যেভাবে তাবলিগের কাজ শুরু করেন হযরতজী ইলিয়াস কান্ধলবী
আলোকিত সিরাজগঞ্জ
প্রকাশিত: ৩০ নভেম্বর ২০২০

ইসলাম নামক সূর্য ফারান পর্বতের চূড়া হতে উদ্ভাসিত হয়ে হেযাযভূমি আলোকিত করে। দেখতে দেখতে তার আলোকরশ্মি এশিয়া, ইউরোপ ও আফ্রিকা মহাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। মুসলিম শাসকদের শাসন অর্ধপৃথিবীর ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু বিত্তবৈভবের লোভ এবং প্রভাব-প্রতিপত্তির আকাঙ্ক্ষা মুসলমানের দাওয়াত ও তাবলিগের মূল মিশনকে ভুলিয়ে দেয়।
সূফীদের তরবিয়াত খানকায়ে এবং মাদরাসার পঠন-পাঠন চার দেয়ালে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। আর ভারত উপমহাদেশের অবস্থা এর বিপরীত ছিল না। ঠিক এমন সময়ে বিংশ শতাব্দীতে হিন্দুস্তানে এমন এক মহান মনীষীর আগমন ঘটে; যিনি যুগের স্রোতকে ঘুরিয়ে দেন এবং বাতাসের গতিবেগ রুখে দেন।
তিনি এমন এক জামাতের সূচনা করেন, যে জামাতের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে কোটিরও বেশি মুসলিম বিশ্বের ১৫০টিরও অধিক দেশে নিজে ব্যয়ভার বহন করে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানো এবং এক মুসলিমকে প্রকৃত মুসলিম তৈরিতে নিবৃত্ত রয়েছেন।
ইসলামী ইতিহাসে এর দৃষ্টান্ত সুদীর্ঘ এক হাজার বছরে দেখা যায় না। কোটি কোটি মুসলমানের জীবনে এই জামাত বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধন করেছে।
বিশ্ববাসীর কাছে এই মিশন ‘তাবলিগ জামাত’ নামে পরিচিত। আর এই মহান জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মাওলানা ইলিয়াস কান্ধলবী (রহ.)।
ভারতের উত্তরপ্রদেশ ইসলামের জন্য উর্বর ভূমি। এখানে অনেক প্রসিদ্ধ আলেম,মনীষী, সমাজ সংস্কারক জন্মগ্রহণ করেছেন।
এই উত্তর প্রদেশের কান্ধলায় মাওলানা ইলিয়াস (র.) ১৮৮৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল। তিনি একজন আল্লাহ্ভীরু আলেম ছিলেন।
মাওলানা ইলিয়াস (র.) শিশুকালেই কোরআনের হিফজ সম্পন্ন করেন এবং প্রাথমিক শিক্ষা নিজ ঘরে ও গ্রামে অর্জন করেন। এরপর তিনি বড়ভাই ইয়াহইয়া কান্ধলবীর সাথে মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গুহী (র.) সান্নিধ্যে থেকে ১০ বছর আধ্যাত্মিক সাধনা অর্জন করেন।
১৯০৮ সালে তিনি দারুল উলুম দেওবন্দে শায়খুল হিন্দ মাহমুদ হাসানের (র.) কাছে বুখারী ও তিরমিজীর দরস নেন। এরপর মাওলানা খলিল আহমদ সাহারানপুরির নিকটও বায়া’আত হোন। এর ২ বছর পর তিনি মাজাহিরুল উলুম সাহারানপুরে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) যখন বাংলাওয়ালী মসজিদে দ্বীনি কাজ শুরু করেন তখন সেখানে মেওয়াতের অধিবাসীরা যাওয়া আশা করত।
মেওয়াতের ভক্ত-মুরিদগণ তার কাছে মেওয়াত আগমন করার আহবান করেন। তিনি তাদের কাছে শর্ত দেন যে, আমি অবশ্যই আসব, তবে তোমরা নিজেদের গ্রামে মক্তব চালু করবে।
অতঃপর মাওলানা ইলিয়াস যখন মেওয়াত গমন করেন সেখানে ১০টি মক্তব প্রতিষ্ঠা করে আসেন। এর কিছু দিনের মধ্যে সেখানে কয়েকশ' মক্তব প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯২৪ সালে তিনি দ্বিতীয়বার হজব্রত পালনে মক্কা গমন করেন। ফিরে এসে যখন তিনি মেওয়াতের দ্বীনি কাজের অগ্রগতির খোঁজ খবর নিলেন,তখন তিনি হতাশ হলেন।
মেওয়াতের সাধারণ মুসলিমদের মধ্যে কোন পরিবর্তন লক্ষ্য করলেন না। মক্তবগুলোতে এক বিশেষ শ্রেণী দ্বীনি শিক্ষার অবদান রেখে চলেছে কিন্তু মেওয়াতের সাধারণ মুসলমানের মক্তবে গিয়ে দ্বীন শিক্ষা অসম্ভব ছিল।
তখন তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন যে, মানুষকে ডেকে দ্বীন শেখানো হবে না,বরং মানুষের কাছে গিয়ে তাদের দ্বীন শিখানো হবে। তাদের ঘর থেকে বের করে মসজিদ পর্যন্ত নিয়ে আসা হবে এবং তাদের ইসলাম ও দ্বীনের বুনিয়াদী বিষয়গুলো শিখিয়ে নিষ্ঠাবান (প্র্যাকটিসিং) মুসলিম বানানো হবে।
এ সময় মেওয়াতে এক বিশাল ইসলাহী ইজতেমার আয়োজন করা হয়। তিনি সেখানে আগমন করেন এবং শ্রোতাদের বয়ান করেন। তিনি তাদের জামাত নিয়ে আশপাশের গ্রামে বের হওয়ার আহবান করেন।
এর এক মাস পর মেওয়াতের পার্শ্ববর্তী গ্রামে প্রথম জামাত বের হয়। তারা সিদ্ধান্ত নেন পরের জুমা সোনা মসজিদে আদায় করবেন।
হযরত ইলিয়াস সেখানে আগমন করেন এবং তাদের গুরুত্বপূর্ণ নসিহত করেন ও দিকনির্দেশনা দিতে থাকেন।
এভাবে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজ শুরু হয় এবং মেওয়াতের অনেক জামাত বিভিন্ন এলাকায় বের হতে থাকে। তিনি প্রতি জুমার নামাজের পর তাদের কারগুজারি শুনতেন, নতুন জামাতের পরিকল্পনা করতেন এবং বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিতেন।
১৯৩৮ সালের ১৪ মার্চ হযরত ইলিয়াস, হাজী আব্দুল্লাহ দেহলবী, আব্দুর রহমান, মাওলানা ইহতেশামুল হক কান্ধলবীর সঙ্গে মক্কার সুলতানের সাথে সাক্ষাতের জন্য হেযায গমন করেন।
সুলতান জালালুদ্দীন মালিক সম্মানের সঙ্গে মসনদ থেকে উঠে এসে তাকে ও তাদের দলকে বরণ করে নেন। সুলতানের অতি সন্নিকটে বসিয়ে তাবলিগের কারগুজারি মনোযোগ দিয়ে শুনেন।
হযরত ইলিয়াস এ সময় প্রায় ৪০ মিনিট তাওহীদ, শরিয়ত ও সুন্নাহর ওপর বয়ান করেন। বিদায়কালেও তিনি মসনদ থেকে নেমে সম্মানের সাথে তাদের বিদায় জানান।
মক্কা মদিনার নেতৃস্থানীয় আলেমরা তাকে দাওয়াত ও তাবলিগের কাজে হেযায ভূমিতে ২ বছর অবস্থান করার অনুরোধ করেন।
কিন্তু তিনি হিন্দুস্তানে দাওয়াতি কাজের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় দেশে প্রত্যাবর্তনের ইচ্ছা পোষণ করেন। হেযায থেকে ফিরে এসে তিনি আরও উদ্যমের সাথে তাবলিগের কাজে মনোনিবেশ করেন।
আলীগড়, দিল্লি, বুলন্দশহর, কান্ধলা, সাহারানপুর প্রভৃতি অঞ্চলে তাবলিগের জামাত প্রেরণ শুরু করেন। হযরত ইলিয়াসের ১৮ বছরের দিন-রাতের নিরলস পরিশ্রম আলোর মুখ দেখতে থাকে।
হিন্দুস্তানের দূর-দূরান্তে জামাত রওনা হওয়া শুরু করে। আলেমরা ও সাধারণের মধ্যে এক দ্বীনি চেতনার আবহ তৈরি হয়।
সাইয়্যিদ আবুল হাসান আলী নদবীর (র.) ওপর আলোকপাত করতে গিয়ে লেখেন- যেখানে কোন মসজিদ দেখা যেত না সেখানে গ্রামে গ্রামে মসজিদ তৈরি হয়। দেখতে দেখতে উপমহাদেশে হাজার হাজার মসজিদ তৈরি হয়। অসংখ্য মক্তব ও আরবি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। হাফেজের সংখ্যা হাজার থেকে লাখে উন্নীত হয়। আলেমের সংখ্যাও দিন দিন বৃদ্ধি পেতে থাকে।
হিন্দুয়ানি অবয়ব ও লেবাসের প্রতি ঘৃণা সৃষ্টি হতে থাকে এবং ইসলাম ও শরই লেবাসের মর্যাদা অন্তরে বসে যায়। হাত থেকে কড়ি ও শরীর থেকে পৈতা ছুড়ে ফেলে দিতে থাকে।
দাড়িহীন পুরুষেরা দাড়ি রাখা শুরু করে, শরাবখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।
সুদি লেনদেন কমে আসে, হত্যা-রাহাজানি দূর হতে থাকে। অসততা, ঠকবাজি অন্যান্য অসৎ চরিত্র সংশোধন হতে থাকে, হানাহানি-মারামারি নিঃশেষ হতে থাকে, শিরিক-বিদ'আত, রসম-রেওয়াজ থেকে মানুষ তওবা করতে শুরু করে।
ফকির ও দরবেশি চরিত্রের একজন দাঈ, আলেমে দ্বীন শুধু মেওয়াতে বিপ্লব সংগঠন করেননি বরং তার প্রতিষ্ঠিত মোবারক জামাত পুরো বিশ্বে এমন এক বিপ্লব প্রতিষ্ঠা করেন; যার উদাহরণ ইসলামের ইতিহাসের কোনো পৃষ্ঠা বা পাদটীকায় খুঁজে পাওয়া যায় না।
অধ্যাপক খালিক আহমদ নিযামী বলেন, বিগত শতাব্দীগুলোতে কোন বুজুর্গই চিশতিয়া সিলসিলার সংস্কারমূলক মৌলিক নীতিগুলো এমনভাবে চুষে নিতে সক্ষম হোননি, যেমনটি মাওলানা ইলিয়াস সক্ষম হয়েছেন। (তারিখে মাশায়িখে চিশত) ।
বিংশ শতাব্দীর এই মহান দাঈ, মুবাল্লিগ ও আলেমে দ্বীন, যিনি দাওয়াত ও তাবলিগের ময়দানে এক ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তিনি ১২ জুলাই ১৯৪৪ সালে এই নশ্বর পৃথিবী ছেড়ে চলে যান।
তথ্যসূত্র: ক. আবুল হাসান আলী নদবী,আদদাঈয়াতুল কাবির আশশায়িখ মুহাম্মাদ ইলিয়াস আল-কান্ধলবী ওয়া দাওয়াতুহু
খ. নকি আহমদ নদবী,বায়োগ্রাফি অব মাওলানা মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলবী (র.)

- করোনার প্রথম টিকা নিলেন নার্স রুনু
- করোনার টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
- অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহার বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর ৬ প্রস্তা
- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কড়া নির্দেশনা
- নিরাপত্তায় মোতায়েন ১৮ হাজার বিজিবি র্যাব পুলিশ
- কাজ ঝুলিয়ে রাখা ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে
- তারল্য বাড়াতে ১০০ কোটি ডলারের বন্ড ছাড়বে আইসিবি
- সিনেমা হলের ঐতিহ্য ফেরাতে হাজার কোটি টাকার তহবিল
- দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছেন হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষ
- টিকায় এগিয়ে বাংলাদেশ
- ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে বাংলাদেশের সমন্বিত কন্টিনজেন্ট
- বাংলাদেশ-ভারতের সম্পর্ক উন্নয়নে নিবিড়ভাবে কাজ করছে সরকার
- সিরাজগঞ্জে আগাম জাতের কেশর চাষে লাভবান কৃষকরা
- সিরাজগঞ্জে খেজুর গুড় তৈরীতে ব্যস্ত গাছিরা
- বেলকুচিতে তথ্য আপার উঠান বৈঠক
- সিরাজগঞ্জ পৌরসভা ৬নং ওয়ার্ডের পুনঃনির্বাচনের তারিখ ঘোষণা
- উল্লাপাড়ায় এ্যাড. মারুফ বিন হাবিবের প্রয়ান বার্ষিকী পালিত
- মজিদ মন্ডল ব্যবসার পাশাপাশি রাজনীতিতেও সফল ছিলেন
- আজ ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহ দিবস
- তুরস্কে নিষিদ্ধ হলো ‘শয়তানের চোখ’ তাবিজ
- কালোজিরার প্রাকৃতিক গুনাগুন
- স্পিন বান্ধব উইকেটে সফলতার গোপন রহস্য জানেন রোচ!
- বাংলাদেশে অফ-শোর ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপনের আহ্বান
- দ্রুত ওজন কমাতে যেভাবে ভুট্টা খাবেন
- আল্লাহর আজাব থেকে বাঁচতে প্রতিদিন যে দোয়া পড়বেন
- নতুন পথে পা বাড়ালেন পূর্ণিমা
- উড়োজাহাজের ভিতরে নিয়মিত পরিস্কার ও জীবাণুমুক্ত করার তাগিদ
- জাপানি আইটি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে আহ্বান
- পাঁচজনের টিকা দেওয়া দেখবেন প্রধানমন্ত্রী
- চাল আমদানির ফলে বাজার স্থিতিশীল হয়েছে: কৃষিমন্ত্রী
- `একটি সিদ্ধান্তই বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে`
- যেসব ভুল কাজ মানুষকে ধ্বংস করে দেয়
- পদ্মা সেতুর কাজে ইচ্ছাকৃত দেরি করলে ঠিকাদারের জরিমানা
- প্রভুর সান্নিধ্যের শ্রেষ্ঠ ইবাদত সালাত
- উল্লাপাড়ায় মুজিববর্ষে ঘর পাবে আরও ৪২ টি অসহায় দুস্থ পরিবার
- পরকালে মানুষ যে ৯টি আক্ষেপ করবে
- বাংলাদেশে পড়তে আসতে পারে মালদ্বীপের শিক্ষার্থীরা: রাষ্ট্রপতি
- চৌহালীতে আশ্রয়ন প্রকল্পের ১০টি ঘর উদ্বোধনের অপেক্ষায়
- সাড়ে ৩ মাস পর ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু
- যে ৪ আমল থেকে কখনো বিরত থাকা যাবে না
- বাবলা গাছের উপকারিতা
- মেগা প্রকল্প:
কর্ণফুলী টানেলের অগ্রগতি ৬১ শতাংশ - এই ঘর আমাগো কাছে স্বপ্নের মতো
- রায়গঞ্জে দু:স্থ প্রতিবন্ধিদের মাঝে কম্বল বিতরণ
- ঘরোয়া উপায়ে সারিয়ে তুলুন চোখের অঞ্জনি
- মেসির পর পেলেকে পেছনে ফেললেন রোনালদোও
- কাজিপুরে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মেয়র হচ্ছেন আ`লীগ নেতা হান্নান
- দ্বিতীয় পদ্মাসেতুও সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে
- জুমার দিনে এই দোয়া পাঠে ৮০ বছরের গুনাহ মাফ
- মুখের কালো দাগ দূর করুন ঘরোয়া উপায়ে
