রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

সোনাপুর-জোরারগঞ্জ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার পথে

সোনাপুর-জোরারগঞ্জ সড়কের কাজ শেষ হওয়ার পথে

আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগর, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারকে ঘিরে মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ-সোনাপুর সড়কটি কানেক্টিভিটি সড়কে রূপ নিচ্ছে। ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়কের নির্মাণকাজ এখন প্রায়ই শেষের দিকে। দীর্ঘতর মুহুরী সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে ২০২৩ সালের মাঝামাঝিতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হবে যোগাযোগের নবদিগন্ত।

জানা গেছে, ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক, রামগড় স্থল বন্দর (বাংলাদেশ-ভারত ট্রানজিট) সড়ক এবং ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরবিচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি সৃষ্টি করতে সড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত করার মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। বিশেষ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগর, বন্দরনগর ও পর্যটন কেন্দ্র কক্সবাজারকে বিবেচনায় নিয়ে জোরারগঞ্জ-সোনাপুর সড়কটি ১৮ ফুট থেকে পর্যায়ক্রমে ৩৬ ফুট প্রশস্ত করবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপদ বিভাগ।

জোরারগঞ্জ-সোনাপুর সড়কটি ঘুরে দেখা গেছে, ফেনীর সোনাগাজী থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর পর্যন্ত সড়কটি সম্পূর্ণ প্রস্তুত। মুহুরী সেতুর কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। ফেনী নদীর ওপর নির্মাণাধীন মুহুরী সেতুর দু’পাড়ে ভাঙ্গন রোধে ব্যবহারের জন্য ব্লক তৈরি করে স্তরে স্তরে রাখা হয়েছে। সেতুটির কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামের মীরসরাই অংশে মুহুরী প্রজেক্ট বাজার থেকে জোরারগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটি প্রশস্তসহ পুনঃকার্পেটিংয়ের কাজ শুরু হবে। সড়কটি চালু হলে এই অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্যসামগ্রী মাত্র দুই থেকে আড়াই ঘণ্টায় চট্টগ্রাম বন্দরে সরবরাহ করাসহ চার লক্ষাধিক অধিবাসীর বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

সওজ সূত্রে আরও জানা গেছে, ষাটের দশকে এ অঞ্চলের জানমাল রক্ষাকল্পে জোরারগঞ্জ-সোনাগাজী-সোনাপুর বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে এটিকে আপদকালীন বিকল্প সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। অবশেষে এবার সড়কটি পূর্ণতা লাভ করতে যাচ্ছে। বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রামের জোরারগঞ্জ থেকে নোয়াখালীর সোনাপুর পর্যন্ত ৫৬ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণকাজ এখন প্রায় শেষের দিকে। ফেনী নদীর ওপর মুহুরী রেগুলেটরের পূর্ব পার্শ্বে ৫৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩শ’ মিটার দৈর্ঘ্যরে বিকল্প মুহুরী সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে। মুহুরী সেতুর অবশিষ্ট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হলে ২০২৩ সালের দিকে এই সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। সড়কটি চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম জেলার সঙ্গে নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার প্রায় ৫০ কিলোমিটার এবং ফেনী জেলার সোনাগাজী উপজেলা থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে আসবে। এতে করে সড়কপথে সময় বাঁচবে দুই থেকে তিনঘণ্টা।

সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী বিনয় কুমার পাল বলেন, চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাইয়ের জোরারগঞ্জ থেকে নোয়াখালী সোনাপুর সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ, সেতু নির্মাণসহ ১৮৬ কোটি টাকার প্রাথমিক বরাদ্দ থাকলেও ইতোমধ্যে দুই দফা বাজেট বাড়িয়ে ২৮৬ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। ৫৬ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে সাড়ে ১০কিলোমিটার ফেনীর সোনাগাজী অংশ, সাড়ে ৩৮ কিলোমিটার নোয়াখালীর অংশের কাজ শেষ হয়েছে। মুহুরী সেতুর কাজ শেষ হলে জোরারগঞ্জের অংশের বাকি ৭ কিলোমিটার কাজ সম্পন্ন করে ২০২৩ সালে এই সড়কটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

সড়ক বিভাগের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, দুইলেন বিশিষ্ট সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার হবে। ভবিষ্যতে এই সড়কটি চারলেনে রূপান্তরিত করাসহ দেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশ থেকে চাঁদপুর, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে নিরবচ্ছিন্নভাবে কানেক্টিভিটি সড়কের মাধ্যমে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এতে করে অর্থনৈতিক শিল্পনগর, বন্দর ও পর্যটনকে কেন্দ্র করে স্বল্প সময়ে ও স্বল্প ব্যয়ে যোগাযোগের ক্ষেত্রে এই সড়কটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ: