বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

গাড়িকে বানালেন বাড়ি, জেদ করে ১৭ বছর ধরে থাকেন জঙ্গলে

গাড়িকে বানালেন বাড়ি, জেদ করে ১৭ বছর ধরে থাকেন জঙ্গলে

একটি অ্যাম্বাসাডর আর একটি সাইকেল। সম্পত্তি বলতে এইটুকুই। এই সম্বল নিয়েই ঘরে ফেরার স্বপ্ন দেখে ১৭ বছর জঙ্গলেই কাটিয়ে দিলেন তিনি। জঙ্গলের সাপ, চিতাবাঘ, বন্য শূকর, হাতিরাও যেন তাকে আপন করে নিয়েছে। ১৭ বছরে তাই বন্যপ্রাণীদের হামলার শিকার হতে হয়নি তাকে।

তিনি চন্দ্রশেখর। ৫৬ বছরের চন্দ্রশেখর ভারতের কর্নাটকের দক্ষিণ কন্নড় জেলার সুলিয়া তালুকের অ্যাডটেল গ্রামের বাসিন্দা। ওই গ্রামে এখন অবশ্য তিনি থাকেন না। গ্রামের এক পাশে থাকা জঙ্গলই তার ঠিকানা। নিজের শখের অ্যাম্বাসাডর ও সাইকেল নিয়ে ওই জঙ্গলেই ঘর বেঁধেছেন তিনি।

চন্দ্রশেখরকে এক ঝলক দেখে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে হতেই পারে। তিনি কিন্তু মানসিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। জেদের কারণে সব থেকেও সর্বহারাদের মতো জীবন বেছে নিয়েছেন তিনি। তার জেদ নিজের চাষের জমি ফিরে পাওয়া।

ওই গ্রামে দেড় একরের একটি চাষের জমি ছিল চন্দ্রশেখরের। জমিতে সুপারি চাষ করতেন তিনি। ২০০৩ সালে চাষের জন্য ব্যাংক থেকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। কিন্তু সময়মত শোধ করতে পারেননি। এরপরই তার জমি বাজেয়াপ্ত করে ব্যাংক। দুঃখে, রাগে সে দিনই ঘর ছেড়েছিলেন চন্দ্রশেখর। নিজের অ্যাম্বাসাডর চালিয়ে বোনের বাড়ি গিয়ে উঠেছিলেন।

বেশি দিন সেখানেও ঠাঁই হয়নি তার। তারপরই গ্রামের পাশে জঙ্গলে আশ্রয় নেন। একটি কালো প্লাস্টিক দিয়ে অ্যাম্বাসাডরের ওপর ছাউনি করেন। কখনো গাড়ির ভিতরে আবার কখনো গাড়ির উপরে ঘুমিয়ে রাত কাটিয়ে দেন তিনি। সঙ্গে রয়েছে তার একটি সাইকেলও।

এই জঙ্গলে বিষধর সাপ, চিতাবাঘ, বাইসন, বুনো শূকর, হাতি সবই রয়েছে। কিন্তু কখনো চন্দ্রশেখরর ওপর হামলা করেনি তারা। এমনকি জঙ্গলে এভাবে আশ্রয় নেওয়া বেআইনি হওয়া সত্ত্বেও বন দফতর তাকে কিছু বলে না। কারণ, চন্দ্রশেখর কোনো প্রাকৃতিক সম্পদ নষ্ট করেন না। পেট চালানোর জন্য জঙ্গলের শুকিয়ে যাওয়া লতা দিয়ে ঝোড়া বানান। পাশের গ্রামের বাজারে সেই ঝোড়া বিক্রি করে চাল, ডাল, সবজি কিনে আনেন তিনি।

কখনো ঝরে পড়া ফল খেয়ে নেন। আজ পর্যন্ত গাছের একটি পাতাও ছেড়েননি তিনি। কোনো প্রাণীকে হত্যাও করেননি। বন দফতর তাই তাকে জঙ্গলের রক্ষক বলেই মনে করে।

১৭ বছরেও নিজের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হননি তিনি। জমির কাগজপত্র সব এখনো নিজের কাছে গুছিয়ে রেখেছেন। ঝোড়া বেচে অল্প অল্প করে টাকা জমাচ্ছেন। জীবনের একটিই লক্ষ্য, জমি এক দিন ফেরাতেই হবে।

চন্দ্রশেখর কারোর সঙ্গে মেশেন না। দিনভর শুকনো লতা জোগাড় করে ঝোড়া বানানোই কাজ তার। বাইরের সমাজের সঙ্গে একপ্রকার সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। চন্দ্রশেখরকে কিন্তু এক নামে আশপাশের গ্রামের সকলেই চেনেন। তার কাছে পৌঁছতে হলে জঙ্গলের মধ্যে দিয়ে পায়ে হাঁটা পথে তিন-চার কিলোমিটার যেতে হয়। দূর থেকে কালো প্লাস্টিকের ছাউনি চোখে পড়বে তারপরই।

চন্দ্রশেখরের কোনো আধার কার্ড নেই। কিন্তু পরিচিতির জন্যই পাশের গ্রামের পঞ্চায়েত থেকে তাকে করোনা টিকা দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীরা জঙ্গলে গিয়ে তাকে টিকা দিয়ে দিয়েছিলেন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর