শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

সচেতনতার নামে বিভ্রান্তি!

সচেতনতার নামে বিভ্রান্তি!

 

ছবির এ মেসেজটি গণহারে যে যতটুকু পেরেছেন দুর্যোগের এ মুহূর্তে পরম কর্তব্য মনে করে শেয়ার /ফরোয়ার্ড করে ফেসবুক পেইজ ভাসিয়ে দিয়েছেন!

ধরে নেয়া হচ্ছে, সবাই সরল মনেই এটি করেছেন। কিন্তু যিনি এটার নাটের গুরু তিনি যে সরল মনে এটা করেননি তা নিশ্চিত বলা যায়।

এর কারণ হিসেবে উল্লেখ করা যায়, তিনি নির্দিষ্ট করে হারপিক ব্রান্ডের একটি দ্রব্যের কথা বলেছেন তাও ৫০০ মিলিগ্রাম পরিমাণসহ। সঙ্গে বেশ কায়দা করে ধর্মীয় লেবাসও লাগিয়েছেন তিনি। 

কিন্তু যারা কোনো চিন্তা ভাবনা ছাড়াই জনস্বার্থে এটা করতে বলছেন তারা কি ভেবেছেন একটু, এটা পরিবেশের কি ক্ষতি করবে এবং এতে আদৌ এডিস মশা ধ্বংস হবে কিনা? 

হারপিকের প্রধান উপাদান হিসেবে আছে হাইড্রোক্লোরিক এসিড ১০% সলিউশন (ক্ষয়কারক) ও বিউটাইল ওলেইলামাইন যা একটি শক্তিশালী বিষ।

ঢাকা মহানগরের খানিকটা অংশে মল অপসারণের জন্য স্যুয়ারেজ সিস্টেম আছে এবং বড় অংশে স্টর্ম ড্রেনেজ আছে। বেশিরভাগ বাড়ির ড্রেনেজ মাটির নিচ দিয়ে এটার সঙ্গে লাগানো থাকে। ওখানে এডিস মশা থাকে না। আবার খোলা প্রবাহমান নোংরা পানির ড্রেনে এডিস মশা জন্মায় না। তো এ ওয়েস্টওয়াটার ফ্লো'তে হারপিক বা ক্লোরিন মেরে এডিস মশার টিকিটাও যে আপনি ছিঁড়তে পারবেন না এটার শতভাগ গ্যারান্টি দেয়া যায়। 

উপরন্তু যেসব উপকারী অনুজীব বায়োডিগ্রেডেশন প্রক্রিয়ায় অবদান রাখে সেগুলোও ধ্বংস হবে। অন্যদিকে, এ পরিমাণ হারপিক আর ব্লিচিং পাউডার মেশালে যে ক্লোরিন গ্যাস তৈরি হবে (৫০ পিপিএম) তা আপনার শ্বাসতন্ত্রের বারোটা বাজিয়ে হাসপাতালে পাঠাবার জন্য যথেষ্ট। এটা নিশ্চয় আপনার জানা ছিলো না? 

এতো গেল এক দিক, অন্যদিকে পরিবেশে কি বিপুল ক্ষতি হবে তা কি একবার ভেবেছেন? এ হারপিকের বিষাক্ত সিন্থেটিক দ্রবন ও এরমধ্যে মিশ্রিত ভারী ধাতব পদার্থ আপনার নগরের ড্রেন পার হয়ে চলে যাবে জলাশয়, নদী ও সাগর মোহনায়। এরই মধ্যে যাচ্ছেও। মাছসহ জলজ প্রাণির বংশ বিস্তার নিম্নমুখী তো করবেই, পাশাপাশি মাছেও ক’দিন পরই অসহনীয় মাত্রায় হেভিমেটাল ( শিসা, ক্যাডমিয়াম এসব) পাবেন, তখন অবশ্য দোষ দেবেন মাছ চাষী আর সরকারকে। নদী অববাহিকার কৃষিসহ সামগ্রিক খাদ্য শৃংখলেই এর কুপ্রভাব পড়বে।

 এবার দেখুন তো ৫০০ মিলি হারপিকের দাম কত? আর এ ভণ্ডামি আহ্বানে সাড়া দিয়ে যদি ঢাকার ১০ লাখ মানুষ সরল বিশ্বাসে এমন গণবোকামিতে অংশ নেয় তবে এ পণ্যটির এক দিনে কত টাকার ব্যবসা হবে? ক্যালকুলেটর নিয়েছেন তো? 

মানুষের ডেঙ্গু আতঙ্ককে পুঁজি করে নানা পদের টাউট বাটপার তথাকথিত বিশেষ পেশাজীবি ভদ্রলোকেরা যে যেভাবে পারছেন কামিয়ে নিচ্ছেন। আহা কি জম্পেশ ব্যবসা!

 এসব ধান্ধাবাজদের কোনো তথ্য, তা যতই সংবেদনশীল হোক না কেন, তথ্যের ভিত্তি ও সত্যতা যাচাই না করে দয়া করে শেয়ার / ফরোয়ার্ড করবেন না। আপনার পরোপকারের ইচ্ছে মানুষের বিপদের কারণও হতে পারে।

ডেঙ্গু ঠেকানোর একটাই পথ, আবর্জনা নির্দিষ্টস্থানে নিয়ম মাফিক ফেলুন। আপনার বাসার নিচে চারিদিকে দেখেছেন কখনো? একবার উঁকি দিয়ে দেখে নিন। দেখুন মানুষ ( শিক্ষিত হলেই কি!) জানালা দিয়ে কি পরিমাণ আবর্জনা বাড়ির চারদিকে ফেলে, যার উল্লেখযোগ্য অংশ হলো প্লাস্টিক, লেমিনেটেড পেপার ও ধাতব বর্জ্য যা পানি জমিয়ে এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র তৈরি করে।

 প্রতিটি বাড়ির চারপাশের আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কার করুন আর জানালা দিয়ে ময়লা আবর্জনা ছুড়ে মারা বন্ধ করুন। তাতেই ডেঙ্গু কমবে। আবোল তাবোল টোটকা পাটকা এ পাতা খেয়ে, সে তেল মেখে কিম্বা বোম্বা মেশিন দিয়ে ধোঁয়া ছুটিয়ে লাভ নেই ভাই!!

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

শাহজাদপুরে আশ্রয়ণ প্রকল্পের উপকারভোগীদের সাথে মতবিনিময় সভা
সিরাজগঞ্জে পুরোদমে চলছে কৃষিবান্ধব সোলার প্রকল্পের কাজ
সিরাজগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফন
বেলকুচিতে বিএসটিআই অনুমোদন না থাকায় টেক্সটাইল মিলকে জরিমানা
বেলকুচিতে পুষ্টি বিষয়ক সমন্বয় কমিটির দ্বি-মাসিক সভা অনুষ্ঠিত
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
চীনের সঙ্গে রাজনৈতিক-অফিসিয়াল যোগাযোগ বাড়াতে প্রস্তুত বাংলাদেশ
ভারতের কাছে পাঁচটি খাদ্যপণ্যের নিশ্চিত সরবরাহ চায় বাংলাদেশ
এপ্রিলে বাংলাদেশে আসছেন কাতারের আমির
গবেষণায় আরো জোর দিতে বললেন কৃষিমন্ত্রী
রংপুর ও ভোলার চরের মানুষদের সুখবর দিলেন পরিবেশমন্ত্রী
স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক