মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

শক্তি-সাহসের প্রতিচ্ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

শক্তি-সাহসের প্রতিচ্ছবি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ওয়াশিংটন পোস্টে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শক্তি-সাহসের প্রতিচ্ছবি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া নিবন্ধে নারীর ক্ষমতায়ন, বাংলাদেশের অভাবনীয় অগ্রগতি, শিক্ষার প্রসার ও দারিদ্র্য নিরসনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

'দিস প্রাইম মিনিস্টার লাফড অ্যাট দ্য মিম শি ইনস্পায়ার্ড: #ডিসপাইটবিংএওমেন' শিরোনামে গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদপত্র দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাজনৈতিক জীবনের প্রশংসা করেন কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক।  

সম্প্রতি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিউইয়র্কে অধিবেশন শেষে প্রধানমন্ত্রী উত্তর ভার্জিনিয়ায় যান। সেখানে একটি হোটেলে অবস্থানকালে পেটুলাকে সাক্ষাৎকার দেন তিনি। 

ওই নিবন্ধে বলা হয়, বহু মানুষের ভিড়ে বাবার কাঁধে চড়ে উঁকি দিচ্ছিল ৬ বছরের শিশু জয়া। রিটজ কার্লটনের বলরুমে কালো কোট পরা অনেক মানুষের ভিড়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দেখতে এসেছে সে। 'আমি চেয়েছিলাম, সে এক নজর প্রধানমন্ত্রীকে দেখুক'- বলছিলেন জয়ার বাবা আব্দুল্লাহ নিয়ামি। উত্তর ভার্জিনিয়ায় গেল সপ্তাহে এই দৃশ্য দেখার সুযোগ পায় আমেরিকা, যেখানে একজন নারী সরকার প্রধানকে দেখতে ভিড় জমান অনেকে।

রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগদানের পর নর্দান ভার্জিনিয়ায় থাকার সময় এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নিবন্ধে বলা হয়, শক্তি-সাহসের প্রতিচ্ছবি তিনি। রাশিয়ার জনসংখ্যা চেয়ে বেশি মানুষের একটি দেশকে দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্ব দেওয়া এবং ২০ বারের বেশি হত্যা চেষ্টার শিকার হওয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু একজন সরকারপ্রধানই নন, এর পাশাপাশি একজন দাদীও। চলতি বছর ৭৬তম জন্মদিন উদযাপন করছেন তিনি। লন্ডন শহরের পাশে এক শহরে ছেলে ও নাতি-নাতনীদের সঙ্গে জন্মদিন উদযাপন করবেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী যেমন, তেমনই একজন দাদীও। আমি আমার নাতি-নাতনীদের জন্য রান্না করি। চিকেন বিরিয়ানি বানাই। আর আমার ছেলের বাসায় এ জন্য আলাদা রান্নাঘরও আছে।

শেখ হাসিনার সফরকালে তার কাছ থেকেও এসব কথা শুনতে পাই। 

কলামিস্ট পেটুলা ডভোরাক লিখেছেন, একটি চমৎকার সুন্দর কক্ষে ওই সাক্ষাৎকারের সময় সঙ্গে একজন অনুবাদক ও স্টাফ ছিলেন। এ ছাড়া দেয়ালে ছিল তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি বড় ছবি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরিবারের ১৭ সদস্যসহ তাকে হত্যা করা হয়। তবে পিতার রাজনৈতিক আদর্শকে ধারন করে শেখ হাসিনা তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

সম্প্রতি জাতিসংঘ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর জন্য সহযোগিতা চান। তিনি বলেন, 'শরণার্থী জীবন ভালো নয়। তারা নিজের দেশে ফিরতে চায়।'

যুক্তরাষ্ট্রেও অভিবাসীদের নিয়ে সংকট চলছে- এমন প্রসঙ্গ তুললে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে আমেরিকার অভিবাসীদের তুলনা করা চলে না। তাদের প্রচুর জমি আছে। ফাঁকা জায়গা আছে। তাদের তো অভিবাসীদের নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। আর বাংলাদেশ বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর দেশ। কিন্তু আমাদের জমি কম। আমরা যুক্তরাষ্ট্রের একটা রাজ্যের সমান। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক নানা তদন্তের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। এছাড়া শেখ হাসিনা তার দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাস দমনে কঠোরতার জন্য পরিচিত। ২০১৫ সালে সন্ত্রাস দমনে কঠোর অবস্থানের কারণে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছ থেকেও শুভেচ্ছা পান।

সম্প্রতি 'হুম! ছেলে' শিরোনামে একটি 'মিম পোস্ট' ছড়িয়ে পড়ে। এটিকে ইতিবাচক হিসেবেই নিয়েছেন অনেকে।

শেখ হাসিনা এক বক্তব্যে বলেছিলেন, 'নারীরা পুরুষের চেয়ে ভালো।' এ প্রসঙ্গ তুললে মুচকি হাসেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, বাংলাদেশের দারিদ্র্য বিমোচন ও শিক্ষার সংগ্রামে নারীরা যেসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেন তা সত্যিই বড় বিষয়। তাদের স্থবিরতা দেশের অগ্রগতিকে থামিয়ে দেবে।

গত এক দশকে শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি, আবাসন সুবিধা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন 'দেশে এখন কুঁড়েঘর নেই। সাধারণ কাঠামোর ঘরও এখন ঢেউ টিনের ছাঁদ ও ইটের দেয়ালের ঘর। আর সেগুলোও দেওয়া হয়েছে নারীদের নামে। ফলে কোনো পরিবার যদি আলাদা হয়ে যায়। তাহলেও ঘরটি কিন্তু নারীই পাবে, পুরুষ নয়।'

বিশ্ব ব্যাংককে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে যখন বাংলাদেশের জন্ম হয় তখন দেশটি ছিল দরিদ্র। সেখান থেকে এখন দেশটি নিম্ন মধ্যমআয়ের অর্থনীতিতে পৌঁছেছে। স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়ন, আবাসন নিশ্চিত করার সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশে নারীদের জন্য বিনিয়োগ দেশকে উন্নত করতে সহায়তা করেছে।

গত সপ্তাহে জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার পর তিনি স্থানীয় বাঙালিদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে মনস্থির করেন।

রিটজ কার্লটনের বলরুমে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে এসেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী ইউসুফ চৌধুরী। ৬৬ বছর বয়সী ইউসুফ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি বলেন, আমি সকাল ৬টায় বোস্টনে উড়োজাহাজে উঠে এখানে চলে এসেছি।'

প্রধানমন্ত্রীকে ২০ বার হত্যাচেষ্টার কথা স্মরণ করে উদ্বিগ্ন ছিলেন নিরাপত্তাকর্মীরাও। তবে প্রধানমন্ত্রীর আগমনে উচ্ছ্বসিত ছিলেন হোটেলকর্মীরা। কয়েক ঘণ্টার আয়োজনে সেখানে প্রায় ২০০ অতিথি অংশ নেন। শেষ পর্যন্ত খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই তাদের সবার উদ্দেশ্যে প্রধনমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা বলবেন বলে জানানো হয়। 

মালিহা জামান নামে এক নারী বলেন, 'অবশ্যই তাকে একবার দেখার জন্য এসেছি। তিনি এমন এক নারী যিনি আমাদের অনুপ্রেরণা।' প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী শিক্ষার জন্য যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তার কল্যাণেই মাস্টার্স শেষ করে ভার্জিনিয়ায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজের সুযোগ পেয়েছেন মালিহা।

শাহেদা পারভীন নামে আরেকজন বলেন, 'তিনি (শেখ হাসিনা) প্রবীণদের কথা ভাবেন, শিক্ষা নিয়ে ভাবেন। তিনি যোগাযোগ বাড়াতে কাজ করেছেন। একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু করেছেন। তিনি শিশুদের সম্পর্কে চিন্তা করেন, গর্ভবতী মহিলাদের সম্পর্কেও ভাবেন। আর এই বিষয়গুলো নারী হিসেবে আমাদের ভাবায়।'

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

শিরোনাম:

স্টেশনে যাত্রীরাই কাটতে পারবেন ট্রেনের টিকিট
এপ্রিলের ১৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ১২৮ কোটি ডলার
পুলিশকে সাহায্য করবে ক্রাইম জিপিটি!
পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর