• মঙ্গলবার ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ||

  • আশ্বিন ১৮ ১৪৩০

  • || ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৫

গণবিয়েতে প্রেগনেন্সি টেস্ট, রিপোর্ট পজিটিভ আসায় বিয়ে ভাঙল ৫তরুণীর

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৩  

দরিদ্র পরিবারের মেয়েদের বিয়েতে সহায়তার করতে সরকারি উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল গণবিয়ের। কিন্তু সেখানে পাত্রীদের পরীক্ষা দিতে বাধ্য করা হয় তারা অন্তঃসত্ত্বা কিনা। এতে বেশ কয়েকজনের পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ রিপোর্ট আসার পরে তাদের বিয়ে বাতিল করা হয়।

শনিবার (২২ এপ্রিল) ভারতের মধ্যপ্রদেশে ঘটেছে এই অপ্রত্যাশিত ঘটনা। রাজ্যের দিন্দোরির গাদসারাই এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের ‘মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকা যোজনা’র অধীনে আয়োজন করা হয় এ গণবিয়ের। এদিকে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর নির্দেশ দিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস।

এনডিটিভি সূত্রের খবর, পাত্রীরা অন্তঃসত্ত্বা কিনা তা বোঝার জন্য সেখানেই তাদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো শুরু হয়। তাতে ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসাতেই তাদের বিয়ে বাতিল করা হয়।

যে পাঁচ তরুণীর টেস্ট পজিটিভ আসে তাদের একজন গণমাধ্যমকে জানান, তিনি একজনের বাগদত্তা। কিছুদিন ধরে তারা একসঙ্গেই বসবাস করছিলেন এবং গণবিয়ে অনুষ্ঠানে দু’জনের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। ক্ষুব্ধ এই পাত্রী বলেন, টেস্ট রেজাল্ট পজিটিভ আসায় আমাদের বিয়েটা ভণ্ডুল হয়ে গেলো।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ পাত্রীরা জানান, এটা মেয়েদের জন্য অপমানজনক, এছাড়া পরিবারের কাছেও ছোট করে দেয়া হল তাদের। এ ব্যাপারে দিনদোরি'র প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রমেশ মারাওয়ি জানান, সাধারণত বয়স বোঝা, রক্তশুন্যতার সিকল সেল অসুখ এবং শারীরিক সক্ষমতা বোঝার জন্য কিছু মেডিকেল টেস্ট করা হয়।

তিনি আরো জানান, কয়েকজন মেয়ের ক্ষেত্রে সন্দেহ হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাদের প্রেগনেন্সি টেস্ট করানো হয়েছিল। আমরা শুধু পরীক্ষা করিয়ে তার রিপোর্ট জমা দিয়ে দিই। অন্তঃসত্ত্বা বলে চিহ্নিত হওয়ায় ৫ পাত্রীকে গণবিবাহ থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্তটি সোশ্যাল জাস্টিস ডিপার্টমেন্ট নিয়েছে জানান তিনি।

এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে কংগ্রেস। কে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর নির্দেশ দিল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধী দল কংগ্রেস। দাবি, স্থানীয় প্রশাসন এবং রাজ্য সরকার ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেগনেন্সি টেস্ট করানোর মাধ্যমে মেয়েদের অপমান করতে চেয়েছে।

এই বিষয়ে টুইট করে মধ্যপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথ লিখেছেন, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চাই এই ঘটনাটা কি সত্যি? যদি সত্যিই এমনটা হয়ে থাকে তাহলে কার নির্দেশে মধ্যপ্রদেশের মেয়েদের এমন জঘন্য অপমান করা হল? মুখ্যমন্ত্রীর চোখে কি গরীব এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের মেয়েদের কোন সম্ভ্রম নেই? এমনিতেই নারীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ঘটনায় দেশের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সরকার।’ ঘটনার উচ্চপর্যায়ের তদন্ত করে দোষীদের যথোপযুক্ত শাস্তি দেওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী কন্যা বিবাহ/নিকা যোজনা। এই যোজনার অধীনে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবারের মেয়েদের বিয়ের জন্য ৫৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করে সরকার।

সূত্র: এনডিটিভি

আলোকিত সিরাজগঞ্জ
আলোকিত সিরাজগঞ্জ