শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিনা চাষে রসুনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

বিনা চাষে রসুনের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

শস্যভাণ্ডার খ্যাত চলনবিল অঞ্চলের তাড়াশ উপজেলায় বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন রসুনের ঘ্রাণ। এ বছর বিনা চাষে বোনা রসুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। এতে কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার চর হামকুড়িয়া, চর কুশাবাড়ী, নাদো সৈয়দপুর, ধামাইচ, সবুজপাড়া, বিন্নাবাড়ী, দিঘী সগুনা, কুন্দইল, ধামাইচ এলাকায় শত শত হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। মাঠে মাঠে রসুন তোলায় কর্মব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। পুরুষের পাশাপাশি রসুন তোলার কাজে সহযোগিতা করছেন নারীরাও।

চর হামকুড়িয়া গ্রামের রসুনচাষি আতাব আলী বলেন, বিনা চাষে প্রায় চার বিঘা জমিতে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও বিঘাপ্রতি প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে আমার। তবে এবার যে ফলন হয়েছে ন্যায্য দাম পেলে প্রায় লাখ টাকা আয় হবে।  

নাদো সৈয়দপুর গ্রামের কৃষক ইমান আলী বলেন, লাভের আশায় আমরা বিনা চাষে রসুন আবাদ করেছি। তারপরও সার-কীটনাশক, শ্রমিকের মজুরি দিয়ে বিঘাপ্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। এবার পাঁচ বিঘা জমিতে রসুন বুনেছি। ফলনও বাম্পার হয়েছে। ন্যায্য দাম পেলে ভালো লাভ হবে।  

নওগাঁ ইউনিয়নের মহিষলুটি গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, গত বছর আমরা কৃষকরা প্রতিমণ রসুন বিক্রি করেছি তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায়। এবারও সেই দাম থাকলে আমাদের মুখে হাসি থাকবে। লোকসান গুণতে হবে না।

কথা হয় দিঘীসগুনা গ্রামের কৃষক আলম, শহীদুল ও মাগুরা বিনোদ গ্রামের ওসমান আলী, নবি উদ্দিন, রিয়াজ মিস্ত্রি, শাহজামাল খান, দবির আলীসহ অনেকের সঙ্গে।

তারা জানান, এ অঞ্চলের চাষিরা প্রতি বছরই বিনা চাষে রসুন আবাদ করেন। ধানের আবাদের লাভ খুব কম হওয়ায়, রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন চাষিরা। বিনা চাষে বোনা হলেও সার-কীটনাশক ও শ্রমিক মজুরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ এবার বেড়েছে। এবার যদি বাজারমূল্য কম হয় তাহলে লোকসান গুণতে হবে তাদের। তবে ফলন ভালো হওয়ায় আশাবাদী তারা।  

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, শীতের শুরুতে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের ভেজা মাটি রসুন চাষের জন্য উপযোগী। দিনে দিনে চলনবিল অঞ্চলে বিনা চাষে রসুনের আবাদ  কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। খরচ কম, ফলন ভালো ও লাভের পরিমাণও বেশি, তাই তারা রসুন চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। শুধুমাত্র তাড়াশেই প্রতি বছর সাড়ে ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়। বিনা চাষে রসুন আবাদ করলেও সার-বীজ-কীটনাশক দিয়ে বিঘা প্রতি ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। হেক্টর প্রতি প্রায় ৭.৫ টন রসুন উৎপাদন হয়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার লুৎফুন্নাহার লুনা বলেন, গত বছর তাড়াশে ৪৪০ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। এ বছর আমরা ৪৪০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিলাম। লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে উপজেলায় ৫১৭ হেক্টর জমিতে রসুনের চাষ হয়েছে। ফলনও বেশ ভালো হয়েছে। বাজার মূল্যেও বেশি। আশাকরছি, আরও দাম বাড়বে। এসব রসুন দেশের চাহিদা অনেকটাই পূরণ করবে।

জেলা কৃষিক সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আবু হানিফ বলেন, শীতের মৌসুমে মাটি ভেজা থাকে। আদ্র মাটিতে কোনো ধরনের চাষ না দিয়ে সার ছিটানোর পর রসুন বোনেন চাষিরা।

এরপর খড় বা নাড়া দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়। এতে রসুনের ফলন ভালো হয়। চাষের বাড়তি খরচও তেমন লাগে না। জেলায় এবার ১ হাজার ৪ হেক্টর জমিতে রসুনের আবাদ হয়েছে। যার অধিকাংশই চলনবিল অঞ্চলে। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি রসুনের চাষ করা হয়েছে তাড়াশে। ইতোমধ্যে ৩৫১ হেক্টর জমির রসুন কেটে ঘরে তুলেছেন কৃষকরা। যার উৎপাদন হয়েছে হেক্টর প্রতি গড়ে ৭.২ টন।

আলোকিত সিরাজগঞ্জ

সর্বশেষ:

শিরোনাম:

পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে স্কুলজীবনের মজার স্মৃতিতে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা
কাজিপুরে ভার্মি কম্পোস্ট সার বানিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু
১৪ কিলোমিটার আলপনা বিশ্বরেকর্ডের আশায়
আলো ছড়াচ্ছে কুষ্টিয়ার বয়স্ক বিদ্যালয়
মেয়েদের স্কুলের বেতন না দিয়ে ধোনিদের খেলা দেখলেন তিনি
‘ডিজিটাল ডিটক্স’ কী? কীভাবে করবেন?
তাপপ্রবাহ বাড়বে, পহেলা বৈশাখে তাপমাত্রা উঠতে পারে ৪০ ডিগ্রিতে
নেইমারের বাবার দেনা পরিশোধ করলেন আলভেজ
দেশবাসীকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর
ঈদের দিন ৩ হাসপাতাল পরিদর্শন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর
আয়ারল্যান্ডের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
জুমার দিনে যেসব কাজ ভুলেও করতে নেই