শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি

সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলায় অবস্থিত রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিধন্য অন্যতম নিদর্শন হচ্ছে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার কাছারি বাড়ি।  ১৮৯০ থেকে ১৮৯৭ পর্যন্ত কবি এখানে অবস্থান করেন এবং জমিদারি দেখাশোনা করেন। মূলত জমিদারি দেখাশোনার কাজেই তিনি কুষ্টিয়া থেকে মাঝে মাঝে কাছারি বাড়িতে আসতেন।

১৮৪০ সালে শাহজাদপুরের জমিদারী নিলামে উঠলে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পিতামহ প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর মাত্র তের টাকা দশ আনায় এ জমিদারী কিনে নেন।  সেসময় জমিদারীর সাথে সাথে শাহজাদপুরের কাছারি বাড়িটিও ঠাকুর পরিবারের হস্তগত হয়েছিল।  কবি পূর্ব বাংলায় অবস্থানের বেশিরভাগ সময়ই শাহজাদপুরে অবস্থান করতেন।  এই বাড়ির প্রতিটি আঙিনা  সবসময় মুখরিত থাকতো কবির পদচারণায়।  শাহজাদপুরের আকাশ, বাতাশ, পাখির কলরব, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও নদীর ডেউ কবিকে সবসময় আন্দোলিত করতো।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৮৯০ সালের দিকে প্রথম শাহজাদপুর এই কুঠিবাড়িতে আসেন এবং আর এই বাড়ির আঙিনায় বসেই কবি রচনা করেছেন অজশ্র কবিতা গান গল্প উপন্যাসসহ অনেক বিখ্যাত কালজয়ী সাহিত্যকর্ম।  কবি এখানে বসেই রচনা করেন তার বিখ্যাত গ্রন্থ সোনার তরী, বৈষ্ণব কবিতা, দুইপাখি, আকাশের চাঁদ, পুরস্কার, হৃদয়, যমুনা, চিত্রা, চৈতালী, ইত্যাদি।  গীতাঞ্জলী কাব্যের কাজও শুরু করেন এখান থেকে যার জন্য পরবর্তীতে তিনি নোবেল পুরস্কার পান।  পোস্ট মাস্টার গল্পের ‘রতন’ চরিত্রও শাহজাদপুরে বসেই লেখা।  চিত্রা, শীতে ও বসন্তে, নগর সঙ্গীতে এবং চৈত্রালীর ২৮টি কবিতা, ছিন্ন পত্রাবলীর ৩৮টি, পঞ্চভূতের অংশবিশেষ এবং বিসর্জনের নাটক তিনি শাহজাদপুরে বসেই রচনা করেছেন।

শাহজাদপুরের কাছারি বাড়ি ইন্দো-ইউরোপীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত একটি দ্বিতল ভবন।  ভবনটির নিচের তলাতে তিনটি কক্ষ এবং উপরের তলাতে চারটি কক্ষ রয়েছে।  দোতালায় ওঠার জন্য একটি প্যাঁচানো সিঁড়ি নিচতলা থেকে উপরে উঠে গেছে।  মূলত এই বাড়িটিতে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে জাদুঘরটি।  আগে এই বাড়ির মালিক ছিল নীলকর সাহেবরা।  এখানে এখনো নীলকুঠির ধ্বংসাবশেষ রয়েছে।  বাড়ির সামনের বিশাল জায়গা জুড়ে রয়েছে ফুলের বাগান।  নতুন ভাবে একটি অডিটোরিয়াম তৈরি করা হয়েছে।  ১৯৬৯ সনে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর কর্তৃক অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় এ ভবনটিকে সংরক্ষিত পুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করে।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর সরকার এই কুঠিবাড়িটির গুরুত্ব অনুধাবন করে।  কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিভিন্ন শিল্পকর্ম সংগ্রহপূর্বক একে একটি জাদুঘর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়।  কাছারি বাড়ির নিচের তিনটি ঘর এবং উপরের চারটি ঘর রবীন্দ্রনাথের আলোকচিত্র ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে।  নিচের সবগুলো ঘরই আলোকচিত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে।  জাদুঘরে কবির সময়কার ব্যাবহার্য নানান আসবাবপত্র ও জিনিসপত্র সংরক্ষণ করে তৈরি করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর স্মৃতি জাদুঘর।  জাদুঘর ও কাছারি বাড়ি দেখার জন্য প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত ও দেশের বাইরে থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসে শাহজাদপুরের এই কাছারি বাড়িতে।  সময় ও সুযোগ পেয়ে আপনিও ঘুরে আসতে পারেন কবিগুরুর স্মৃতি বিজড়িত রবীন্দ্র কাছারি বাড়ি।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই