সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া ও কামারখন্দ উপজেলার প্রায় ২০ গ্রামের মানুষের যাতায়াত সুবিধার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বড়হর সেতুটি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়। উল্লাপাড়া উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত ফুলজোড় নদীর বড়হর-তেঁতুলিয়া পয়েন্টে সেতু নির্মাণ এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। অবশেষে সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় এ এলাকার মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে বদলে দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, দুই উপজেলার মানুষদের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচিত হতে যাচ্ছে।
উদ্বোধনের আগেই দৃষ্টিনন্দন এ সেতুটি দেখতে বিভিন্ন এলাকা হতে নানাবয়সী মানুষদের আগমন ঘটছে। সেতুটিকে ঘিরে নদীর পশ্চিম পাড়ে গড়ে উঠেছে বিনোদন কেন্দ্র। বিকালে ভ্রমণ পিপাসুদের আনাগোনায় মুখরিত হয় সেতু এলাকা। দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসানে উদ্বোধনের অপেক্ষায় এলাকাবাসী। সেতুর নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। দ্রুত কাজ চলছে সেতুর দুই পাড়ের সংযোগ সড়কে কার্পেটিং আর টুকিটাকি কাজ।
নিরাপদে রাতে চলাচলসহ সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সেতুর দুই পাশ জুড়ে বসানো হয়েছে সোলার স্ট্রীট লাইট। ঝলমলে আলোয় রাতের আঁধারে অপরুপ সাজে সেজেছে এ সেতু। সেতুটি ঘিরে আশার আলো দেখছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
উপজেলার বড়হর ইউনিয়নের বড়হর হাটের পাশে এলজিইডি থেকে ফুলজোড় নদীর ওপর আঞ্চলিক সড়ক গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পে ২৯৪ মিটার দীর্ঘ ও ৯ দশমিক ৮ মিটার চওড়া নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। এর পেছনে ব্যয় বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৪০ কোটি ৪১ লাখ ৬৮ হাজার টাকা বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিগত ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট সিরাজগঞ্জ-৪ (উল্লাপাড়া-সলঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য তানভীর ইমাম নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সেতু নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের পথে। এখন দুপাড়ে সংযোগ সড়কের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। সাদা আর লাল রংয়ে রাঙানো হয়েছে পুরো অংশ।
কামারখন্দ উপজেলার বিয়াড়া গ্রামের বৃদ্ধ আফছার আলী বলেন, ‘আমাদের বাড়ি কামারখন্দ উপজেলায় হলেও আমরা বড়হর হাটে নিয়মিত আসি। দীর্ঘদিন নৌকায় মালামাল পারাপার করে হাট করি, এতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এ সেতুর। এখানে সেতুটি নির্মাণ হওয়ায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে। এখন আমরা খুব সহজে যাতায়াত ও পণ্য সরবরাহ করতে পারবো।’
তেঁতুলিয়া গ্রামের আমজাদ হোসেন নামে এক বৃদ্ধ বলেন, ‘আল্লাহর কাছে বলেছিলাম, যদি কোনদিন এই সেতু নির্মাণ হয় তবে তার উপর দিয়ে হেঁটে চলাচল করার পর যেন আমার মৃত্যু হয়। খুব কষ্ট করে খেয়া নৌকায় যাতায়াত করতাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘জীবনভর খুব কষ্টে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে খেয়া নৌকায় যাতায়াত করেছি। এখন আর আমাদের কষ্ট নেই। আমরা খুব সহজে সেতুর উপর দিয়ে পারাপার হতে পারবো।’ এ বিষয়ে উল্লাপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. আবু সায়েদ বলেন, ‘সেতুটির নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সেতুর দুই পাশের এ্যাপ্রোচ সড়কের কাজ চলছে। খুব দ্রুতই সেতুটি উদ্বোধন হবে বলে আমরা আশা করছি।’
আলোকিত সিরাজগঞ্জ