নিজের বিছানা মানেই এক টুকরো স্বর্গ। কিন্তু সে বিছানা কি আদৌ নিরাপদ। বাঙালি বিছানা পাতে, কিন্তু সে বিছানার যত্ন নিতে জানে না। একগুচ্ছ ভুল ধারণা নিয়েই রোজ বিছানা পাতা আর বিছানা তোলা চলে। কিন্তু ঠিকঠাক যত্ন পায় কি আদরের বিছানা? তার জেরে অযত্নের বিছানাও কি দেয় ঠিকঠাক আদর?
বিছানার চাদর বদলালেই কি বিছানা পরিষ্কার হয়ে যায়? জাজিম, তোশক, ম্যাট্রেস তো একবার কিনলে বছরের পর বছর টানা চলতেই থাকে। বিয়েতে শ্বশুরের দেওয়া তোশককে ফুলশয্যা থেকে মৃত্যুশয্যার সঙ্গী করাই বাঙালির পরম্পরা। উত্তরাধিকার সূত্রে খাট-বিছানা পাওয়াও আম-বাঙালির ঐতিহ্য। সন্তানের কামনা, সন্তানের জন্ম, সন্তান পালন এক তোশকেই। ছানা-পোনার ‘হিসু’তে দলা পাকানো তুলো। তবু সে-ই থেকে যায় বিছানায়। উপরে ধবধবে চাদর।
সেই চাদরের তলায় বছরের পর বছর বাসা বাঁধে জীবাণুরা। চাদরের উপরে আর নিচে একই সঙ্গে চলে বংশবৃদ্ধির প্রক্রিয়া। উপরের একটি-দু’টির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অনেক অনেক এগিয়ে যায় নীচের জীবাণুরা। বাঙালি ভেবেই দেখে না, ওই জীবাণুরা না থাকলে কত আরামের হতে পারত আপন-শয্যা। কোনও দিন ভাবেই না, জাজিম-তোশক বদল দরকার, পরিষ্কার করা দরকার।
বাঙালি কি জানে, মুখে ব্রন থেকে মাথার খুশকি হওয়ার পিছনে নোংরা বালিশ বড় ভূমিকা পালন করে? যাকে আদর করে বুকে টেনে নেওয়া হয়, সেই কোলবালিশ যে অজান্তে ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি, অ্যালার্জির মারাত্মক কারণ, তা জানেই না।
বাঙালি ঘরের জাজিম, তোশক, বালিশরা সত্যই হতভাগা। কেনার পরে কোনও দিন ড্রাই-ওয়াশে যাওয়ার ভাগ্যই হয় না বেচারাদের।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ