বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চৌহালী উপজেলার যমুনার চরে গমের বাম্পার ফলন

চৌহালী উপজেলার যমুনার চরে গমের বাম্পার ফলন

সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর চরাঞ্চলগুলোতে আমন ধান, সরিষা ও ভুট্টার বাম্পার ফলনের পর এবার গমের বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে মুখে ফুটে উঠেছে হাসির ঝিলিক। চরাঞ্চলে নারী-পুরুষ এখন গমকাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। আশাতীত ফলন হওয়ায় খুশি চরাঞ্চলের কৃষকরা।

এদিকে চৌহালী উপজেলার যমুনা নদীর চরে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। নদী ভাঙা তিন সহস্রাধিক মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে গম চাষ করে। চলতি মৌসুমে যমুনা নদীর চরে বৃহদাকারে হয়েছে গমের চাষ। লক্ষ্য মাত্রার চেয়েও দ্বিগুণ জমিতে গমের চাষ হয়েছে এবার। সঞ্চয় হয়েছে অদম্য শক্তি ও সাহস। গম চাষ করে তাদের সংসারে এসেছে স্বচ্ছলতা। বর্ষা মৌসুমে রাক্ষুসী নদী বসত ভিটা কেড়ে নিলেও এখানকার উৎপাদিত ফসল তাদের শক্তি ও সাহস জুগিয়েছে। চরের যেদিকে তাকানো যায় শুধু ফসল আর ফসল। নানা ধরনের ফসল চরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে। একারণে তারা মুক্তি পেয়েছে ক্ষুধা ও দারিদ্র থেকে।

অগ্রহায়ণ ও পৌষ মাসে চরাঞ্চলের জমিতে গম বীজ বপন করা হয়। ফাল্গুনের শেষে ও চৈত্র মাসের প্রথম দিকে কাটা মাড়াই শুরু হয়। গমের চারা রোপনের পর খুব একটা বেশী সেচ দিতে হয় না। জমি চাষের সময় মাটির নিচে প্রয়োজন মোতাবেক জৈব্য সার ও চারা বড় হওয়ার কিছুদিন পরেই মাটির উপরে অংশে সামান্য ইউরিয়া সার প্রয়োগে ভাল ফলন পাওয়া যায়। ফলে গম চাষে খরচ হয় কম লাভবান হন কৃষক-কৃষাণীরা। 

জানা যায়, নদীপাড়ের মানুষের আর্শিবাদও যমুনা। যমুনা যেমন প্রতি বছর ঘর-বাড়ি গ্রাস করছে তেমনি পলি জমিয়ে জেগে ওঠা চরে সোনার ফসল ফলাতেও সমান ভূমিকা রাখছে। তাই তো প্রতিবছর বর্ষা মৌসুষ শেষে যমুনা আর্শিবাদ হয়ে দেখা দেয় নদী পাড়ের মানুষের জীবনে। পলি পড়া চরের জমিতে গম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। যমুনা নদীতে ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর ফলে চরের পরিধি দিনদিন বেড়েই চলেছে। উপজেলার পয়েন্টের উত্তর ও দক্ষিণ পাশে বিশাল আকারে চর জেগে উঠেছে। এছাড়া যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, চৌহালী ও শাহজাদপুর চরাঞ্চলে এ বছর ব্যাপক হারে গম চাষ করেছেন কৃষকরা।

উপযুক্ত প্রশিক্ষণ এবং পুঁজি পেলে গম চাষের পরিধি আরও বিস্তৃতি লাভ করবে বলে কৃষকদের দাবি। চলতি বছর নদী পাড়ের কৃষকরা ব্যাপক হারে গমের আবাদ করেছেন। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা লোকসান পোষাতে মৌসুমের শুরুতেই আটঘাট বেঁধে চরের জমিতে নিরলস ভাবে শ্রম ব্যয় করেন। কৃষকের ঘামে আর শ্রমে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে গম ঘরে তুলতে শুরু করেছে কৃষকরা। কৃষকের ঘরে ঘরে পুরোদমে চলছে গম বাজারজাত করণের কাজ। গম চাষে অভাবনীয় সাফল্যের কারণে খুশির ঝিলিক স্পষ্ট হয়ে উঠেছে কৃষাণ-কৃষাণীর চোখে মুখে। কাজ শেষ হলে এখানে আরো বিশাল বিশাল চর জেগে উঠবে বলে টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। এই বাঁধের ফলে উপজেলা রক্ষার পাশাপাশি নদীতে বিলীন হওয়া চরগুলো আবার জেগে উঠতে শুরু করেছে। আর এসব চরে বাদাম, কালাই, গম, ধানসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ বেড়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

যমুনা নদীর চৌহালী উপজেলার আজিমুদ্দির মোড় এলাকার কৃষক নজরুল ইসলাম, খায়রুল আলম, রহিজ উদ্দিন জানান, গত ৭ থেকে ৮ বছর আগে যমুনা নদীর তার বাড়ি ঘর গ্রাস করেছে। নদী তাকে সর্বশান্ত করলেও গত ৫ বছর ধরে ঐ স্থানে চর জেগে উঠায় সেখানে তিনি এবার ৩ বিঘা জমিতে গমের আবাদ করেছেন।

বাউশা চরের কৃষক আবুল হোসেন ও বাবলু হোসেন জানান, বর্ষা মৌসুমে চরের জমিতে পানিতে ডুবে থাকে। তখন আমাদের অলস বলে থাকতে হয়। চর থেকে পানি চলে যাওয়ার সাথে সাথে এখানকার কৃষকরা গমের আবাদ করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। ইতোমধ্যে গম ঘরে তুলতে শুরু করেছে কৃষকরা। ভালো দাম পাওয়া গেলে বেশি লাভবান হওয়া যাবে।

উমারপুর চরের নৌকার মাঝি আব্দুল ছামাদ মুন্সী জানান, চরের জমিতে ফসল ফলিয়ে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। চরাঞ্চলের জমিতে ধান, টমেটো, গম, পাট, ডাল, সবজি, চিনাবাদাম, পেঁয়াজ, রসুন, তিলসহ নানা জাতের ফসল ফলিয়ে সিরাজগঞ্জসহ উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার হাট-বাজারে বিক্রি করেন। এতে অনেক কৃষক-কৃষাণীর ঘরে শান্তি এসেছে।

চৌহালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ জেরিন জানান, এ বছর যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন চর অঞ্চলে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। চৌহালীতে যমুনা নদীর চরেই সবচেয়ে বেশি গম চাষ হয়ে থাকে। এখানে আবাদ করতে খুব বেশি টাকার প্রয়োজন হয় না। পলি পড়া চরের জমিতে গম চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বর্ষা মৌসুমে চরগুলোতে পানিতে ডুবে থাকে। পানি চলে যাওয়ার সাথে সাথে চাষিরা নানান ধরনের ফসলের আবাদের দিকে ঝুঁকে পড়েন। ডুবে যাওয়া চরের জমিতে পলি পড়ায় ক্ষেতে সারের পরিমাণ কম লাগে। এজন্য যমুনার চরে গম চাষে বেশি খরচ হয় না। এতে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। 

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর