গরুর মাংসের যেমন ক্ষতিকর দিক আছে, তেমনি এতে উপকারও অনেক। গরুর মাংসে যতো পুষ্টিগুণ আছে সেগুলো অন্য কোন খাবার থেকে পাওয়া কঠিন মত বিশেষজ্ঞদের। তবে গরুর মাংস খেতে হবে পরিমিত।
পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম হাসিন জানিয়েছেন, মানুষের ওজনের ওপর প্রোটিনের চাহিদা নির্ভর করে। একজন মানুষের আদর্শ ওজন ৫০ কেজি হলে তার ৫০ গ্রামের মতো প্রোটিন প্রয়োজন। তবে তার কিডনি জটিলতা থাকলে তিনি প্রতিদিন ২৫ গ্রাম প্রোটিন খাবেন।
আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালীন কিংবা গর্ভবতী অবস্থায় এই পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে। অর্থাৎ আদর্শ ওজন ৫০ কেজি হলে তারা ১০০ গ্রাম পর্যন্ত প্রোটিন খেতে পারবেন।
যাদের ওজন আদর্শ ওজনের চাইতে কম তাদেরও বেশি বেশি প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। তবে কারোই প্রতিদিন ৭০ গ্রামের বেশি এবং সপ্তাহে ৫০০ গ্রামের বেশি প্রোটিন খাওয়া উচিত না বলে ব্রিটেনের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে।
পুষ্টিবিদ তাসনিম হাসিনের মতে, গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হল সপ্তাহে দুই দিন, মোট তিন থেকে পাঁচ বেলা খাওয়া। এই দুই দিনে আপনি মোট ১৫৪ গ্রাম গরুর মাংস খেতে পারবেন। সপ্তাহের ওই দুই দিন প্রতি বেলায় আপনার পাতে মাংসের পরিমাণ হবে ২/৩ টুকরো।
অতিরিক্ত গরুর মাংস শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। কারণ গরুর মাংসে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোডিয়াম, যা রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়। আর উচ্চ রক্তচাপ থেকে হৃদরোগ, স্ট্রোক ও কিডনি জটিলতা দেখা দিতে পারে।
গরুর মাংসে যে কোলেস্টেরল থাকে সেটি বেশি বেড়ে গেলে হার্টের শিরায় জমে রক্ত জমাট বাঁধিয়ে দেয়। এতে হার্টে পর্যাপ্ত রক্ত চলাচল করতে পারে না, অক্সিজেনের অভাব হয়। যার কারণে হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বহুগুণে বেড়ে যায়।
এছাড়া গরুর মাংস বেশি খেলে টাইপ-টু ডায়াবেটিস, মুটিয়ে যাওয়া, আরথ্রাইটিস, কোষ্ঠকাঠিন্য, ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। তাই গরুর মাংস যদি খেতেই হয় তার আগে বিশেষজ্ঞের থেকে জেনে নিন আপনার জন্য কতোটুকু গরুর মাংস প্রযোজ্য।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ