শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জেনেভায় বাংলাদেশময় ডব্লিউএসআইএস

জেনেভায় বাংলাদেশময় ডব্লিউএসআইএস

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন বা আইটিইউয়ের সদরদপ্তরে বসে যখন এই লেখা লিখছি তখন আমি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এক সময়ের সাক্ষী।বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘের বহুমাত্রিক অংশিদারদের প্ল্যাটফর্ম ডব্লিউএসআইএস ফোরাম-১৯ এর চেয়ারম্যান হিসেবে বাংলাদেশের ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আইটিইউয়ের সদরপ্তরে।কো-চেয়ার হিসেবে আইটিইউয়ের মহাসচিব হাউলিন ঝাউ বাংলাদেশী মন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন এভাবে যে, ‘আপনাকে চেয়ারম্যান হিসেবে পেয়ে এবারের ফোরাম সম্মানিত।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে জাতিসংঘের এ রকম বড় কোনো সামিটের চেয়ারম্যান হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এটি বাংলাদেশের সম্মান অনেক উজ্জ্বল করছে এবং সমস্ত সদস্য দেশগুলোর কাছে এই বিষয়টা পৌঁছে গেছে।

হাউলিন ঝাউয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের শুরুতেই বলা হয়, বাংলাদেশের এই চেয়ারম্যানশিপকে তারা বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন। ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ যে উচ্চপর্যায়ে পৌঁছেছে সেখান হতে অনেকেরই অনেক কিছু শেখার আছে।স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ওই বৈঠকে মোস্তাফা জব্বার বাংলাদেশের ডিজিটাল অগ্রগতির বেশ কিছু সিগনিফিকেন্ট বিষয় উল্লেখ করেন। এরমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম দুটি ক্ষেত্রই ছিল।এসএমই, স্টার্টআপ কোম্পানিদের প্লার্টফর্ম তৈরিতে বাংলাদেশে কীভাবে এগিয়ে গেছে সেগুলো আইটিউয়ের কাছে আপডেট করেন তিনি। 

কথা বলেছেন বাংলাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে কানেক্টিভিটি নিয়েও।এছাড়া ই-কমার্সের বিষয়ে বর্তমান অগ্রগতি তুলে ধরেন। বাংলাদেশ পোস্ট অফিস যে ট্রেডিশনাল হতে ডিজিটাল সিস্টেমে এসেছে, ই-কমার্স, ডিজিটাল লেনদেনে কীভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সেগুলো উল্লেখ করেছেন মন্ত্রী।আইটিইউ মহাসচিব তখন বলেন, বাংলাদেশে এখন পৃথিবীর বহু দেশের কাছে রোল মডেল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীরা যারা এই ফোরামে যোগ দিতে এসেছেন তাদের বলবেন বাংলাদেশকে অনুসরণ করার জন্য।মোস্তাফা জব্বার আইটিউ মহাসচিবকে জানান এই জায়গায় কোলাবরেশেনের জন্য বাংলাদেশ সব সময় তৈরি আছে।


বৈঠকে ছিলেন বিটিআরসির চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক, তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এন এম জিয়াউল আলম, জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও সুইজারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. শামীম আহসান। বৈঠকে অংশ নেয়ার সুযোগ হয়েছিল আমারও।আইটিইউয়ের সদরদপ্তরে বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর জন্য একটি চেম্বার দেয়া হয়েছে। সেখানে মন্ত্রী সকাল হতে অফিস করেছেন। এখানে তিনি কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। আইটিইউ হতে মন্ত্রীর জন্যে এখানে ডেজিকনেটেড টিমও রয়েছে।দ্বিপক্ষিক বৈঠকের পরপরই ডব্লিউএসআইএসের এক্সিবিশন উদ্বোধন করেন ফোরামের চেয়ারম্যান মোস্তাফা জব্বার এবং কো-চেয়ারম্যান আইটিইউ মহাসচিব হাউলিন ঝাউ।এই এক্সিবিশনে বিভিন্ন দেশের সার্ভিসগুলো তুলে ধরা হয়েছে। এরমধ্যে বেশ ইনোভেটিভ কিছু আইডিয়া ছিল। এক্সিবিশন উদ্বোধনে শিশু কিশোরদের নিয়ে অনুষ্ঠান হয়েছে। 

এছাড়া আজ হ্যাকাথনও অনুষ্ঠিত হয়েছে।জেনেভায় এই ফোরামে যোগ দিতে এসেছেন তথ্যপ্রযু্ক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনিও আইটিইউ মহাসচিবের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন।প্রতিনিধি দলে আছেন টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপসচিব উর্মি তামান্না, মন্ত্রীর একান্ত সচিব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান, বিটিআরসির সচিব জহিরুল ইসলাম, মহাপরিচালক (এসএস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ বি এম হুমায়ুন কবীর, পরিচালক (এসএস) লে: কর্নেল মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, বিআইএমইই ঢাকার কো-ফাউন্ডার বিজয় জব্বার এবং আমাদের গ্রাম আইসিসি ফর ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের পরিচালক রেজা সেলিম।মূল ফোরাম শুরু হবে মঙ্গলবার। সেখানে মিনিস্ট্রিয়াল প্রোগ্রাম রয়েছে। মোট ১৪টি উচ্চ পর্যায়ের সেশন অনুষ্ঠিত হবে।এবার ৩ হাজারের বেশি অংশগ্রহণকারী এসেছেন এই ফোরামে। ১৫০ টির বেশি দেশের প্রতিনিধিরা এসেছেন। ১০০ এর বেশি মন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা যোগ দিয়েছেন। এছাড়া তথ্যপ্রযুক্তির বাইরেও শিক্ষা-স্বাস্থ্যসহ অন্য বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ২০ জনের বেশি মন্ত্রী এসেছেন।৫০০ এর বেশি উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। ২৫০ এর বেশি ওয়ার্কশপ ও সেশন হচ্ছে। এক্সিজিবিশন থাকছে ৩৫ টিরও বেশি। একটি বিষয় উল্লেখ করার মতো যে, এবার ফোরামে জেন্ডার ব্যালেন্স করা হয়েছে, মানে ৫০ শতাংশ নারী অংশগ্রহণকারী রয়েছেন।ফোরাম হতে সম্মানজনক বেশ কিছু প্রাইজ দেয়া হয়। এরমধ্যে ১৮ টি ডব্লিইএসআইএস উইনার প্রাইজ ও ৭২ টি চ্যাম্পিয়ন প্রাইজ। সেখানে বাংলাদেশ পাঁচটি পুরষ্কার পাচ্ছে। এরমধ্যে সরকারি তিনটি এবং বেসরকারি ২টি।আজ হতে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ফোরামের ট্র্যাক অ্যান্ড হ্যাকাথন হবে আইটিইউ টাওয়ারে। আর হাইলেভেল ট্র্যাক অ্যান্ড মিনিস্ট্রিরিয়াল রাউন্ড টেবিলগুলো হবে জাতিসংগের সদরদপ্তরে।

আপনারা জানেন ডব্লিউএসআইএস ফোরাম যৌথভাবে আয়োজন করে থাকে আইটিইউ, ইউনেস্কো, ইউএনডিপি এবং ইউএনসিটিএডি।এই ফোরাম বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক উন্নয়নকেন্দ্রিক কমিউনিটির সম্মিলন। এর মধ্যে দশম বর্ষপূর্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে এবারে এই ফোরাম হচ্ছে। তাই একে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলা হচ্ছে। যার মূল প্রতিপাদ্য হলো, ‘টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনের জন্য তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি।’দ্যা ওয়ার্ল্ড সামিট অন দ্যা ইনফরমেশন সোসাইটির বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়নে এর সঙ্গে ঘনিষ্টভাবে কাজ করে জাতিসংঘের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা। এরমধ্যে রয়েছে ইউএনডিইএসএ, এফএও, ইউএনইপি, ডব্লিউএইচও, ইউএন ওমেন, ডব্লুআইপিও, ডব্লিউএফপি, আইএলও, ডব্লুএমও, আইটিসি, ইউপিইউ, ইউএনওডিসি, ইউএনওডিসি, ইউএনআইটিএআর, ইউনিসেফ এবং জাতিসংঘের আঞ্চলিক কমিশন।এই ফোরামে অংশগ্রহণকারীরা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উদ্ভাবনী সম্ভাবনাগুলো নিয়ে জ্ঞান আহরণ, পারস্পরিক তথ্য বিনিময় ও সহযোগিতায় পথ তৈরি করে নেয়।ফোরামটি জেনেভা প্ল্যান অব অ্যাকশনের মধ্য দিয়ে সোসাইটির সব অংশিদারদের একই রকম তথ্যভিত্তিক সমাজের প্লাটফর্ম তৈরি করে দেয়।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই