• শনিবার   ০১ এপ্রিল ২০২৩ ||

  • চৈত্র ১৮ ১৪২৯

  • || ১০ রমজান ১৪৪৪

রেমিটেন্সের ইতিহাসে নতুন রেকর্ড

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

প্রকাশিত: ২৫ জুন ২০১৯  

প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স অতীতের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এখন পর্যন্ত দেশে প্রবাসীদের পাঠানো বৈদেশিক মুদ্রা বা রেমিট্যান্স ১৬শ’ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে এক অর্থবছরে বাংলাদেশে কখনই ১৬ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসেনি। সর্বশেষ ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স আসে, যা ছিল এক বছরে পাঠানো রেমিন্টেন্সের অঙ্কে সর্বোচ্চ।

সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক বিদায়ী অর্থবছরের শেষ মাসের ২১ দিনের রেমিটেন্সের তথ্য প্রকাশ করেছে।সেখানে দেখা গেছে, জুনের ১ থেকে ২১ জুন তারিখ পর্যন্ত দেশে মোট ৯৭ কোটি ২৯ লাখ রেমিটেন্স এসেছে।

আর ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাসে অর্থাৎ জুলাই-মে সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৫০৫ কোটি ৯০ লাখ (১৫.০৫ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছে। সে হিসেবে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ১১ মাস ২১ দিনে প্রবাসীরা এক হাজার ৬০৩ কোটি ২০ লাখ ডলার (১৬.০৩ বিলিয়ন) রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম আশা করছেন, অর্থবছরের বাকি এক সপ্তাহে আরও ২৫ থেকে ৩০ কোটি ডলার রেমিটেন্স আসবে। ফলে এই অর্থবছরে এবার রেমিটেন্স ১৬ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকবে।

প্রবাসীরা রোজা ও ঈদকে সামনে রেখে দেশে বেশি অর্থ পাঠানোয় মে মাসে ১৭৫ কোটি ৫৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছে: যা ছিল মাসের হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সর্বোচ্চ রেমিটেন্স এসেছিল ১৫৯ কোটি ৭২ লাখ ডলার।

তিনি বলেন, “দেশে এমনিতেই রেমিটেন্স প্রবাহ ভালো ছিল। রোজা এবং ঈদকে সামনে রেখে প্রবাসীরা প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে পরিবার-পরিজনের কাছে বেশি বেশি টাকা পাঠিয়েছেন। তবে ঈদের পরও এই রেমিটেন্স প্রবাহ কমে নি।”

আর রেমিটেন্সে একটি ভালো বছর পার হতে চলেছে বলে তিনি সন্তোষও প্রকাশ করেন। চলতি অর্থবছরের ১১ মাসে (জুলাই-মে) রেমিটেন্স প্রবাহে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আশা করা হচ্ছে, এই অর্থবছর শেষেও প্রবৃদ্ধির এই ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে।

তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা গত ২০১৭-১৮ অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ (১৪.৯৮ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স পাঠিয়েছিলেন। যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ বেশি ছিল। রিজার্ভ ৩২.০২ বিলিয়ন ডলার

একদিকে যেমন দেশে রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে, এর সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশি মুদ্রার সঞ্চয়নও (রিজার্ভ) সন্তোষজনক অবস্থায় রয়েছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের দেশে পাঠানো রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৩২ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার।

এর আগে মে মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মার্চ-এপ্রিল মেয়াদের ১২৪ কোটি ১০ লাখ ডলার আমদানি বিল পরিশোধের পর রিজার্ভ ৩১ বিলিয়ন ডলারের নীচে চলে আসে। তবে রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়ায় তা আবার ৩২ বিলিয়ন ডলারের উপরে অবস্থান করেছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জুলাই মাসে আবারও আকুর দেনা পরিশোধ করতে হবে। তার আগ রিজার্ভ আরও বাড়বে। প্রসঙ্গত, বর্তমানে মোট নয়টি দেশ- বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মিয়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ আকুর সদস্য। বাংলাদেশ এই দেশগুলো থেকে যে সব পণ্য আমদানি করে , আকুর মাধ্যমে তার বিল দুই মাস পর পর পরিশোধ করতে হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা মনে করছেন, স্থানীয় বাজারে ডলারের তেজিভাব এবং হুন্ডি ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নানা পদক্ষেপের কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ বেড়েছে।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ
আলোকিত সিরাজগঞ্জ