চীন সরকারের আমন্ত্রণে পাচঁ দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে মিয়ানমার সরকার যেন দ্রুত ফেরত নেয় সে ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করতে চীনকে অনুরোধ জানাবেন তিনি।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যকরে চীনের সমর্থন আদায়ই হল এই সফরের মূল লক্ষ্য। বাংলাদেশ সরকার চায় চীন মিয়ানমারের ওপর তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কার্যকরে শক্তিশালী ভূমিকা রাখুক।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী একে এম আব্দুল মোমেন শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন, আমরা আশা করছি প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রসঙ্গটি গুরুত্ব পাবে। এ বিষয়টি নিয়ে উন্নতি দেখার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।
আশাবাদ ব্যক্ত করায় এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, চীন বারবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে মিয়ানমারকে চাপ দিতে পারবে না জানানোর পরও আপনি কেন এতো আশাবাদী। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, আমরা তাদেরকে বলবো রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের বাসিন্দা। তারা নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। তাদেরকে অস্থায়ী ভাবে আশ্রয় দিয়েছি আমরা। এত বিশাল সংখ্যক মানুষ দীর্ঘ দিন ধরে শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করলে তারা আন্তর্জাতিক ইসলামপন্থী মৌলবাদীদের লক্ষ্যে পরিণত হতে পারে।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো নৃশংস অভিযান থেকে বাচঁতে সাত লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও উগ্রপন্থী বৌদ্ধদের হামলা থেকে বাচঁতে বাংলাদেশে সাড়ে তিন লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছিল।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গারা অভিযোগ করেছে মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে, ধর্ষণ করেছে। তাদের ঘর-বাড়িতে অগিসংযোগ করেছে। জাতিসংঘ তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে। এ কারণে তারা ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও মানবাধিকার সংগঠন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ওপর জাতিগত নির্মূলের অভিযোগ এনেছে। তবে দেশটির সরকার সেনাবাহিনীর ওপর আনা সব ধরনের অভিযোগকে নাকচ করে দিয়েছে।
এছাড়া দেশটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াতেও নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করার মাধ্যমে বিলম্ব করে আসছে। এ প্রসঙ্গে জাতিসংঘের মিয়ানমার বিষয়ক দূত ক্রিস্টিন শ্রোয়ানার বার্গেনার সম্প্রতি মিয়ানমারের বিরুদ্ধে হুশিঁয়ারী জানিয়ে বলেছেন, মিয়ানমার সরকার যদি তাদের দেশের নাগরিক রোহিঙ্গা মুসলিমদের ফিরিয়ে নিতে কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করে সেক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ