছি অসুস্থ হয়ে মারা যাচ্ছে। এতে মধু সংগ্রহের মাত্রাও কমে যাচ্ছে। কৃষি বিভাগ যদি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারী দেখে কৃষকদের কীটনাশক ব্যবহার বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে মধু যেমন খাটি হবে তেমনি মধু সংগ্রহ বেড়ে যাবে।

আশার আলো মৌ খামারের মালিক আব্দুর রশিদ জানান, বর্তমানে ডাবর, স্কয়ার, প্রাণ, এপি ও আদি মধুসহ বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। বর্তমানে পাইকারি ২০০ টাকা কেজি হিসেবে বিক্রি করা হয়।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, কোম্পানিগুলো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মধুর দাম নির্ধারণ করে থাকেন। দেখা যায় আমাদের থেকে ২শ’ টাকা কেজি দরে কিনে তারা প্রসেস করে ৫শ থেকে ৮শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন। এতে কোম্পানি গুলোই অধিক মুনাফা লুটে নিচ্ছে। আর আমরা খামারিরা লাভের মুখ দেখছি। এ অবস্থায় উত্তরবঙ্গের মধুর খনি হিসেবে পরিচিত সিরাজগঞ্জে সরকারীভাবে মধু প্রসেস খামার গড়ে তোলা হলে মৌচাষিরা নিজেরাই প্রসেস করে মার্কেটিং করলে বেশি লাভবান হতে পারবে।

তার মতে, এতে বেকারত্ব কমে যাবে। এ অবস্থায় মৌ শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখতে মধু ক্রয়কারী বড়বড় কোম্পানির সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়ার পাশাপাশি সিরাজগঞ্জে মধু প্রসেস মিল স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন খামারিরা।

স্থানীয় কৃষক বাবলু, ফজলুর রহমান জানান, সরিষা ক্ষেতে মৌমাছি মধু সংগ্রহের কারণে সরিষার ফলন ভাল হচ্ছে। প্রায় কয়েকগুণ ফসল বেশি উৎপাদন বেড়ে যায়। কৃষকদের মতে মৌমাছি ফুলে বসলে পরায়গনের পাশাপাশি ফুলগুলো তাড়াতাড়ি ঝড়ে যায় আর সরিষার শীষগুলো দ্রুত বড় হয়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বাবুল কুমার সূত্রধর জানান, এ বছর জেলায় ৬৩ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হচ্ছে। আর সরিষার ফুল থেকে ৩৫০ মেট্রিক টন মধু সংগ্রহের লক্ষমাত্র নির্ধারণ করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ১২ কোটি টাকা। এছাড়াও কীটনাশক প্রয়োগে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি সিরাজগঞ্জে মধু প্রসেস মিল স্থাপনের প্রক্রিয়াও চলছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই