গর্ভকালীন সময় একটা নারীর জন্য সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত। তবে বেশিরভাগ নারীই এসময় অবসাদে ভোগেন। এর অনেকগুলো কারণ আছে। পারিবারিক, সামাজিক কিংবা ভবিষ্যতের কথা ভেবে অনেকেই দুশ্চিন্তায় কাটান। বাড়িতে বসে থেকে দিন দিন মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন।
এই অবসাদ থেকে বাঁচতে বিশেষজ্ঞরা একরকম পরামর্শ দিচ্ছেন, চিকিৎসকরা ওষুধ দিচ্ছেন। কিন্তু তাতে করে শরীরের উপরে নানা রকম প্রভাব পড়ছে। গর্ভাবস্থায় এই ওষুধগুলো খেতে পারবেন কি? কেননা এই সময় তেমন কোনো ওষুধ হবু মায়েদের খেতে দেয়া হয় না। কারণ শিশুর ওপর অনেক প্রভাব পরে এর।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় অ্যান্টিডিপ্রেস্যান্ট বা অবসাদের ওষুধ। অনেকের কাছেই অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এখন প্রতিদিনের সঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে প্রভাব পড়ে মারাত্মক। কিন্তু সবথেকে বেশি পরিমাণে প্রভাব পড়ে তাদের ওপর, আগামী দিনে যারা মা হতে চলেছেন। অন্তঃসত্ত্বা নারীদের উপরে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট-এর প্রভাব কীরকম, অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় ডিপ্রেশনের ওষুধ খাওয়া উচিত কিনা। জেনে নিন এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞরা কি বলছেন-
গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে ডিপ্রেশনের ওষুধ খাওয়ার ভালো মন্দ দুই দিকই রয়েছে। এসময় যারা অবসাদে ভুগছেন, তারা যদি অবসাদের ওষুধ না খান, তাহলে তাদের সন্তানের শরীরের ক্ষতি হতে পারে হতে পারে। নির্ধারিত সময়ের আগেই তাদের জন্ম হতে পারে। জন্মের সময় তাদের ওজন কম থাকারও আশঙ্কা থাকে।
আবার হবু মায়েরা যদি বেশি পরিমাণে অবসাদের ওষুধ খান, তাহলে তার প্রভাব পড়তে পারে হবু সন্তানের ওপর। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, রাখতে হবে দুটোর মধ্যে সঠিক ভারসাম্য। যে বিশেষজ্ঞ হবু মাকে দেখছেন, তার সব সময় লক্ষ্য থাকে, যেন ওষুধের প্রভাব হবু বাচ্চার উপরে সবচেয়ে কম পরিমাণে পড়ে। সেই কারণে গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক মাস মায়ের শরীরে সবচেয়ে কম পরিমাণে ওষুধ যাতে যায়, তারা সেদিকে নজর দেন। তারপর থেকে প্রয়োজনমতো তারা অল্প অল্প করে ওষুধের মাত্রা বাড়ানোর দরকার পড়লে, তারা সেই সিদ্ধান্ত নেন।
তবে বিশেষজ্ঞদের মতে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট গর্ভাবস্থায় একেবারে না নেয়াই ভালো। এক্ষেত্রে ঘরের যারা সদস্য আছেন তাদের সাহায্য খুবই দরকার। হবু মাকে সবসময় হাসি খুশি রাখতে হবে। এজন্য ধর্মীয় গ্রন্থ কিংবা অন্যান্য বই পড়তে পারেন। রান্না করতে পারেন। গান শোনা কিংবা হাতের কাজ করতে পারেন। হোক না সেটা বাবুর কাঁথা কিংবা নিমা। এতে করে সময় কাটবে এবং অবসাদে ভোগার আশঙ্কাও থাকবে না।
আলোকিত সিরাজগঞ্জ