ভুটান ও বাংলাদেশের সম্পর্কে নতুন মাত্রা যোগ করার প্রত্যয় নিয়ে গত শুক্রবার তিন দিনের সরকারি সফরে গত ১২ এপ্রিল শুক্রবার বাংলাদেশে এসেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে উক্ত সফরে বাংলাদেশে এসেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর এই বাংলাদেশ সফরে বেশ কয়েকটি চুক্তি সম্পন্নসহ দুই দেশের বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।
ইতোমধ্যে ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরের প্রথম দিনে বাংলাদেশ ও ভুটানের মধ্যে দুটি চুক্তি সই হয়েছে। এর একটি হলো বাণিজ্য নবায়ন চুক্তি। অপরটি প্লট বরাদ্দ সংক্রান্ত চুক্তি। এছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে দুই দেশের মধ্যে বিদ্যুত, ট্রানজিট, বাণিজ্য, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সংস্কৃতি নিয়ে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আলোচনা হয়।
বাংলাদেশ এবং ভুটানের মধ্যে প্রথমদিনের আনুষ্ঠানিক আলোচনায় ভুটান বাংলাদেশের বাজারে দেশটির ১৬টি পণ্যের শুল্ক এবং কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে আর বাংলাদেশ চেয়েছে তাদের বাজারে ১০টি বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত প্রবেশাধিকার।
এছাড়া বাংলাদেশ-ভুটান বাণিজ্য চুক্তি আরও ৫ বছরের জন্য নবায়ন করা হয়েছে। এবার চুক্তি নবায়নে নতুন কয়েকটি বিষয় যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যুগ্মসচিব পর্যায়ে বৈঠকের জন্য জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন, বাণিজ্যবিষয়ক তথ্যবিনিময়, উভয় দেশে বাণিজ্যমেলার আয়োজন, বাণিজ্য সংগঠনের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন ও বাণিজ্য গবেষণা চুক্তির বিধান সংশোধনের সুযোগ। বাংলাদেশের সঙ্গে ভুটানের পাঁচ বছর মেয়াদী বাণিজ্য চুক্তি ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ভুটান সফরে গেলে ওই চুক্তি সর্বশেষ নবায়ন হয়, যার মেয়াদ শেষ হয় চলতি বছরের নবেম্বর মাসে। চুক্তির আওতায় ভুটান থেকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তাজা ফল, নির্মাণসামগ্রী, সিমেন্টের কাঁচামাল, মসলাসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানির সুযোগ পাবেন। আর বাংলাদেশ থেকে ভুটানের ব্যবসায়ীরা তৈরি পোশাক, মেলামাইন সামগ্রী, ফলের রস, ওষুধ ও প্রসাধন সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি করতে পারবেন।
চুক্তির আওতায় বাংলাদেশ ও ভুটান আন্তঃবাণিজ্যে ৯০টি পণ্য রফতানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। এই চুক্তিতে সই করেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও ভুটানের অর্থমন্ত্রী নরবু ওয়াংচুক। এর আগে বাংলাদেশ ও ভুটান ৭৪টি পণ্যের শুল্কমুক্ত রফতানি সুবিধা পেয়ে আসছিল। চুক্তি নবায়নের মধ্যে দিয়ে এই পণ্যের সংখ্যা ৯০টিতে উন্নীত করা হয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি বাংলাদেশের উদ্বৃত্ত ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ কেনার বিষয়ে আগ্রহ জানিয়েছে ভুটান। পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রয়োজনীয় বড় পাথর বা বোল্ডার রফতানির বিষয়েও আগ্রহ রয়েছে তাদের। রবিবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী। তিন দিনের সফর শেষে আগামীকাল সোমবার ফিরে যাওয়ার কথা রয়েছে তাঁর।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ