দৈনন্দিন জীবনে তেলের চাহিদা মেটাতে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় যমুনার বিস্তীর্ণ বালুচরে সূর্যমুখীর ব্যাপক চাষ হচ্ছে। এই উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের চরজুড়ে সূর্যমুখী চাষ করেছেন কৃষক আলতাফ হোসেন। তিনি গত বছরের ন্যায় এবছরও তার চরের জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন। নানা বয়সী সৌন্দর্যপিপাসু মানুষ সূর্যমুখী ফুল দেখতে প্রতিদিন তার জমিতে ভিড় করছেন।
জানা যায়, কৃষক আলতাফ হোসেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার হাসিলকান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি একটি কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। ২০১০ সালে অবসর নেওয়ার পর কৃষি কাজ শুরু করেন। বর্তমানে তিনি এবছর দ্বীতিয়বারের মতো সূর্যমুখী চাষ করছেন। খরচের তুলনায় বেশি লাভবান হওয়ায় যায় বলে তিনি আবার সূর্যমুখী চাষ করেছেন। সূর্যমুখী ফুলের শুকনো বীজ থেকে উৎপাদিত হয় তেল। সূর্যমুখীর বীজ ও তেলের বাজারে বেশ চাহিদা রয়েছে। পাশাপাশি এ ফুলের উচ্ছিষ্ট থেকে বের হয় ‘খইল’ নামের এক ধরনের গোখাদ্য।
কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, আমি ২০১০ সালে অবসর নেওয়ার পর কৃষি কাজ শুরু করি। গত বছর কৃষি বিভাগের পরামর্শে প্রথমবার ৩ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করে লাভবান হয়েছিলাম। তাই এবছর ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখখী চাষ করেছি। মাটি উর্বর ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কম খরচ ও সময়ে কাঙ্ক্ষিত ফলন পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ৫ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করতে প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি সূর্যমুখী বীজ বিক্রি করে খরচ বাদ দিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা আয় করতে পারবো।
গাইবান্ধা কৃষি বিভাগ জানায়, চলতি মৌসুমে আলতাফ হোসেনের ৫ বিঘা জমিসহ চরে ২০ বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ১ কেজি করে বীজের প্রয়োজন হয়। দেড় ফুট দূরত্বে বীজ বপন করে মাত্র ৮৫-৯০ দিনের মধ্যেই সূর্যমুখী উৎপাদন করা সম্ভব। এতে বিঘা প্রতি ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ হয়।
গাইবান্ধা কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আব্দুল্যাহ আল মাহমুদ বলেন, পুষ্টিগুণের দিক থেকে সয়াবিন তেল থেকে সূর্যমুখীর তেল বেশি স্বাস্থ্যসম্মত। এই তেল মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে আছে ভিটামিন ই, ভিটামিন কে ও মিনারেল। এ ছাড়া হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনি রোগে আক্রান্তদের জন্য সূর্যমুখী তেল নিরাপদ। দিন দিন এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবারের ফলন দেখে আগামীতে চাষের প্রতি চাষিদের আগ্রহ আরও বাড়বে।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ