বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চলনবিলের নারী শ্রমিকদের কদর বাড়লেও বাড়েনি তাদের পারিশ্রমিক

চলনবিলের নারী শ্রমিকদের কদর বাড়লেও বাড়েনি তাদের পারিশ্রমিক

আদি কালে যে নারীরা কৃষি কাজের সূচনা করেছিল সেই নারীরা আজও সম্পৃক্ত আছে কৃষি কাজের সাথে। কেবল কৃষি কাজই নয় দিনের পর দিন বেড়েছে নারী শ্রমিকদের কর্ম পরিধি কিন্তু বাড়েনি তাদের পারিশ্রমিক। নানান অবহেলায়, পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে না থেকে স্বাবলম্বী হয়ে বেঁচে থাকার তাগিদেই নারীরা বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। চলনবিল এলাকার নারীরা কৃষি কাজের পাশাপাশি গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন (রাস্তা ঘাট নির্মাণ), ধানের চাতাল, হোটেল রেস্তোরা, ইটের ভাটা এমনকি নির্মাণ শ্রমিকের কাজ ও করছেন। এমন অনেক নারী আছেন যারা বিধবা অথবা স্বামী পরিত্যক্তা; তারা খেয়ে পরে বাঁচতেই বাধ্য হয়ে যুক্ত হচ্ছেন শ্রম বিক্রির সাথে। কিন্তু এ শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে তারা অবহেলার শিকার হচ্ছেন নানা রকমের। সেই সাথে উপযুক্ত পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারীরা।

চলনবিলের বুক চিরে বয়ে যাওয়া বনপাড়া- হাটিকুমরুল মহাসড়কের মহিষলুটি এলাকায় রাস্তার দুইপাশে শুটকীর চাতাল পেতেছে শুটকী মাছের ব্যবসায়ীরা। পুরুষ শ্রমিকের পাশাপাশি সমান তালে মাছ শুকানো ও বাছাইয়ের কাজ করছেন নারী শ্রমিকেরা। সেখানে কথা হয় তাড়াশ উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের মহেষরৌহালী গ্রামের আব্দুর রহমানের স্ত্রী শুটকী চাতালের নারী শ্রমিক রাহেলা খাতুন ও একই উপজেলার নৌলাকান্দি গ্রামের হানিফ আলীর স্ত্রী মাজেদা খাতুনের সাথে। তারা জানান, সংসারে বাড়তি স্বচ্ছলতার আশায় সকালে বাড়ির রান্না বান্না শেষ করে সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত কাজ করেন শুটকীর চাতালে। প্রতিদিনের পারিশ্রমিক হিসেবে পান মাত্র ১শ ৫০ টাকা। একজন পুরুষ শ্রমিকের পারিশ্রমিকের তিন ভাগের এক ভাগ দেয়া হয় মহিলা শ্রমিকদের ।

চলনবিলের ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা গ্রামের মেয়ে তাছলিমা খাতুন (৩৫)। গত ৭ বছর যাবত কাজ করেন শাহানগর এলাকায় অবস্থিত পদ্মা ব্রিক ফিল্ডস নামক ইট ভাটায়। স্বামীর নাম আব্দুর রাজ্জাক শেখ। স্বামীর সাথে ডিভোর্স না হলেও দীর্ঘদিন যাবত পৃথক থাকেন তারা। নয় বছরের ছেলেকে নিয়ে স্বামী পালিয়ে চলে যায়। বর্তমানে স্বামী রাজশাহী এলাকায় বসবাস করছেন। উপার্জনক্ষম কেউ না থাকায় ইটের ভাটায় কাজ করেন তাছলিমা খাতুন।

তিনি জানান, “পুরুষদের সাথে সমান তালে একই কাজ করলেও পুরুষ শ্রমিকেরা পারিশ্রমিক পাচ্ছেন ৩শ টাকা করে আর আমরা পাচ্ছি ১শ ৫০ টাকা।

একই ইটের ভাটায় কাজ করেন চাটমোহরের করকোলা গ্রামের মিনি খাতুন (২৫)। ৮ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল ভাঙ্গুড়া উপজেলার সিংগাড়ি গ্রামের মোসলেম উদ্দিনের সাথে। স্বামীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় দুই ছেলে সন্তান নিয়ে সাড়ে ৫ বছর যাবত পিত্রালয়ে থাকেন। স্বামী তার কোন খোঁজ খবর নেননা। ছেলেদের ভবিষ্যতের চিন্তায় এবং খেয়ে পরে দিন কাটাতে কাজ করেন ইটের ভাটায়। তিনি জানান, “সমান কাজ করলেও কেবল নারী বলে আমাদের কম পারিশ্রমিক দেয়া হয়।

এ ছাড়াও চলনবিল এলাকা থেকে বর্ষার পানি যখন নেমে যায় তখন বিস্তীর্ণ এলাকায় একই সাথে শুরু হয় ধান কাটা ও বিনা হালে রসুনের আবাদ। তখন শ্রমিক সংকট হওয়ায় নারী শ্রমিকের কদর বাড়ে। কদর বাড়লেও বাড়েনা তাদের পারিশ্রমিক। তাড়াশ উপজেলার কাটাবাড়ি গ্রামের জমিতে রসুন বপন করা নারী শ্রমিকেরা জানান, এসময় পুরুষদের ৪শ টাকা পারিশ্রমিক দেয়া হলেও আমাদের দেয়া হয় ২শ ৫০ টাকা। এসব নারী শ্রমিকের সাথে কথা বলার সময় তাদের চোখে মুখে ক্ষোভ আর দুঃখের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। তারা বার বার বলেন পুরুষের পাশাপাশি নারীরা সমান কাজ করলেও পারিশ্রমিকের বেলায় কেন এত বৈষম্য ?

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর